ঢাকা: ঈদ-উল আযহার বাকি আর দুই দিন। শেষ মুহূর্তে ক্রেতা-বিক্রেতাদের পদচারণায় জমজমাট হয়ে উঠেছে রাজধানীর বিভিন্ন পশুর হাট।
মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) রামপুরার আফতাবনগর ঘুরে দেখা যায় গরুর হাটের এমন দৃশ্য।
মঙ্গলবার দিনের অর্ধবেলা পর্যন্ত বৃষ্টি-কাদার পর শেষ বিকেলে রোদের আলোয় ঝলমলে হয়ে ওঠে হাট প্রাঙ্গণ। এ সময় দেখা যায় অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে, কেউ বা একা একা হাটে গরু দেখতে বা কিনতে এসেছেন।
দিন গড়িয়ে যতোই সন্ধ্যা নামতে থাকে, ততোই বাড়তে থাকে ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের ভীড়। সারি সারি বেধে রাখা গরু দেখে দাম দর করে সাধ্যমতো গরু অথবা ছাগল কিনে বাড়ি ফিরছেন ক্রেতারা। কেউ কেউ দর দাম করেই দিন কাটিয়ে দিয়েছেন।
ন্যায্যমূল্যে গরু কিনে একদিকে ক্রেতা যেমন খুশি, তেমনি লাভ করে খুশি বিক্রেতাও।
মেরুল বাড্ডা থেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে গরু কিনতে এসেছেন সোহরাব চৌধুরী। সঙ্গে তার দুই ছেলে এক মেয়ে। দীর্ঘ দুই ঘন্টা হাটে ঘুরে অবশেষে সাধ ও সাধ্যের সমন্বয়ে ৭৫ হাজার টাকা দিয়ে একটি কালো রঙের গরু কিনে বাড়ি চলেছেন। গরু কেমন হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভালোই হয়েছে। কোরবানির গরু লাভ লোকসানের হিসেব করে কি কিনা যায়? সবার পছন্দ হলেই হলো।
তিনি বলেন, গরু কেনা শেষ হলেও বাকি রয়েছে অনেক কাজ। গরুর জন্য খাবার বেধে রাখার রশি, গলার মালা, এরপর জবেহ করার সময় চাপাতি, দা ছুরিসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও কিনতে হবে।
তবে এর সব কিছুই পাওয়া যাচ্ছে হাটের বাইরের প্রাঙ্গণে। জামালপুরের রশিদ মিয়া মাংস বানাতে তেতুল গাছের খাইট্টা নিয়ে বসেছেন। বিভিন্ন সাইজের খাইট্টা পাওয়া যায় তার কাছে। যার মূল্য ২শ’ টাকা থেকে ৫শ’ টাকা পর্যন্ত। পাশেই রয়েছেন ময়মনসিংহের রফিক। যার কাছে পাওয়া যাচ্ছে গরুর খাবার। সুদূর ঠাকুরগাঁও থেকে তিনি নিয়ে এসেছেন ধানের খড়। এক আঁটি খড়ের দাম ৫ টাকা করে।
রামপুরার মেরাদিয়া এলাকার বাসিন্দা জামাল উদ্দিন এক লাখ টাকার ধানের খড় নিয়ে এসেছেন কোরবানি উপলক্ষে বিক্রির জন্য। কিন্তু কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির কারণে অনেক খড়ই নষ্ট হয়ে গেছে। তারপরও যা আছে তা বিক্রি করতে পারলে লোকসানের পরিমাণ কিছুটা হলেও কমবে। কোরবানির গরু হাটকে কেন্দ্র করে বসেছে গরু বাড়ি নেওয়ার জন্য বিভিন্ন রঙের মালা, রশি, লাঠি, গরুর খাদ্য ভুষি, খুদ ইত্যাদি।
রামপুরা গরু হাটের নিরাপত্তার জন্য রয়েছে পুলিশ কন্ট্রোল রুম। সিসি ক্যামেরা ও ওয়াচটাওয়ারের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হয় হাটের নিরাপত্তা।
বাড্ডার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম এ জলিল বাংলানিউজকে বলেন, এ কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে হাটের নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। হাটের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত তেমন কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেনি।
তিনি বলেন, আশা করি, সুস্থ সুন্দরভাবে এবারের হাটের কার্যক্রম শেষ হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১১০৭ ঘন্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৫
এজেডকে/এএসআর