ঢাকা: জাতীয় প্রয়োজনে বিমানের চার্জ ও ফি মওকুফের বিধান রেখে ‘বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ আইন ২০১৫’-এর খসড়া প্রস্তুত করেছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।
আইনের খসড়ায় বিমানের জন্য জনশক্তি উন্নয়ন ও বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে গবেষণা ও উন্নয়নের উদ্দেশ্যে এভিয়েশন ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা করার কথা বলা হয়েছে।
সম্প্রতি, আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা করে সংশ্লিষ্ট স্টেক হোল্ডারদের মতামত ও সুপারিশ নিয়ে আইনের খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (সিভিল এভিয়েশন-১ অধিশাখা) মো. মনিরুজ্জামান।
তিনি বলেন, একটি সভায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি দুর্যোগে দ্রুত সাড়া দিতে রেসকিউ টিম এবং সরঞ্জামাদি বহনকারী বিমানের সব ধরনের চার্জ ও ফি মওকুফের প্রস্তাব করা হয়েছে।
আইনের খসড়ায় এ বিষয়ে একটি নতুন উপধারা এবং একই সঙ্গে বিমান ওঠানামার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার প্রদানের বিষয়ে আরেকটি উপধারা সংযোজনের প্রস্তাব করা হয়।
তিনি বলেন, সভায় খসড়া অনুযায়ী, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব আলোচনা করে জরুরি প্রয়োজনে সরকার বিমানের চার্জ ও ফি মওকুফ করতে পারে, এ ধরনের নতুন একটি উপধারা সংযোজনের প্রস্তাব গৃহীত হয়।
তবে রেসকিউ টিম এবং সরঞ্জামাদি বহনকারী বিমান ওঠানামার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার প্রদানের বিষয়টি আইনে উল্লেখ থাকার প্রয়োজন নেই বলে মনে করেন আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার সদস্যরা।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দুর্যোগকালীন কাজে ব্যবহারকারী বিমান ওঠানামার ক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই অগ্রাধিকার পায়।
আইনে বাংলাদেশ বিমানের চাহিদার কথা বিবেচনা করে জনশক্তি উন্নয়ন ও বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে গবেষণা ও উন্নয়নের উদ্দেশে এভিয়েশন ইউনিভার্সিটি/একাডেমি প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা করা যাবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কর্তৃপক্ষের যে কোনো পরিমাণ অর্থ পাওনা থাকলে তা সরকারি দাবি হিসেবে আদায়যোগ্য হবে।
খসড়া আইনে আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল মান (ফ্লাইট সেফটি) বজায় রাখার উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় সাংগঠনিক কাঠামো প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করা হয়েছে। এজন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের মতামত প্রয়োজন।
সব অপারেটর ও সেবা প্রদানকারীদের লাইসেন্স ও সার্টিফিকেট প্রদান, ক্ষমতা অর্পণ ও উড়োজাহাজের চলমান পরিদর্শন সম্পর্কিত দায়-দায়িত্ব সম্পাদনে চেয়ারম্যানের ওপর অর্পিত দায়িত্ব নিষ্পন্নের লক্ষ্যে তার/তাকে অফিসের প্রয়োজনে সহায়তা প্রদানের উদ্দেশ্যে সরকার প্রয়োজনীয় সংখ্যক সাংগঠনিক কাঠামো প্রতিষ্ঠা করতে পারবে।
আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার সারসংক্ষেপে বলা হয়, মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনার আলোকে ‘দ্য সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অর্ডিন্যান্স-১৯৮৫’ পর্যালোচনা করে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হওয়ায় এটিকে আইনে পরিণত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ক্যাটাগরি-১ এ উন্নীত করার লক্ষ্যে আইসিএও এর সুপারিশ অনুযায়ী বেশ কিছু বিমান সংযোজনপূর্বক আইনটি আধুনিক ও যুযোপযোগী করা হয়।
‘বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ আইন ২০১৫’ নামের এই আইনের খসড়ায় ৪১টি ধারা রয়েছে।
আইনের খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে জানিয়ে উপসচিব মো. মনিরুজ্জামান বলেন, খসড়াটি অর্থ বিভাগে পাঠানো হবে। আইনের খসড়ায় সাংগঠনিক কাঠামোর জন্য অর্থ বিভাগের মতামত প্রয়োজন রয়েছে।
রেওয়াজ অনুযায়ী, অর্থ বিভাগের মতামতের পর নীতিগত অনুমোদনের জন্য আইনের খসড়া মন্ত্রিসভার বৈঠক ও ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এরপর মন্ত্রিসভায় উপস্থাপিত হয়ে সংসদে পাস হয়ে আইনে পরিণত হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৫
এমআইএইচ/বিএস/এবি