সিলেট: ফুটপাত জুড়ে রকমারি পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন হকাররা। পোশাক-পরিচ্ছদ থেকে শুরু করে করে সবজি-মাছ সবকিছুই মিলছে।
এ যেনো অস্থায়ী বাজার। বিভাগীয় নগরী সিলেটের ব্যস্ততম এলাকাগুলোর সবক’টি সড়কের ফুটপাতের বর্তমান চিত্র এটি। সকাল থেকে মধ্যরাত অবধি ফুটপাতজুড়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন হকাররা।
বৃহস্পতিবার (০৮ অক্টোবর) সরেজমিনে দেখা গেছে, বন্দর বাজার থেকে সুরমা মার্কেট পয়েন্ট হয়ে ক্বিনব্রিজ পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশের ফুটপাতে মাছ, সবজি, কাপড় ও জুতার পসরা নিয়ে বসেছেন হকাররা। অথচ এ সড়কেরই ডানদিকে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়, বামদিকে সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও আদালত পাড়ার অবস্থান।
কোর্ট পয়েন্ট থেকে জিন্দাবাজার হয়ে আম্বরখানা পয়েন্ট পর্যন্ত ফুটপাতের একই অবস্থা। এখানে রয়েছে কাপড়, ফলমূল, তৈজসপত্র ও পাইরেটেড সিডির অস্থায়ী দোকান। কোর্ট পয়েন্ট থেকে লাল বাজার, পেপার পয়েন্ট হয়ে শিশু পার্ক পর্যন্ত ফুটপাত সবজি আর তৈজসপত্রের অস্থায়ী দোকান।
এছাড়া পোস্ট অফিসের সামনে থেকে নগর ভবনের সামনে পর্যন্ত পথচারীদের চলাচলের সুবিধার্থে নির্মিত রেলিং ঘেরা হাঁটাচলার পথে বসেছে অস্থায়ী সবজি বাজার, ফলমূল, শুটকি-মাছ, নকল চাবি তৈরি ও কাপড়সহ অসংখ্য ভ্রাম্যমাণ দোকান। এমনকি ক্বীনব্রিজের হাঁটাচলার স্থানেও রয়েছে হকার। অনেক স্থানে রাস্তার অর্ধেক পর্যন্ত দখল করে রেখেছে তারা। আবার রাস্তার পাশ জুড়ে অবৈধ পার্কিং তো রয়েছেই। ফলে সৃষ্টি হচ্ছে যানজটের।
পথচারীদের চলাচলের সুবিধার্থে এসব ফুটপাত তৈরি হলেও হকারদের অবস্থানের কারণে এগুলো ব্যবহার করতে পারেন না তারা। এমনও ফুটপাত রয়েছে যেখানে এক ইঞ্চি জায়গাও আর হাঁটার জন্য অবশিষ্ট নেই। ফলে পথচারীরা হাঁটেন মূল সড়ক দিয়ে। আর এজন্য সৃষ্টি হচ্ছে যানজটের, ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনাও। আবার ফুটপাত দিয়ে হাঁটতে চাইলে হকারদের হাতে লাঞ্ছিত হতে হয়। এ নিয়ে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এ বিষয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবীব বাংলানিউজকে বলেন, ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদের দায়িত্ব আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর। এজন্য আমাদের সহায়তা চাইলে আমরা সহায়তা করবো।
তিনি আরও বলেন, কোবরানির ঈদের আগে বিভাগীয় আইন-শৃঙ্খলা কমিটির বৈঠকে এ প্রসঙ্গটি উঠেছিলো। তখন যানজটের জন্য সিসিকের করা রিকশা লেনকে দায়ী করে তা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে এও বলা হয়েছিলো, রিকশা লেন তুলে দেওয়া হলে ফুটপাতও দখলমুক্ত করবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। আমরা ঈদের পরই রিকশা লেন তুলে দিয়েছি। এখন প্রশাসন হকার উচ্ছেদের মাধ্যমে ফুটপাত দখলমুক্ত করে পথচারী চলাচলের সুযোগ করে দিক।
একই প্রশ্নের উত্তরে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) রহমত উল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, অভিযান চলছে, অভিযান চলবে। হকার পুরোপুরি উচ্ছেদ না করা পর্যন্ত অভিযান চলবে।
অভিযান চলার পরেও কেনো ফুটপাতে হকারদের অবস্থান, এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, ফুটপাত থেকে হকারদের তাড়িয়ে দেওয়ার পর পুলিশ চলে গেলে পুনরায় তারা বসে যান। তাই এমন চিত্র দেখছেন। তবে পুনরায় যাতে ফিরে না আসতে পারে সেজন্য তাদের মালামাল জব্দ করে নিয়ে আসা হচ্ছে।
এছাড়া অভিযানের কারণে দিনের বেলায় ফুটপাতে হকার আগের থেকে অনেক কমেছে বলে দাবি তার।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০১৫
এএএন/এসএস/জেডএম