ঢাকা: রাজধানীর হাতিরঝিলের পূর্বপাশের সদরঘাট-গাজীপুর রুট। একটি গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম সড়ক।
শুধু সদরঘাট-গাজীপুরই নয়, এ সড়কটি গুলশান-১ ও গুলশান-২ এর সঙ্গেও সংযুক্ত। হাতিরঝিলে প্রবেশ ও বাহির, সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী, মৌচাক-মগবাজার, কমলাপুরসহ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় যাতায়াতে ব্যবহৃত হয় এ সড়ক।
কিন্তু এ সড়কের বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে বেশ কয়েকটি ডাস্টবিন। খোলা এসব ডাস্টবিনের আবর্জনার উৎকট দুর্গন্ধের কারণে প্রতিনিয়ত চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে পথচারীদের।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, মেরুল বাড্ডাসহ এই সড়কের বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা দখল করে থাকা খোলা ডাস্টবিনের কারণে চলাচল করাই দায় হয়ে পড়েছে। অনেক সময় উৎকট গন্ধে দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়।
এসব ডাস্টবিনকে ‘দুঃখ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন ভুক্তভোগী স্থানীয় বাসিন্দা ও পথচারীরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, এ ধরনের খোলা ডাস্টবিন শুধু মেরুল বাড্ডাতেই নয়, উত্তর বাড্ডা, বারিধারা এবং দক্ষিণে রামপুরাতেও রয়েছে।
সেখানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা এসব ডাস্টবিনের ময়লা-আবর্জনার কারণে স্থানীয় বাসিন্দা, পথচারী ও গণপরিবহনের যাত্রীদের যেন কষ্টের শেষ নেই।
ক্রেতা-দোকানিরা বলছেন, ডাস্টবিনের কারণে বাজারের ক্রেতা ও বিক্রেতাদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। অনেক সময় বমির উপক্রম হয়।
আর উত্তর বাড্ডার ডাস্টবিনের কারণে ফুটপাত দিয়ে হাঁটা-চলাই দায় হয়ে পড়েছে। এছাড়া সড়কের একটি অংশ দখল করে ডাস্টবিনের হওয়ার কারণে যানজট তীব্র আকার নেয এখানে।
একাধিক পথচারী ও ব্যবসায়ী বাংলানিউজকে বলেন, নির্মাণাধীন ভবনের পাশে থাকা এ ডাস্টবিনের কারণে এই এলাকায় প্রতিনিয়তই যানজট লেগে থাকে। তবে এ দুর্ভোগ লাঘবে সিটি করপোরেশনের কোনো কর্মকাণ্ড চোখে পড়ছে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ময়লা-আবর্জনা সংগ্রহ করে খোলা ডাস্টবিনে রাখা হয়। পরে সেখান থেকে ট্রাকে ভরে আবর্জনা বহন করে নিয়ে যাওয়া হয় অন্যত্র।
অনেক সময় প্রায় আবর্জনা তুলতে দেরি হয়ে যায়। তখন ড্রাম ভরে, সড়কের উপর সৃষ্টি হয় ময়লা-আবর্জনার টিলা!
তখন ছড়িয়ে-ছিটিয়ে অর্ধেকেরও বেশি রাস্তা চলে যায় আবর্জনার দখলে।
ক্ষোভ নিয়ে বারিধারা এলাকার বাসিন্দা মাহবুবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ডাস্টবিন তৈরি করে একটি ব্যস্ত সড়কের উপর দিনের পর দিন ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। ঢাকায় কী আর কোনো জায়গা নেই! আর সিটি করপোরেশন কী করে, এ নিয়ে তাদের কোনো চিন্তাই নেই?
‘ময়লা-আবর্জনার কারণে এ সড়কে হেঁটে বা গাড়িতে করে আসা-যাওয়ার সময় দম বন্ধ হয়ে আসে। আর বৃষ্টি হলে তো কথাই নেই। পুরো এলাকা ছড়িয়ে যায় আবর্জনায়। এ কারণে অনেকে নানা রোগজীবাণুতেও আক্রান্ত হচ্ছেন,’ বলেন তিনি।
মাহবুবুর রহমান বলেন, নগরবাসীর দুর্ভোগের বিষয়টি চিন্তা করে সড়ক থেকে এসব ডাস্টবিন অবিলম্বে সরানোর দাবি জানাচ্ছি।
তার সঙ্গে একই দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা, পথচারীরা।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী (বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও নগর পরিকল্পনা বিভাগ) এস এম শফিকুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, সড়কের উপরে খোলা ডাস্টবিনগুলো নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা আছে। দীর্ঘদিন ধরে এগুলো সরানোর চেষ্টা করছিলাম। বিভিন্ন কারণে হয়ে ওঠেনি। সেগুলো সরানোর জন্য মেয়রেরও নির্দেশ রয়েছে।
আগামী এক মাসের মধ্যে এসব খোলা ডাস্টবিন সরিয়ে অন্যত্র নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৫০ ঘণ্টা, সেপ্টম্বর ২২, ২০১৫
টিএইচ/এমএ