ঢাকা: বাংলাদেশের বাল্যবিয়ে অপরাধ হিসেবে গণ্য হলেও এখনো ৬৫ ভাগ শিশুর বিয়ে হচ্ছে ১৬ বছরের নিচে।
এদের মধ্যে শতকরা ৫ দশমিক ৭৯ ভাগের বিয়ে হয় প্রেম করে অথবা বাবা-মায়ের অনুমতিতে।
তবে পালিয়ে যাওয়া ও বিয়ের আগে সম্পর্ক উত্থাপনের বেশ কিছু ঘটনা দেখা গেছে ১৬ বছর বয়সের বেশি মেয়েদের মধ্যে।
সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে গবেষণার ফলাফল প্রকাশনা অনুষ্ঠানে ‘বিবাহযোগ্য বয়স ও শিশুবিয়ে’ বিষয়ক শিরোনামে পরিচালিত গবেষণায় এ সব তথ্য উঠে এসেছে।
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বাংলাদেশের ২৪টি জেলায় এ গবেষণা পরিচালিত হয়।
মূলত শিশুবিয়ের ধরন, বিয়ের বয়স নিয়ে অভিভাবকদের ধারণা এবং বিয়ের বয়স কমানোর যৌক্তিকতা অনুসন্ধানের জন্য এ গবেষণা চালানো হয়েছে বলে জানানো হয়।
প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বলা হয়, গবেষণায় দেখা যায়, শিশুবিয়ের শিকার মেয়েদের মধ্যে শতকরা ৬৩ দশমিক ৭৪ ভাগ ছাত্রী, ২৪ ভাগেরও বেশি ঘরের কাজ করে আর ১১ দশমিক ৬৩ ভাগ আয়মূলক কাজে নিযুক্ত।
অনুষ্ঠানে বলা হয়, যে বিশেষ পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে সরকার বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৪’র খসড়া ১৮-এর উপধারায় উভয়পক্ষের মা-বাবার সম্মতি এবং আদালতের অনুমোদনক্রমে অন্যূন ১৮ বছরের ছেলে এবং ১৬ বছরের মেয়ের বিয়ে দেওয়া যেতে পারে।
তবে এ গবেষণার ফলাফলে বিশেষ পরিস্থিতির কোনো যৌক্তিকতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। বরং আশঙ্কাজনক বিষয় হলো, গবেষণা পরিচালিত এলাকার প্রায় সবাই মনে করেন, সরকার বিয়ের বয়স ১৮ থেকে ১৬ করেছে।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, যদিও সরকার এই বিশেষ পরিস্থিতির কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি। কিন্তু সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে বিয়ের ন্যূনতম বয়স কমানোর যুক্তি হিসেবে কিছু বিষয় উঠে আসে। যেমন- মেয়েদের কম বয়সে পালিয়ে বিয়ে এবং অনাকাঙ্ক্ষিত দৈহিক মিলনের ফলে গর্ভধারণের ঘটনা। এ আশঙ্কা থেকে সরকার বিয়ের বয়স কমানোর নির্দেশনা দেয়। অথচ গবেষণায় দেখা গেছে, এ ধরনের ঘটনা ঘটে মাত্র ১ দশমিক ৫ ভাগ শিশুর ক্ষেত্রে। তাছাড়া এ ক্ষেত্রে এ ধরনের ভুলের জন্য বিয়ে সঠিক সমাধান নয়। বরং সমস্যার গোড়ায় হাত দিয়ে এ ধরনের ভুল রুখতে হবে।
বক্তারা বলেন, বাল্যবিবাহ মাতৃমৃত্যুর হার বাড়ায় এবং নারীর ক্ষমতায়নের গতি হ্রাস করে। সেক্ষেত্রে গবেষণা এলাকার তথ্য অনুযায়ী শিশুর বিয়ের বয়স ১৫ দশমিক ৫৩।
অনুষ্ঠানে ফলাফল প্রকাশ করেন আয়োজক সংগঠনের পোগ্রাম কোঅর্ডিনেটর বনশ্রী মিত্র নেয়জি।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের প্রেসিডেন্ট আয়েশা খানম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহানাজ হুদা ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৫
জেপি/জেডএফ/এবি