ঢাকা, শনিবার, ২৫ মাঘ ১৪৩১, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

যে হাতে লোহাও বশ মানে!

ফটো: শাকিল আহমেদ, স্টাফ ফটো করেসপন্ডেন্ট, স্টোরি: হাসিবুর রহমান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫২ ঘণ্টা, অক্টোবর ৪, ২০১৫
যে হাতে লোহাও বশ মানে! ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: বাংলার একটি প্রাচীন পেশা কামার (সংস্কৃত কর্মকার)। যাদের কারবার লোহা নিয়ে।

কামারদের কারখানা ক্ষুদ্রশিল্পের আওতায়। তাদের কর্মস্থলকে বলা হয় কামারশালা। এখানে হাপর দিয়ে কয়লার আগুনকে উস্কে তাতে লোহা গরম করে পিটিয়ে-পিটিয়ে বিভিন্ন আকারের পাত্র, লোহার জিনিসপত্র বানানো হয়।

এই যেমন, দা-বটি থেকে শুরু করে হরেক কিছুই তাদের হাতের ছোঁয়ায় তৈরি। হয়ে ওঠে পরিণতও। আগুনে পুড়িয়ে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ তৈরিতে রাজধানীর মাতুয়াইলের দশ থেকে পনেরটি ঘর নিয়ে গড়ে উঠেছে কামারপাড়া। এ এলাকায় দেখা যায় কামারদের কর্মচঞ্চল নিপুণ হাতে তৈরি হচ্ছে লোহার নাটবল্টু সঙ্গে আরও কত কী।

এখানকার কামারপট্টিতে লোহার নাটবল্টু তৈরিতে ব্যস্ত দুই কামার আবুল হোসেন ও কীত্তন বিশ্বাস। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা এমনকি রাত পর্যন্ত লোহা পুড়িয়ে-পিটিয়ে তারা তৈরি করেন দুইশ’ নাটবল্টু। এ কামাররা দিনান্তে পান চার থেকে পাঁচশ’ টাকা। কোনো দিন তাও নয়। উৎপাদন কম হলে সেদিন রোজগারও কম। এর মধ্যেই চালিয়ে নিতে হয় সংসার। এটাই তাদের জীবন।

কামারদের তৈরির মধ্যে রয়েছে- দা, কোদাল, কুড়াল, শাবল, বটি, পেরেক, ছুরি, চিমটি, হাতা ইত্যাদি। কৃষিকাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির মধ্যে আছে- লাঙলের ফলা, কাস্তে, নিড়ানি, বেদে কাটি ও খুন্তি।

প্রতিবছর কোরবানি ঈদের মাসটি কামারদের ব্যবসার মৌসুম। তবে একটা সময় ছিল যখন সারা বছরই ব্যবসা ছিল জমজমাট। আধুনিক প্রযুক্তি আর শ্রম বঞ্চনায় দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে বাংলার ঐতিহ্যবাহী এ পেশা।

লোহায়-লোহায় জোড়া লাগানোর যন্ত্রাংশ প্রস্তুতকারী এ কামারদের স্বপ্ন জোড়া লাগে না এতোটুকু! তবুও থেমে নেই এ শিল্পের মানুষগুলো। কারণ তাদের হাতেই যে লোহাও বশ মানে!

বাংলাদেশ সময়: ০০৫২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৪, ২০১৫
এইচআর/আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।