ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২২ মাঘ ১৪৩১, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন অনেকাংশই পূরণ হয়েছে

বিশেষ সংবাদদাতা | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৫
ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন অনেকাংশই পূরণ হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০০৯ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার যে অঙ্গীকার নিয়ে আমরা পথ চলা শুরু করেছিলাম, তার অনেকাংশই আজ পূরণ করতে পেরেছি।

তিনি বলেন, প্রত্যন্ত গ্রামে যেখানে এক সময় বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়াই ছিল স্বপ্ন, সেখানকার মানুষেরা আজ ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশে-বিদেশে স্বজনদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে কথা বলছেন।



মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়ন্স অব দ্য আর্থ’ ও ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) আইসিটি টেকসই উন্নয়ন পুরস্কার সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট অ্যাওয়ার্ড পাওয়ায় এ সংবর্ধনার আয়োজন করে এফবিসিসিআই।    

এফবিসিআই অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনাকে ‘একবিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ বাঙালি’ বলে ঘোষণা করে।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পুরস্কারপ্রাপ্তি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যে দু’টি খাতে পুরস্কার পেয়েছি, আমি মনে করি এটা আমাদের দেশের মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফসল। আমরা সবাই মিলে দেশটাকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে চাই। মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটাতে চাই।

জলবায়ুর পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় তার সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আমাদের এই বিশ্ব আজ হুমকির সম্মুখীন। আমাদের এই ধরিত্রীর অতি উষ্ণায়ন এবং বর্তমান জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য মূলতঃ উন্নত দেশগুলোই দায়ী। ’

‘বাংলাদেশের মত দেশগুলোর বৈশ্বিক উষ্ণায়নে তেমন কোন ভূমিকা না থাকলেও আমরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হচ্ছি। সমুদ্রতলের উচ্চতা যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে আশঙ্কা করা হচ্ছে ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের প্রতি ৭ জন মানুষে একজন ঘড়বাড়ি হারা হবেন।

২০০৯ সাল থেকেই আমি ব্যক্তিগতভাবে জলবায়ু ইস্যুকে আমাদের উন্নয়ন এজেন্ডায় অন্তর্ভুক্ত করে উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ করি। পাশাপাশি বিভিন্ন ফোরামে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে উদ্ভুত ভয়াবহ বিরূপ প্রভাব সম্পর্কে আমি বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে আমার উদ্বেগের বিষয়টি তুলে ধরার চেষ্টা করছি। ২০১১ সালে আমরা সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে পরিবেশ এবং জীববৈচিত্র্য সংক্রান্ত ১৮ক ধারা সংযোজন করি।

জলবায়ুর পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় দেশে আমরা - ‘অভিযোজন’ এবং ‘প্রশমন’ - এই দ্বিমুখী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। অভিযোজন প্রক্রিয়ার মাধমে আমরা বিরূপ পরিস্থিতি মোকাবিলা করে টিকে থাকার উপায় উদ্ভাবনের চেষ্টা করছি। আমাদের দেশের মানুষ যুগ যুগ ধরে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করে টিকে আছে।  

পাশাপাশি আমরা এমন কিছু প্রশমন ব্যবস্থা গ্রহণ করছি যা বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধে সহায়ক হবে। ’

পরিবেশ রক্ষায় ব্যবসায়ী ও শিল্প উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার সময় পরিবেশ সংরক্ষণের বিষয়গুলো যথাযথভাবে পালন করলে সরকারের জন্য কাজটা সহজ হয়ে যায়। আমরা ইতোমধ্যেই হাজারিবাগ থেকে ট্যানারি শিল্প সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছি।

আমাদের দ্রুত সবুজ অর্থনীতির দিকে অগ্রসর হতে হবে। অর্থাৎ আমাদের এমনভাবে কলকারখানা নির্মাণ করতে হবে যেখানে ক্ষতিকারক বর্জ্য উৎপন্ন হয়ে পরিবেশ দূষণ করবে না। আমাদের জীবাষ্ম জ্বালানির পরিবর্তে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে। স্বল্প বিদ্যুৎ বা জ্বালানিতে চলতে পারে এমন ধরণের যন্ত্রপাতির দিকে ঝুঁকতে হবে। চাষাবাদে জৈব পদ্ধতির ব্যবহার বাড়াতে হবে। ’

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর হাতে সম্মাননা তুলে দেন এফবিসিসিআই’র সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ। অনুষ্ঠানে সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক রচিত অভিনন্দনপত্র পাঠ করেন অভিনেত্রী শমী কায়সার।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, এফবিসিসিআই’র প্রথম সহ-সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ এবং বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।

এছাড়াও মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, জাতীয় সংসদের সদস্য, ব্যবসায়ী নেতাসহ রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা ‌অনুষ্ঠানে উপস্থিত আছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৫/ আপডেট: ১৭৩৪ ঘণ্টা
এমজেএফ/এএসআর/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।