খুলনা: জামাতার বিরুদ্ধে মেয়েকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার অভিযোগ করেছেন শ্বশুর অশোক কুমার ঘোষ। এ সময় তিনি মেয়ে হত্যার উপযুক্ত বিচার দাবি করেন।
মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, যৌতুক না দেওয়া এবং নিজের বড় ভাইয়ের বউ’র সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কের কারণে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটানো হয়। কিন্তু ঘটনাটিকে ভিন্নভাবে প্রবাহিত করতে হত্যার পর মুখে বিষ ঢেলে আত্মহত্যা বলেও চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে তারা।
সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার তুলসীডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা অশোক কুমার ঘোষ লিখিত অভিযোগে জানান, প্রায় ৬ বছর আগে তার চতুর্থ মেয়ে মিতা রানী ঘোষকে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার মালতিয়া গ্রামের মৃত সন্তোষ ঘোষের ছেলে সুকর্ণ ঘোষের সঙ্গে বিয়ে দেন। কিন্তু বিয়ের কিছুদিন পর থেকে জামাই সুকর্ণ ঘোষ যৌতুক দাবি করে। মেয়ের সুখের জন্য প্রায়ই তাকে নগদ অর্থ, স্বর্ণালংকার ও আসবাবপত্র দেওয়া হয়। তারপরও বিভিন্ন সময় আরও যৌতুক দাবি করে তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়। এরই মধ্যে তাদের দাম্পত্য জীবনে অর্ঘ ঘোষ নামে একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে হলেও মেয়ের ওপর জামাই ও তার পরিবারের নির্যাতন কমবে বলে ধারণা করা হলেও তা হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে তিনি বলেন, জামাতা সুকর্ণ ঘোষ তার বড় ভাইয়ের বউ অসিমা ঘোষের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। আমার মেয়ে মিতা রানী ঘোষ তাতে বাধা দিলে ৮ অক্টোবর বেলা সাড়ে ১১টায় স্বামী সুকর্ণ ঘোষ ও তার বৌদি অসিমা ঘোষ, মাতা ঊষা ঘোষ, বড় ভাই বিকর্ণ ঘোষ ও ছোট কাকীমা সংঘবদ্ধ হয়ে মিতাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে।
পরে তার মুখে বিষ ঢেলে বিষয়টিকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। খবর পেয়ে আমার বড় মেয়ে রঞ্জিতা জামাতা সুকর্ণকে জিজ্ঞাসা করলে সে বলে তার বৌদি মেরেছে, বৌদির কাছে জিজ্ঞাসা করলে সে বলে সুকর্ণ মেরেছে- এভাবে তারা আমার মেয়ের মৃত্যু নিয়েও ছিনিমিনি খেলা শুরু করে। এমনকি আমার একমাত্র নাতি শিশু অর্ঘকেও তারা আটক করে রেখেছে। আমাদের কাছে আসতে দিচ্ছেনা। এ ঘটনায় আইনের আশ্রয় নিতে গেলে গোবিন্দ ঘোষ নামে স্থানীয় একজন প্রভাবশালী ব্যক্তিকে দিয়ে আমাদের উপর হামলা এবং কোনো প্রকার মামলা না করতে হুমকি দেওয়া হয়। এমনকি আমরা গোপনে ডুমুরিয়া থানায় গেলেও থানার সেকেন্ড অফিসার উপ-পরির্দশক (এসআই) মহসিন মামলা গ্রহণ না করে বের করে দেন।
পরবর্তীতে মৃত্যুর আলামত নষ্ট করতে দ্রুত মৃতদেহ পুড়িয়ে ফেলা হয়। পুলিশকে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজ করা হয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে মেয়ের হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচার দাবি করে বলা হয়, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তারা যে কোনো সময় আমি ও আমার পরিবারের সদস্যদের বড় ধরণের ক্ষতি করতে পারে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৫
এমআরএম/বিএস