ঢাকা: গত দু’সপ্তাহে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হয়েছে তিন শতাধিক অজ্ঞান ও মলম পার্টির সদস্য। এরপরও রাজধানীতে গত একমাসে শতাধিক মানুষ অজ্ঞান ও মলম পার্টির খপ্পরে পরে সর্বশান্ত হয়েছেন।
অজ্ঞান ও মলম পার্টির তৎপরতা বন্ধে রেলস্টেশন, বাস টার্মিনাল, লঞ্চ ঘাট, যাত্রীবাহী বাস, পশুর হাটে লিফলেট বিতরণ, সচেতনতামূলক গানসহ নানামুখী কার্যক্রম পরিচালনা করেছে পুলিশ। এরপরও থেমে নেই অজ্ঞান ও মলম পার্টির দৌরাত্ম্য।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, অজ্ঞান ও মলম পার্টির বড় টার্গেট ছিলো সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকরা। গত এক মাসে রাজধানীতে অন্তত ১০ জন চালক অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পরে অটোরিকশা খুইয়েছেন। আক্রান্তদের তালিকায় রয়েছেন বাক প্রতিবন্ধী, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা। বাদ যাননি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যও।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, অজ্ঞান ও মলম পার্টি খপ্পরে আক্রান্ত হয়ে অচেতন অবস্থায় ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন অন্তত ৮০ জন।
আক্রান্ত ব্যক্তিরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্তের পাশাপাশি শারীরিকভাবেও মারত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়েন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
চিকিৎসকরা বলছেন, অচেতন করতে অতিরিক্ত ওষুধ ব্যবহার করলে ও যথাসময় চিকিৎসা দেওয়া না গেলে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
টার্গেট সিএনজি চালকরা
অজ্ঞান ও মলম পার্টির সদস্যদের টার্গেটে পরিণত হয়েছেন সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকরা। তাদেরকে অজ্ঞান করে অটোরিকশাটি হাতিয়ে নিতে পারলেই বেশি লাভবান হন এ চক্রের সদস্যরা।
গত এক মাসে রাজধানী থেকে চালককে অজ্ঞান করে অন্তত ১০টি অটোরিকশা হাতিয়ে নিয়েছেন অজ্ঞান ও মলম পার্টির সদস্যরা।
দৌরাত্ম্য কমেছে পশুর হাটে
রাজধানীর পশুর হাট কেন্দ্রীক নিরাপত্তা জোরদার করায় পশুর হাটে দৌরাত্ম্য কমেছে অজ্ঞান ও মলম পার্টির সদস্যদের। বিপুল সংখ্যক পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ ও ৠাব সদস্য মোতায়েন রাখার পাশাপাশি সিসি ক্যামেরা ও ওয়াচ টাওয়ারের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক পশুর হাট পর্যবেক্ষণের কারণে অজ্ঞান ও মলম পার্টির দৌরাত্ম্য অনেক কমেছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারের উপ- কমিশনার মুনতাসিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, অজ্ঞান ও মলম পার্টির দৌরাত্ম্য বন্ধে নিয়মিত অভিযানের পাশাপাশি লিফলেট বিতরণ, পোস্টারিং, বাস টার্মিনাল, রেল স্টেশনে সচেতনামূলক নানা কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
পুলিশের নানামুখী কর্মসূচির কারণে অজ্ঞান ও মলম পার্টির দৌরাত্ম্য নিয়ন্ত্রণ করা গেছে বলে জানান তিনি।
ঢামেক হাসপাতালের চিকিৎসক সুদ্বীপ দেব বাংলানিউজকে বলেন, মাত্রাতিরিক্ত ওষুধ দিয়ে অচেতন করা ব্যক্তিকে যথাসময়ে চিকিৎসা দেওয়া না গেলে মৃত্যু পর্যন্ত হয়।
তিনি বলেন, কেউ আক্রান্ত হয়ে মেডিকেলে আসামাত্র প্রথমে সাপোর্টিভ ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া হয়। কি ওষুধ দিয়ে অচেতন করা হয়েছে সেটি শনাক্তের পর মেডিসিন দেওয়া শুরু হয়।
অজ্ঞান প্রায় সব রোগীর ক্ষেত্রেই স্টমাক (পাকস্থলী) ওয়াশ করা হয়। এ বিষয়ে ডাক্তার দেব বলেন, আক্রান্ত হওয়ার চার ঘণ্টার মধ্যে স্টমাক ওয়াশ করতে পারলে রোগীকে বাঁচানো সম্ভব হয়।
বাংলাদেশ সময়: ০৯০৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৫
এনএ/ এজেডএস/জেডএস