মাওয়া থেকে ফিরে: চারদিন ধরে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় দেশের দক্ষিণাঞ্চলের একুশ জেলায় যোগাযোগের অন্যতম রুট ঢাকা-মাওয়া একেবারেই স্থবির হয়ে পড়েছে। ফেরি পারাপার শুরু হলে গাড়ির চাপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মহাসড়কে চলমান ব্যাটারিচালিত রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও হিউম্যান হলারের কারণে ভোগান্তি বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ঢাক-মাওয়া সড়কে সরেজমিনে দেখা গেছে, যানবাহন চলছে স্বল্প পরিসরে। যাত্রী পরিবহন চলছে ‘কাটা লাইন’ ভিত্তিতে অর্থাৎ লঞ্চে যাত্রী পারাপারের ওপর নির্ভর গাড়িগুলোকে কেন্দ্র করে। তবে ফেরি চলাচল শুরু হলে এ মহাসড়কে চলমান ব্যাটারিচালিত রিকশা, হিউম্যান হলার ও সিএনজি চালিত অটোরিকশার কারণে ভোগান্তির সৃষ্টি হতে পারে। এ সড়কে বাস সীমিত আকারে চললেও সড়ক জুড়েই রয়েছে অটোরিকশা ও হিউম্যান হলারের দাপট।

এছাড়াও মহাসড়ক পার হয়ে ঘাটে পৌঁছে যাত্রীদের ভোগান্তির শিকার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ফেরিঘাটগুলোকে কেন্দ্র করে সক্রিয় বিভিন্ন চাঁদাবাজ গ্রুপ। এসব গ্রুপ বিভিন্ন যানবাহনের কাছ থেকে যেমন চাঁদা তুলছে, আবার কোনো কোনো যানবাহন থেকে অতিরিক্ত চাঁদা আদায় করে ঘাট কর্মচারী ও পুলিশের সঙ্গে যোগসাজশে সিরিয়াল ছাড়াই ফেরিতে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করছে।

ফেরিঘাটে দেখা গেছে, ঘাট থেকে একটি কে টাইপ (ছোট) ফেরি ছেড়ে যাচ্ছে। ফেরিতে ওঠার জন্য গ্যাংওয়ের মুখে সড়কের ডান-বাম দু’দিকেই পণ্যবাহী ট্রাকের লাইন অপেক্ষা করছে। জানা গেছে, সড়কের ডান দিকের সারিতে অবস্থানরত ট্রাকগুলোকে মূলত নিয়ম ভঙ্গ করে ফেরিতে ওঠানোর জন্য আনা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ট্রাক চালকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বামপাশে অবস্থানরত ট্রাকগুলোকে ফেরি ভাড়া ছাড়া আরও ২০০ টাকা চাঁদা দিতে হবে। আর ডান দিকের প্রতিটি ট্রাকের জন্য এ চাঁদার পরিমাণ এক হাজার থেকে ১২শ’ টাকা।

তাদের অভিযোগ, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাদের তিনটি গ্রুপ এ চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করে। আর ঘাটে চাঁদা আদায়কারীদের নেতৃত্বে রয়েছেন- মনি, মনির, দেলোয়ার ও জনিসহ ১০-১২ জন। তবে এ ব্যাপারে ঘাটের দোকানদাররা কেউ মুখ খুলতে রাজি হননি।
ঘাটে চাঁদাবাজি প্রসঙ্গে লৌহজং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাকির হোসাইনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এরকম কোনো বিষয়ে আমাদের জানা নেই। তাছাড়া ঘাটে এখন ফেরিই চলছে স্বল্প পরিসরে, সেখানে চাঁদাবাজির প্রশ্ন তো অনেক দূরের কথা।

বিআইডব্লিউটিসি’র শিমুলিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) গিয়াস উদ্দিন পাটোয়ারী বাংলানিউজকে বলেন, আসন্ন ঈদুল আজহায় নিরবিচ্ছিন্ন যাত্রী সেবা নিশ্চিত করতে পদ্মা সেতু নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান সিনোহাইড্রার ড্রেজার দিয়ে পদ্মায় ড্রেজিং কাজ চলছে। আশা করছি বুধবারের (১৬ সেপ্টেম্বর) মধ্যেই পুরোপুরি ফেরি পারাপার শুরু করা যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৫
এইচআর/আরএম