কিশোরগঞ্জ: প্রতিবারের মতো এবারও বাংলাদেশ তথা উপমহাদেশের বৃহত্তম ঈদ জামাত অনুষ্ঠানের জন্য শেষ সময়ের প্রস্তুতি চলছে কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী শোকালিয়া ময়দানে।
এবার ঈদুল আজহার ১৮৮তম জামাত অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কিশোরগঞ্জের এ ঈদগাহ ময়দানে।
এদিকে, সুষ্ঠুভাবে জামাত অনুষ্ঠানের লক্ষে এরইমধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
ঈদ জামাত নির্বিঘ্নে সম্পন্নের লক্ষে মাঠজুড়ে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতিমূলক কাজ। এর অংশ হিসেবে শ্রমিকরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কাতারের লাইন টানা, মাঠ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা, ধোয়া-মোছা ও রংয়ের প্রলেপ দেওয়ার কাজে। মাঠের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে বলে জানিয়েছে ঈদগাহ কমিটি।
অপরদিকে, দেশের বৃহত্তম এ ঈদ জামাত নিরাপদে অনুষ্ঠানের জন্য কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে পুলিশ প্রশাসন।
শোলাকিয়া ঈদগাহ কমিটি সূত্র জানায়, এবার ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টায়। এতে ইমামতি করবেন মাওলানা হিফজুর রহমান খান। জামাতে শরীক হওয়া বিপুলসংখ্যক মুসুল্লির দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য নামাজ শুরুর ৫ মিনিট পূর্বে ৩টি, ৩ মিনিট পূর্বে ২টি ও ১ মিনিট পূর্বে ১টি শটগানের গুলি ছোড়া হবে।
কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠ কমিটির সভাপতি জি এস এম জাফরউল্লাহ বাংলানিউজকে জানান, নিরাপদে ঈদ জামাত অনুষ্ঠানের লক্ষে যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, সুষ্ঠুভাবে জামাত অনুষ্ঠানের জন্য এ পর্যন্ত একাধিকবার মাঠ পরিদর্শনসহ বেশ কয়েকটি সভা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে মাঠে পানি সরবরাহ, পয়নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং মাঠ নামাজের উপযোগী করে তোলার সব প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আনোয়ার হোসেন খান বাংলানিউজকে জানান, ঈদ জামাত সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নির্বিঘ্ন করতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে।
শোলাকিয়ার ইমাম মাওলানা হিফজুর রহমান খান বাংলানিউজকে জানান, শোলাকিয়া মাঠে আমার ওস্তাদ মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাউসদ সাহেবের সহযোগী হিসেবে গত ৩ বছর ধরে আছি। গত ঈদুর ফিতরের নামাজের আগে শোলাকিয়া মাঠে বয়ান করেছি। এ ঈদ জামাতে প্রথমবারের মতো ইমামতি করব শুনে আমি আনন্দিত।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ঈশা খাঁর ষষ্ঠ বংশধর দেওয়ান হয়বত খান বাহাদুর কিশোরগঞ্জে জমিদারি প্রতিষ্ঠার পর ১৮২৮ সালে জেলা শহরের পূর্ব প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় ৭ একর জমির উপর এ ঈদগাহ প্রতিষ্ঠা করেন।
জনশ্রুতি রয়েছে এই ময়দানে প্রথম অনুষ্ঠিত জামাতে সোয়া লাখ মুসুল্লি অংশ নিয়েছিলেন বলে মাঠের নামকরণ হয় ‘সোয়া লাখি মাঠ’। কালের বিবর্তনে বর্তমানে এ মাঠের নাম হয়েছে শোলাকিয়া। বিশাল এই মাঠে মোট কাতার রয়েছে ২৬৫টি। প্রতি কাতারে ৫ শতাধিক মুসুল্লি নামাজে অংশ নেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০১৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৫
এসআর