ঢাকা: একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেফতারকৃত শরীয়তপুরের সোলায়মান মোল্লা ওরফে সলেমান মৌলভী ও পলাতক মৌলভী ইদ্রিস আলী সরদারের বিরুদ্ধে আগামী ১ নভেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) এ মামলার তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করে প্রসিকিউটর ঋষিকেশ সাহা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে ৪৫ দিনের সময়ের আবেদন জানান।
এ সময় আসামি সলেমান মৌলভীর পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আব্দুশ শুকুর খান ও গাজী এমএইচ তামিম উপস্থিত ছিলেন।
গত ১৪ জুন সলেমান-ইদ্রিসের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। ওইদিনই রাতে শরীয়তপুর সদর উপজেলার আংগারিয়া ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে সোলায়মান মোল্লা ওরফে সলেমান মৌলভীকে(৮৫) গ্রেফতার করা হলেও ইদ্রিস আলী সরদার পলাতক।
গত ২৮ জুলাই দুই আসামির বিরুদ্ধে আরও এক দফা তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করেন প্রসিকিউটর ঋষিকেশ সাহা।
ট্রাইব্যুনালের অনুমতি নিয়ে ধানমণ্ডিতে তদন্ত সংস্থার কার্যালয় সেফহোমে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে সলেমান মৌলভীকে।
২০১০ সালে শরীয়তপুরের যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ তালুকদারের দায়ের করা যুদ্ধাপরাধ মামলার প্রধান আসামি সলেমান মৌলভী।
রাজাকার সলেমান ও ইদ্রিস আলী সরদারসহ আরও সাতজন রাজাকারের (এদের অনেকেই মারা গেছেন) বিরুদ্ধে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ২২ থেকে ২৫ মে পর্যন্ত তাদের নেতৃত্বে পাকিস্তানি সেনাদের নিয়ে শরীয়তপুর সদর উপজেলার আংগারিয়া, কাশাভোগ, মানোহর বাজার, মধ্যপাড়া, ধানুকা, রুদ্রকরসহ হিন্দু প্রধান এলাকাগুলোতে ব্যাপক অগ্নিসংযোগ ও হামলা চালায় রাজাকাররা। ওইসব গ্রামের নয়জনকে হত্যায় সহায়তা করেন আসামিরা। তারা শহীদদের অবস্থান দেখিয়ে দেন, আর পাকিস্তানি সেনা সদস্যরা ব্রাশফায়ার করে হত্যা করে। একইদিন তারা তিন শতাধিক বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও ধর্ষণ চালান।
আরও অভিযোগ রয়েছে, একাত্তরে তারা মাদারীপুরের এআর হাওলাদার জুট মিলে রাজাকার হিসেবে অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ নেন। তাদের সহায়তায় পাকিস্তানি সেনারা এলাকার কয়েকশ’ নারী-পুরুষকে গুলি করে হত্যা করে। নারীদের হত্যার আগে ক্যাম্পে নিয়ে পৈশাচিক নির্যাতন চালায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৫
এমএইচপি/এএসআর