ঢাকা: স্থাপনা নির্মাণে অধিগ্রহণ করা জমির ভিডিও ধারণ করে ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করবে সরকার। তবে জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণ নেওয়া যাবে না।
সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ সংক্রান্ত প্রভিশন যুক্ত করে একটি আইনের খসড়া ভেটিং সাপেক্ষে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘পায়রা বন্দর প্রকল্প (ভূমি অধিগ্রহণ) আইন-২০১৫’ এর খসড়ার ভেটিং সাপেক্ষে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা সাংবাদিকদের বিষয়টি জানান।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ভূমি অধিগ্রহণের জন্য ১৯৮২ সালের ‘স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুম দখল অধ্যাদেশ’ বলে জমি অধিগ্রহণ করা হয়। পদ্মা সেতু প্রকল্প, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে নির্মাণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত আইন রয়েছে। একই আদলে এ আইন করা হয়েছে।
সচিব বলেন, অন্য আইনে যাই থাকুক না কেন, এ আইনের আওতায় বিশেষ বিধান যুক্ত করা হয়েছে। আইনের বিশেষ বিধানে পাঁচ নম্বর ধারাতে বলা হয়েছে, প্রত্যাশী সংস্থার কাছ থেকে অর্থ পাওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে পরিশোধের ব্যবস্থা করা হবে। যাদের প্রয়োজনে জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে তারাই প্রত্যাশী সংস্থা।
‘যখন প্রকল্প নেওয়া হয় দুষ্টু লোকেরা বেশি ক্ষতিপূরণ পাওয়ার জন্য রাতারাতি স্ট্রাকচার তৈরি করে অসাধু কর্মচারীদের সঙ্গে যোগসাজসে ক্ষতিপূরণ নেন। এ ধরনের পেশাদার লোক রয়েছে। ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে এ ধরনের লোক পাবেন। পরে নিজেদের মধ্যে ক্ষতিপূরণের টাকা ভাগ বাটোয়ারা করেন। এটি চেক দেওয়ার জন্য এ প্রভিশন রাখা হয়েছে। ’
তিনি বলেন, যদি জনস্বার্থবিরোধী কোনো অসাধু উদ্দেশ্যে ঘরবাড়ি নির্মাণ বা জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে কৃষিজমি বাণিজ্যিক প্লট হিসাবে কেউ দেখান, তাহলে কেউ বর্ধিত হারে ক্ষতিপূরণ পাবেন না, এ প্রভিশন রয়েছে।
শ্রেণি পরিবর্তন করে ক্ষতিপূরণ দাবি করলে জেলা প্রশাসন প্রত্যাখান করবে। প্রত্যাখানের বিরুদ্ধে সাত দিনের মধ্যে জেলা প্রশাসনের কাছে আপিল করা যাবে। অনেক সময় নিলে প্রকল্প ঝুলে যাবে ও বাস্তবায়নে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে তিনি জানান।
তিনি আরও জানান, আপিলের পাঁচ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করা হবে। আপিল নিষ্পত্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জেলা প্রশাসক ব্যবস্থা নেবেন। আপিলে হেরে গেলে জেলা প্রশাসক ঘরবাড়ি স্থাপনা নিজ খরচে সরিয়ে নিতে বলবেন। না হলে প্রকাশ্যে নিলামে বিক্রি করে ট্রেজারিতে টাকা জমা দেবেন।
‘আর একটি বিষয়, সম্প্রতি রি-ইনফোর্স করা হয়েছে (এটি আগে ছিল না)। এটি হলো, যখন অধিগ্রহণের নোটিশ দেওয়া হয়, তখন ভিডিও করা হয়। এর উদ্দেশ্য- জমির প্রকৃতি কী, কী গাছপালা ও স্থাপনা রয়েছে তা দেখা। গাছপালার জন্যও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। কী গাছপালা, কী স্ট্রাকচার রয়েছে এর ভিডিও করে নিয়ে এর ভিত্তিতেই ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করা হবে। আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে কোর্ট-কাচারি হলেও এই ভিডিও গ্রহণযোগ্য হবে। ’
এটি জনস্বার্থের জন্য করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এতে একদিকে সরকারের টাকা লুটেরা গোষ্ঠী ভোগদখলের সুযোগ বন্ধ হবে এবং যাদের জমি অধিগ্রহণ করা হবে তারা খুব তাড়াতাড়ি টাকা পেয়ে যাবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৫/আপডেট: ১৮২৪ ঘণ্টা
এমআইএইচ/এসকে/এসএস
** সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা টেকসই করতে আইন
** সরকারি খাতে ট্রাস্ট পরিচালনায় ‘আমব্রেলা ল’ করার নির্দেশ
** মন্ত্রিসভা বৈঠকে ৩ আইন অনুমোদন