ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২২ মাঘ ১৪৩১, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

লুই আই কানের মূল নকশা আনার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৫
লুই আই কানের মূল নকশা আনার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে সংসদ ভবনের স্থপতি লুই আই কানের মূল নকশা কিনে আনার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ‘ঢাকার শেরেবাংলা নগরে জাতীয় সচিবালয় নির্মাণ’ প্রকল্পটির অনুমোদন দেওয়া হয়নি।

এ সময় লুই আই কানের মূল নকশা ঠিক রেখে আবারও পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। মঙ্গলবার সভায় অংশ নেওয়া একটি দায়িত্বশীল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই সূত্রে জানা গেছে একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘লুই আই কানের মূল নকশা নিয়ে আসেন। সেটা দেখে মিলিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করবো। শেরে বাংলা নগরে সচিবালয় নির্মাণে ১৯৭৪ সালে লুই আইকান প্রথম প্ল্যান করেছিলেন। তখন ২৭টি মন্ত্রণালয়ের জন্য এই প্ল্যান করা হয়েছিলো। ’
 
সচিবালয় নির্মাণ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘লুই আই কানের নকশায় সব কিছু আছে। কোথায় মসজিদ,মাদ্রাসা ও গার্ডেন হবে। ওনার নকশায় ছিল চন্দ্রিমা উদ্যানের বড় রাস্তার সঙ্গে সংসদ ভবনের লিংক। সামনে লেক তার পাশে সংসদ ভবন। ’

তিনি আরও বলেন, ‘পেনসিলভানিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে চার লাখ ডলার দিয়ে মূল নকশা কিনতে হবে। লুই আই কানের ছেলে সংসদ ভবন এলাকার নকশা নিয়ে গবেষণা করছেন সেই জন্য প্রতি বছর তিনি বাংলাদেশে আসেন। ’

উল্লেখ্য, ১৯৭৪ সালে ৪২ একর জায়গায় ১০টি ব্লকে চারটি নয়তলা ভবনসহ অফিস, ব্যাংক, অডিটোরিয়াম, মসজিদ, কার পার্কিং ইত্যাদি সম্বলিত জাতীয় সচিবালয় নির্মাণের চুক্তি হয়েছিলো। বাংলাদেশ সরকার ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি ডেভিড উইজডম অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটের মধ্যে এ চুক্তি হয়। কিন্তু পরবর্তীতে এ কাজের কোনো অগ্রগতি হয়নি।

বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ভবনের স্থপতি লুই আই কানের নকশা স্থাপত্য অধিদফতর সংশোধন করেছে। কারণ, ইতোমধ্যে পূর্বের জমির পরিমাণ ১০ একর কমে গেছে। ওই জমিতে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র (বিআইসিসি) নির্মাণ করা হয়েছে।

তবে লুই আই কানের নকশা উপর বিআইসিসি নির্মাণ হওয়ার ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র আবহাওয়া অধিদফতরের স্থানে নির্মিত হয়েছে।

এছাড়া বৈঠকে রাজধানীর বেইলি রোড, মিন্টো রোড ও হেয়ার রোডে উঁচু বিল্ডিং না করার নির্দেশ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই সূত্রে জানা গেছে একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসব এলাকায় যেন হাইরাইজ বিল্ডিং না হয় সেই লক্ষ্যে একটি মিনি মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করতে হবে। এসব এলাকার সৌন্দর্য বজায় রেখে বিল্ডিং তৈরি করতে হবে।

সেই লক্ষ্যে  ‘ঢাকার বেইলি রোডে মাননীয় মন্ত্রীবর্গের জন্য আবাসন ভবন নির্মাণ’ প্রকল্পটি সংশোধিত আকারে একনেক সভায় অনুমোদন দেয়া হয়। জুলাই ২০১৫ থেকে জুন ২০১৮ সাল নাগাদ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে গণপূর্ত অধিদফতর। সেখানে ১৫ তলার পরিবর্তে ৬ তলা ভবন নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

একনেক সভায় ২ হাজার ৬শ‘ ৫৮ কোটি টাকা ব্যয়ে মোট ৭টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। মোট ব্যয়ের মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ২ হাজার ১শ‘ ৫৩ কোটি টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য ৫০৫ কোটি টাকা। অনুমোদিত ৭টি প্রকল্পই নতুন।

প্রকল্পগুলো হলো, ‘গুচ্ছগ্রাম-২য় পর্যায়ের প্রকল্প, ঢাকার বেইলি রোডে মাননীয় মন্ত্রীবর্গের জন্য আবাসন ভবন নির্মাণ, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সঙ্গে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের মধ্যে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপন, এস্টাবলিসমেন্ট অব ৯৯ কম্পোজিট ব্রিগেড ফর সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি অব পদ্মা মাল্টিপারপাস ব্রিজ’ প্রকল্প, ‘খুলনা(রূপসী)-শ্রীফলতলা-তেরখাদা সড়ক উন্নয়ন’ এবং ‘নাজিরহাট - মাইজভান্ডার সড়ক উন্নয়ন’।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৫
এমআইএস/আরআই

** মূল নকশার অভাবে আটকে গেল সচিবালয় স্থানান্তর প্রকল্প

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।