ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৩ মাঘ ১৪৩১, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

খন্দকার মোশাররফের অর্থপাচার মামলা

দুদক আইনজীবীর ভুল তথ্য উপস্থাপন!

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০১৫
দুদক আইনজীবীর ভুল তথ্য উপস্থাপন! ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন

ঢাকা: ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের একটি অর্থপাচার মামলায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী খুরশিদ আলম খান ভুল তথ্য উপস্থাপন করেছেন।

এর আগে আইনজীবী খুরশিদ আলম ঢাকার এক নম্বর বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন খন্দকার মোশাররফ হোসেনের অর্থপাচার মামলায় একটি ‘আইনজীবী সনদপত্র’ দাখিল করেন।

ওই সনদপত্র ও আদালতে দেওয়া এক দরখাস্তে তিনি উল্লেখ করেন, আপিল বিভাগ গত ১৩ সেপ্টেম্বর মামলাটি ৩ মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করার জন্য বিচারিক আদালতকে নির্দেশ দিয়েছেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী তাহেরুল ইসলাম তৌহিদ বাংলানিউজকে জানান, ওই আইনজীবী সনদপত্র অনুযায়ী বিচারিক আদালত এ মামলায় এক সপ্তাহ কিংবা দশদিন করে সময় দিয়ে মামলার দিন ধার্য করতেন।

তিনি আরও বলেন, তিনমাসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করার আদেশের বিষয়টি সঠিক নয় জানিয়ে আমরা বরাবরই এর বিরোধিতা করতাম।

সোমবার (১২ অক্টোবর) মামলাটিতে আপিল বিভাগের আদেশের কপি আদালতে দাখিল করেন আসামিপক্ষ। সেখানে তিনমাসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তির বিষয়টি নাই উল্লেখ করে আসামিপক্ষ আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন হয়।   এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আদালতে উপস্থিত হন এবং তিনিও আদেশটি ভুল মর্মে একমত হন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী তৌহিদ জানান, তারা মৌখিকভাবে ওই আইনজীবী সনদপত্রটি প্রত্যাহারেরও আবেদন জানান। তবে এ বিষয়ে বিচারকের কোনো আদেশ তারা পাননি। মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) হয়তো এ বিষয়ে কি আদেশ হয় তা জানা যাবে।

সোমবার মামলাটির অভিযোগ (চার্জ) শুনানির জন্য দিন ধার্য থাকলেও আসামিপক্ষে সিনিয়র আইনজীবী না থাকায় সময়ের আবেদন জানানো হয়। সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারক আতাউর রহমান আগামী ১৮ অক্টোবর চার্জ শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন। চার্জ শুনানির জন্য মোশাররফ হোসেনকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।

যুক্তরাজ্যে মোট ৯ কোটি ৫৩ লাখ ৯৫ হাজার ৩৮১ টাকা পাচারের অভিযোগে গত বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি দুদকের পরিচালক নাসিম আনোয়ার বাদী হয়ে রাজধানীর রমনা মডেল থানায় এ মামলা দায়ের করেন।

গত বছরের ১২ মার্চ রাত সাড়ে দশটায় আহসান আলীর নেতৃত্বে দুদকের একটি দল খন্দকার মোশাররফকে গুলশান তার নিজ বাসা থেকে আটক করে। এ অভিযানে গুলশান থানা পুলিশ দুদককে সহযোগিতা করে।

গত বছরের ১৪ আগস্ট দুদকের পরিচালক নাসিম আনোয়ার ঢাকার সিএমএম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

অভিযোগে বলা হয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী থাকার সময় (২০০১-০৬) ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করেছেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের একটি প্রাইভেট ব্যাংকে তিনি ও তার স্ত্রী বিলকিস আক্তার হোসেনের নামে যৌথ হিসাব খোলেন। ওই হিসাবে ৮ লাখ ৪ হাজার ১শ’ ৪২.১৩ ব্রিটিশ পাউন্ড (বাংলাদেশি টাকায় ১১৮.৬৩ হারে ৯ কোটি ৫৩ লাখ ৯৫ হাজার ৩৮১ টাকা) স্থায়ী আমানত হিসেবে জমা রাখেন।

তদন্তকালে তারা যুক্তরাজ্যে লেখাপড়া ও চাকরি করেছেন দাবি করলেও কোথায় অবস্থান ও চাকরি করেছেন তা প্রমাণ করতে পারেননি। তাছাড়া মোশাররফ হোসেন ১৯৬৯-৭৫ সময়কালে ওই হিসাবনামা খোলেন দাবি করলেও তদন্তে তারও কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

‍বাংলাদেশি কোনো নাগরিক বিদেশি কোনো ব্যাংকে হিসাবনামা খুলতে হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতির প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রেও তিনি নিয়মের তোয়াক্কা করেননি বলে অভিযোগপত্রে বলা হয়।

আর এভাবেই খন্দকার মোশাররফ বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন ১৪৭ (৫) ধারা লঙ্ঘন করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০১৫
এমআই/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।