ঢাকা, বুধবার, ২৯ মাঘ ১৪৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

ভোলার তেতুলিয়ার আকস্মিক ভাঙন, আতঙ্কে এলাকাবাসী

ছোটন সাহা, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৫
ভোলার তেতুলিয়ার আকস্মিক ভাঙন, আতঙ্কে এলাকাবাসী ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চর ভেদুরিয়া থেকে ফিরে: ভোলা সদরের ভেদুরিয়া ইউনিয়নে তেতুলিয়া নদীতে আকস্মিকভাবে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত এক সপ্তাহের ভাঙনে চর ভেদুরিয়া ও মোল্লা কান্দি গ্রামের গৃহহারা হয়েছেন অন্তত শতাধিক পরিবার।



বিলীন হয়ে গেছে একটি স্কুল, মসজিদ, অর্ধশতাধিক একর ফসলি জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা। বর্তমানে ভাঙনের মুখে রয়েছে ২টি স্কুল, ২টি মসজিদ ও ২ হাজার ঘরবাড়ি।

ভাঙন রোধে মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নদীর তীরে হাজার হাজার নারী-পুরুষ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি করেছে। এ সময় এলাকাবাসী ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
 
ভোলা সদরের ভেদুরিয়া ইউনিয়নের ভেদুরিয়া লঞ্চঘাট থেকে ব্যাংকের হাট রাস্তার মাথা পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে আকস্মিক ভাঙন শুরু হয়।

এর মধ্যে গত সাতদিনে তীব্র ভাঙন চলছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন নদীর তীরবর্তি মানুষ। শতাধিক ঘরভিটা বিলীন হওয়ার পর এখন দুটি গ্রামের অন্তত ২ হাজার ঘরবাড়ি হুমকির মুখে পড়েছে। এসব গ্রামের মানুষজন ভিটাহারা হয়ে পড়ার আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।

ভেদুরিয়া গ্রামের স্কুল শিক্ষক মাইনুদ্দিন হাওলাদার বাংলানিউজকে বলেন, ভেদরিয়া ইউনিয়নের ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড তেতুলিয়া নদীর ভয়াবহ ভাঙনের মুখে পড়েছে। ভাঙনের কারণে দিশহারা হয়ে পড়েছেন মানুষ।

শাজাহান জানান, তেতুলিয়া ভাঙন থেকে বাঁচতে আমরা মানববন্ধন করেছি, খুব শিগগিরই আরো আন্দোলন কর্মসূচি পালন করবো।

ভাঙন কবলিত এলাকার বাসিন্দা ইসলাম আবদুল সহিদ জানান, ভাঙনে গৃহহারা হয়েছেন শত শত মানুষ। তাদের মাথা গোজাই ঠাঁই হয়েছে রাস্তার ওপর খোলা আকাশের নিচে।

ভাঙন কবলিত এলাকার আফরোজা বেগম, আকলিমা, লিজা, নাহিদ, সাহিনুর, সালেহা ও রোকেয়া জানান, কিছুদিন আগেও জমি চাষাবাদ, খেতের ফসল ও পুকুরের আয় দিয়ে সংসার চলছিল তাদের। কিন্তু সর্বনাশা তেতুলিয়া ঘরভিটা সব কেড়ে নিয়েছে। গত এক সপ্তাহে আগে তেতলিয়া ভাঙনে বসতঘরের হারিয়েছেন তারা। এখন আশ্রয় নিয়েছেন বাঁধের উপর।
 
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, তেতুরিয়া তীব্র ভাঙন। বড় বড় তীর ধ্বসে পড়ছে নদীতে। এতে ফসলের খেত ও বসতঘর বিলীন যাচ্ছে। নদীর তীরের মানুষ এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ঘর সরিয়ে নিচ্ছেন, কিন্তু কিছুতেই ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না তারা।

ভাঙন কবলিতরা জানায়, চলতি বর্ষা মৌসুমে ভাঙন শুরু হয়। কিন্তু গত ৭ দিনের ভাঙনের তীব্রতা অনেক বেশি। ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে ঐতিহ্যবাহী ভেদুরিয়া বাজার, লঞ্চঘাট, সড়ক, স্কুল-কলেজসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হুমকির মুখে পড়বে।

এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল হেকিম বলেন, তেতুলিয়ার ভাঙন রোধে চলতি মৌসুমে কোনো ব্যবস্থা নেই, শুস্ক মৌসুমে বরাদ্দ এলে ভাঙন রোধের কাজ শুরু করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৫
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।