ঢাকা: একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার ৭ আসামির বিরুদ্ধে আগামী ১৫ নভেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
একই মামলার ওই সাত আসামির মধ্যে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন আব্দুর রহমান (৭৫) ও আহমদ আলী (৭৮)।
বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) প্রসিকিউটর মোখলেছুর রহমান বাদল তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে দুই মাসের সময়ের আবেদন জানালে চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ার উল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ দিন ধার্য করেন।
একইসঙ্গে প্রসিকিউটর বাদল আসামি আহমদ আলীকে সেফহোমে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতির আবেদন জানান। ট্রাইব্যুনাল এ আবেদন গ্রহণ করে আসামিকে সেফহোমে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন। ট্রাইব্যুনালের অনুমতি নিয়ে গত ২০ সেপ্টেম্বর সেফহোমে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে অপর আসামি আব্দুর রহমানকে।
এ সময় আসামিদের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আব্দুশ শুকুর খান এবং গাজী এমএইচ তামিম উপস্থিত ছিলেন।
গত ১২ আগস্ট গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর পূর্বধলার জারিয়া ইউনিয়নের গণকপাড়া গ্রামের মৃত মৌলভী হোসেন আহম্মদ ওরফে হোসেন মৌলভীর ছেলে আব্দুর রহমান (৮০) ও ঘাগড়া ইউনিয়নের সুনাইকান্দা গ্রামের মৃত আইয়ুব আলীর ছেলে আহাম্মদ আলীকে (৭৮) যার যার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে স্থানীয় পুলিশ। ১৩ আগস্ট তাদেরকে হাজির করা হলে কারাগারে পাঠিয়ে দেন ট্রাইব্যুনাল।
আসামিদের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালের ২১ আগস্ট দুপুর একটায় রাজাকার বাহিনী নিয়ে বাড়হা গ্রামের আব্দুল খালেককে গুলি করে হত্যার পর কংস নদীর পানিতে মরদেহ ভাসিয়ে দেওয়ার অভিযোগে মামলা রয়েছে। শহীদ আব্দুল খালেকের ছোট ভাই মুক্তিযোদ্ধা আঃ কাদির বাদী হয়ে ২০১৩ সালে চার রাজাকারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলেও পরে তদন্তে আরও তিনজনের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে মোট আসামি হন সাতজন।
গত বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে ওই সাতজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে তদন্ত করছেন তদন্ত কর্মকর্তা শাহজাহান কবির।
বাদী মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদির মামলায় অভিযোগ করেছেন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি এবং রাজারবাগ পুলিশ লাইনে কর্মরত তার বড় ভাই আব্দুল হেকিম ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে অবস্থান করছিলেন। রাজাকাররা এ খবর জানতে পেরে তাদের বাড়িতে গিয়ে তার বড় ভাই আব্দুল খালেককে পিঠমোড়া করে বেঁধে মুক্তিযোদ্ধা ভাইদের খোঁজ খবর জানতে চান। ভাইদের কোনো খোঁজ না দেওয়ায় তখন রাজাকার বাহিনী ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের ঘরে লুটপাট করে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। পরে আগ্নেয়াস্ত্রের মুখে ভাই খালেককে ধরে নিয়ে গিয়ে জারিয়া রাজাকার ক্যাম্পে দুই দিন আটক রেখে অমানুষিক নির্যাতন চালায়। পরদিন ২১ আগস্ট তাকে জারিয়া কংশ নদীর পাড়ে গুলি করে হত্যা করে নদীর পানিতে মরদেহ ভাসিয়ে দেন রাজাকাররা।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৫
এমএইচপি/এএসআর