ঢাকা, বুধবার, ২৯ মাঘ ১৪৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

মেঘনায় বিলীন হচ্ছে হাট-বাজার!

সাজ্জাদুর রহমান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৫
মেঘনায় বিলীন হচ্ছে হাট-বাজার!

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে মেঘনা নদীর ভাঙন ভয়াবহ রুপ নিয়েছে। রাক্ষুসে মেঘনা গিলছে হাট-বাজার।

ভাঙন শুরু হয়েছে ফলকন লুধূয়া বাজারে। তিন দিনের ভয়াবহ ভাঙনে প্রায় ২০টি দোকান-ঘর বিলীন হয়ে যায়। ভেঙে গেছে বাজারের মসজিদ ও ব্রিজ। সরিয়ে নেওয়া হয়েছে মাছঘাট ও বেশকিছু দোকানপাট। চরম আতঙ্কে রয়েছে ব্যবসায়ী, দোকান মালিক ও স্থানীয়রা।

তিন যুগেরও বেশি সময় ধরে মেঘনার ভাঙন চলছে। তবে ২০১০ সাল থেকে ভাঙন ভয়াল রুপ নেয়। গত তিন বছরের ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে সাহেবের হাট, নতুন সাহেবেরহাট, মাতাব্বরনগর বাজার, সফিকগঞ্জ বাজার, আজু বেপারিরহাট, সায়েদ মুহুরিরহাট, তালতলির হাট ও পাতাবুনিয়া বাজার।

হুমকির মুখে রয়েছে মতিরহাট, কাদির পন্ডিতের হাট, মাতাব্বরহাট, হাজীগঞ্জ বাজার, নবীগঞ্জ বাজার ও নাছিরগঞ্জ বাজার।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার চর ফলকন, সাহেবেরহাট, চর কালকিনি ও পাটারিরহাট উপকূলীয় ইউনিয়ন। মেঘনা গ্রাস করছে এ চার ইউনিয়ন। চলতি বর্ষা মৌসুমে ভাঙনের তীব্রতা কয়েকগুণ বেড়েছে। এতে ঘর-বাড়ি, রাস্তাঘাট, ফসলি জমি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র ও মসজিদসহ সরকারি-বেসরকারি বহু স্থাপনা বিলীন হয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত ও নিঃস্ব হয় হাজার হাজার পরিবার।

ব্যবসায়ী মাহবুব জানান, লুধূয়া বাজার নদীতে ভাঙতে শুরু হয়েছে। গত কয়েক দিনের মেঘনার ঢেউ ও তীব্র জোয়ারে পশ্চিম বাজারের প্রায় ২০টি দোকান নদীতে চলে গেছে। বর্তমানে ব্যবসায়ীরাসহ আশপাশের শত শত পরিবার আতঙ্কে রয়েছে।

লুধূয়া এলাকার পল্লী চিকিৎসক সামছুদ্দিন জানান, নদীতে বাড়ি ভেঙেছে। বাজারে দোকান ঘরটিও ভাঙনের মুখে। এমন পরিস্থিতিতে কি করবো উপায় খুঁজে পাচ্ছি না।

লুধূয়া ফলকন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন বাংলানিউজকে জানান, বাজারের পাশেই বিদ্যালয়। ভাঙন অব্যাহত থাকায় বিদ্যায়টি হুমকিতে রয়েছে। জোয়ারে মাঠ ডুবে যায়। যে কারণে দ্রুত বিদ্যালয়টি সরিয়ে নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।

স্থানীয় চর ফলকন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আশরাফ উদ্দিন জানান, লুধূয়া উপজেলার একটি ঐতিহ্যবাহী বাজার। এ বাজারে প্রায় পাঁচ শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। দ্রুত ভাঙন ঠেকানো না গেলে ব্যবসায়ী ও দোকান ঘরের মালিকদের পথে বসতে হবে।

লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি-কমলনগর) আসনের এমপি আবদুল্লাহ আল মামুন বাংলানিউজকে জানান, ভাঙন রোধে ৩৭ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ প্রয়োজন। পার্শ্ববর্তী রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডার এলাকায় বাঁধের কাজ চলছে। অক্টোবরে কমলনগরে এক কিলোমিটার বাঁধের কাজ শুরু হবে। অবশিষ্ট অংশের বরাদ্দ পেতে চেষ্টা করে যাচ্ছি। বরাদ্দ এলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে কাজ করা হবে।

লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগরে নদী ভাঙন রোধে ৩৭ কি.মি এলাকায় বাঁধ নির্মাণে ১ হাজার ৩৫০ কোটি টাকার অনুমোদন করে একনেক। প্রথম পর্যায়ে ১৯৮ কোটি টাকায় রামগতি ও কমলনগরে ৫ দশমিক ৫ কি.মি এলাকায় বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সেনাবাহিনী। আরও ২৮ দশমিক ৫ কি.মি. বাঁধ নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০০৪৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৫
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।