ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৩ মাঘ ১৪৩১, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

‘কৃষি ও ভূমিতে গ্রামীণ নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০১৫
‘কৃষি ও ভূমিতে গ্রামীণ নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে’ ছবি: কাশেম হারুন/ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: কৃষি এবং ভূমিতে শুধু গ্রামীণ নারীর শ্রম নয়, তাদের অধিকার ও সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে। অর্থনৈতিক অধিকার এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার ক্ষমতা না থাকলে নারীর ক্ষমতায়ন সহজ নয়।



রোববার (১১ অক্টোবর) সকাল ১১টায় রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এক সেমিনারে বক্তারা এ কথা বলেন।

‘গ্রামীণ নারী দিবস’ সামনে রেখে ‘ভূমি অধিকার, খাদ্য সার্বভৌমত্ব ও গ্রামীণ নারী’ শীর্ষক এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

যৌথভাবে এর আয়োজন করে এসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম এ্যান্ড ডেভলপমেন্ট (এএলআরডি),পরিবেশবাদী সংগঠন বেলা ও নিজেরা করি সংগঠন।

সেমিনারে বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড.সাদেকা হালিম বলেন, দেশে নীতি আর নীতিনির্ধারকের অভাব নেই তারপরও ভূমিতে নারীর অধিকার উপেক্ষিত রয়ে গেছে।

সম্প্রতি দিনাজপুরের আদিবাসী অঞ্চল ঘুরে আসার অভিজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সেখানে আদিবাসীরা সেচ সুবিধা পায় না। ব্যাংকে ঋণ নিতে গিয়ে ফিরে আসে। তাদের বলা হয় সবকিছু যেহেতু স্বামীর নামে তাহলে স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে আসতে হবে। ’

সাবেক এই তথ্য কমিশনার সাদেকা হালিম বলেন, ‘ব্যাংক ঋণ ও সেচ সুবিধা পেতে গ্রামীণ নারীদের তথ্য অধিকার আইনের সহযোগিতা নিতে হবে। ’
সেমিনারে আলোচনাপত্র উপস্থাপন করে বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘গ্রামে কৃষিতে বীজ সংগ্রহ থেকে শুরু করে সংরক্ষণ পর্যন্ত নারীর ভূমিকা রয়েছে কিন্তু নারীর খাদ্য সার্বভৌমত্ব নেই।

বিভিন্ন পরিসংখ্যান তুলে তিনি বলেন, ‘ভূমির মালিকানা ভোগ করে ৯৮ শতাংশ পুরুষ আর মাত্র ২ শতাংশ নারী। অন্যদিকে  কৃষি ঋণ পায় ৯৯ শতাংশ পুরুষ আর মাত্র এক শতাংশ নারী।

রিজওয়ানা বলেন, ‘পরিবারের সম্পদে নারীর মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ থাকলে খাদ্য নিরাপত্তা বৃদ্ধি পায়। ’

বিভিন্ন দেশের সঙ্গে তুলনা দিয়ে তিনি বলেন, ভূমিতে নারীর ভোগ দখলের অধিকারে বাংলাদেশের অবস্থান সবচেয়ে নিচে। যেখানে পাশ্ববর্তী ভারতে ১১ শতাংশ এবং শ্রীলংকায় ১৬। ’

তিনি বলেন, ভূমির মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণের ঘাটতি নারীর ক্ষমতায়ন বাধাগ্রস্ত করে এবং সে সহিসংসতার শিকার হয়। আশ্রয়হীন ও সহিংসতার শিকার হওয়া নারী নিজে ও সন্তানসহ অপুষ্টির শিকার হয়। ’

আলোচনা পত্রের সুপারিশমালায় রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘বিশেষ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রথাগত চাষ পদ্ধতি, জ্ঞান, বীজ সংরক্ষণ জীববৈচিত্র সংরক্ষণে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং এ সকল ক্ষেত্রে নারীর ভূমিকাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হবে।

সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে খুশী কবির বলেন, ‘বাণিজ্যিক কোম্পানিগুলো গ্রামের নারীদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য বিক্রি করে মুনাফা লাভ করে কিন্তু নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে কোন কাজ করে না। ’

সেমিনারে আলোচনায় আরও অংশ নেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জ্যোতিষী চাকমা, এএলআরডি এর নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, উপ-নির্বাহী রওশন জাহান মনি, গবেষক পাভেল পার্থ, নোয়াখালীর সুবর্ণচরের ভূমিহীন নেত্রী আমেনা বেগম, খুলনার পাইকগাছার নারী কৃষক তপতী রাণী মন্ডল, ফরিদপুর সদরের জনসমবায় দলনেত্রী হাজেরা বেগম প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা,অক্টোবর ১১, ২০১৫
‌এসএ/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।