ঢাকা, বুধবার, ২৯ মাঘ ১৪৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

কোরবানির হাটে ওদের চাহিদা তুঙ্গে!

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৫
কোরবানির হাটে ওদের চাহিদা তুঙ্গে! ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

গাবতলী পশুর হাট ঘুরে: ঈদুল আজহা উপলক্ষে পশু কোরবানির তালিকায় গরু, ছাগল, উটের পাশাপাশি পিছিয়ে নেই মহিষও। রাজধানীর বৃহত্তম গাবতলীর পশুরহাটে মহিষের বেশ চাহিদা দেখা গেছে।

গরুর চেয়ে দাম কম ও বেশি মাংস পাওয়ায় অনেকে মহিষের দিকে ঝুঁকছেন বলে জানিয়েছেন বেপারীরা।

তারা জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কিশোরগঞ্জ জেলার মানুষ মহিষ কোরবানি দিতে বেশি পছন্দ করেন। তাই অনেক ছোট ছোট বেপারী গাবতলী থেকে ১০ থেকে ১৫টি মহিষ কিনে এসব জেলায় বিক্রি করেন। ঢাকা শহরের কসাইয়ের কাছেও প্রচুর মহিষ বিক্রি হয়। মহিষগুলো অধিকাংশ ভারতের বিহার ও উত্তরাঞ্চলীয় হরিয়ানা রাজ্যের।

যশোরের বেনাপোল পোর্টখালী, সাতক্ষীরা ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে গাবতলীতে এসব মহিষ আমদানি করা হয়েছে। সীমান্ত এলাকায় ছোট ছোট নদী দিয়ে অনেক মহিষ সাঁতার কেটে পার হয়েছে বলেও জানান বেপারীরা।
 
কুচকুচে কালো, শরীরে কোনো দাগ নেই, চামড়া পাতলা ও দেখতে গোলগাল মহিষের চাহিদা অনেক বেশি। এসব মহিষের দামও একটু চড়া। সাড়ে চার মণ মাংস পাওয়া যাবে এমন মহিষের দাম গুণতে হবে ৮০ হাজার টাকা।

চাঁপাইনবাগঞ্জের বেপারী লাল চাঁদ বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিদিন মহিষ হাটে আসছে। ৩২টি মহিষের মধ্যে ইতোমধ্যে ১৪টি মহিষ বিক্রি হয়ে গেছে। আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কিশোরগঞ্জের মানুষ মহিষ কোরবানি দিতে পছন্দ করতো। এখন ঢাকায়ও অনেক মহিষ বিক্রি হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা বেশি শিক্ষিত ন‍া, তবে ডাক্তার বলে মহিষের মাংসে কোনো অ্যালার্জি নেই। যে কারণে মহিষের চাহিদাও ভালো।

পাবনা সুজানগরের মেহের বেপারী ২ লাখ ২০ হাজার টাকায় একটি বড় মহিষ বিক্রি করেছেন। তার দাবি ১২ থেকে ১৩ মণ মাংস মিলবে  বিরাট এ মহিষ থেকে। বড় গরুতে ইনজেকশনের ভয় ও মহিষের মাংস স্বস্তা ও নিরাপদ হওয়ায় এবারও মহিষের চাহিদা অনেক।

মহিষের চাহিদা প্রসঙ্গে মেহের বেপারী বাংলানিউজকে বলেন, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, মানুষও সচেতন হচ্ছে। গরুর মাংসে রোগে ভরা, কিন্তু মহিষের মাংসে আল্লাহর রহমতে কোনো রোগ নেই। ’

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শহিদুল বেপারী বলেন, ‘আমাদের জেলায় গরুর থেকে মহিষ কোরবানি তুলনামূলকভালো হয়। শুধু কোরবানি নয়, বারো মাস মহিষের ব্যবসার সঙ্গে আমরা জড়িত। কোরবানির সামনে রেখে পাঁচজন মিলে প্রায় শতাধিক মহিষ কিনবো মনে করছি। গাবতলী থেকে ট্রাক বোঝাই করে সব মহিষ শুধু ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও আশুগঞ্জে বিক্রি করবো। ’
 
কোরবানি দেওয়ার জন্য অনেকে আবার দলগতভাবে গাজীপুর থেকে গাবতলী পশুরহাটে এসেছেন। ক্রেতারা দাবি করে বলেন, গত কোরবানির থেকে এবার মহিষের দাম একটু বেশি। সাড়ে ৫ মণ মাংস পাওয়া যাবে এমন মহিষের দাম হাঁকা হচ্ছে ৮০ হাজার টাকা। ২০১৪ সালের কোরবানির ঈদে এই মহিষ ৬৭ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।

মহিষের দাম বাড়া প্রসঙ্গে পাবনা সুজানগরের আব্দুল হাকিম বেপারী বলেন, ভারতে গরুর মাংসের থেকে মহিষের মাংসের চাহিদা বেশি। ভারতে কম বেশি অনেকেই মহিষের মাংস খায়। সীমান্তে গরুর থেকে মহিষ পারাপারে আরও কড়াকড়ি।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৫
এমআইএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।