ঢাকা: কেউ হতে চায় ডাক্তার, কেউবা ইঞ্জিনিয়ার। তবে সুশীল নন্দী ডাক্তার কিংবা ইঞ্জিনিয়ার হতে চাননি।
সুশীল নন্দী থাকেন শাঁখারি বাজারে। বয়স ৫০। ৩৪ বছর ধরেই নির্মাণ করে চলেছেন প্রতিমা। ১৯৭২ সাল থেকে শাঁখারি বাজারে এ কাজ করেন তিনি। দুর্গাপূজা আসলে ঘুম হারাম হয়ে যায় তার। কাজ করতে হয় রাত জেগে।
একদিকে মহাজনকে কাজ বুঝিয়ে দেয়ার তাড়া, অন্যদিকে নিজের রোজগারের তাগিদ। কারণ এটাই তার রোজগারের মৌসুম-সময়। প্রতিমা তৈরির আয় দিয়েই সারা বছর সংসার চলে সুশীলের।
বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, শাঁখারি বাজার এলাকায় মোট ১৭টি পূজামণ্ডপ (রাস্তায় ০৯টি, আশপাশের গলিতে ৮টি) হয়। প্রতিবছর ৭/৮ টা মণ্ডপের প্রতিমা তৈরি করি আমি। এবারে ৪টা মণ্ডপের প্রতিমা তৈরির কাজ পেয়েছি। দিন-রাত এগুলোরই কাজ করছি।
![](files/October2015/October13/Potema_______2_631329227.jpg)
তিনি বলেন, একটা মণ্ডপে মোট ৮টা প্রতিমার একটা সেট লাগে। এগুলো হলো দুর্গা, লক্ষী, কার্তিক, গণেশ, সরস্বতী, অসুর, সিংহ ও মহিষ।
এঁটেল ও বেলে মাটি দিয়ে তৈরি করেন এসব প্রতিমা, জানালেন মাটির কারিগর সুশীল নন্দী।
‘এত কঠোর পরিশ্রম করেন, এতে আয় কেমন?’ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রতি প্রতিমার সেটে ৩০/৪০ হাজার টাকা বিনিময় পাই। খরচও অনেক। খরচ বাদে এক মৌসুমে লাখ খানেক টাকার মত রোজগার হয়। আর এ দিয়েই সারা বছর চালাই। লাখ খানেক টাকা ইনকাম না করলে সারা বছর চলবো ক্যামনে?‘
দৈত্য, বিঘ্ন, রোগ, পাপ ও ভয়-শত্রুর হাত থেকে রক্ষা ও অসুরকে বধ করেন মা দুর্গা। আর মাটিকে বশ করে এ ‘দুর্গা’ (প্রতিমা) তৈরি করেন সুশীল নন্দী।
![](files/October2015/October13/Potema_______19_394761173.jpg)
স্বাধীনতা উত্তর অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে প্রতিমা তৈরি করতে করতেই জীবন সায়াহ্নে চলে এসেছেন তিনি। তবে এতে নিজের মধ্যে কোনো প্রভাব নেই সুশীলের। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মানুষ যার পূজা করে, আমি সেটা তৈরির কারিগর। এটা আহামরি কিছু না। রোজগারের মাধ্যম হিসেবেও তো এটা আমার কাছে পূজনীয়। ধর্মীয় দিক থেকে তো বটেই।
শারদীয় দূর্গা পূজা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচে বড় ধর্মীয় উৎসব। এ বছরের ১৯ শে অক্টোবর, সোমবার শারদীয় দুর্গাপূজার ষষ্ঠী এবং ২৩শে অক্টোবর, শুক্রবার দশমী।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৫
এসইউজে/আরআই