ঝালকাঠি: ঝালকাঠির রাজাপুরের ইন্দ্রপাশা, উত্তর বাগড়ি, পিংড়ি এবং রাজাপুরের সীমান্তবর্তী সদর উপজেলার দক্ষিণ কিস্তাকাঠি ও সাচিলাপুর গ্রামের হাজার হাজার মানুষের মধ্যে সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে।
গত দুই সপ্তাহে এসব গ্রামে সাপের কামড়ে স্কুলছাত্রীসহ তিন জনের মৃত্যু হয়েছে।
প্রতিদিন কাউকে না কাউকে সাপ ছোবল দিচ্ছে। এতে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন অনেকেই। স্থানীয়ভাবে বালি পড়া ও গর্ত খুঁচে সাপ বের করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হচ্ছে গ্রামবাসী।
এদিকে, রাজাপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে সাপে কাটা রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা না থাকায় বিপাকে পড়েছে রোগীরা। চিকিৎসা না থাকায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে, চিকিৎসকরা বলছেন, স্থানীয়ভাবে ঝাঁড়-ফুঁক দিয়ে সাপের বিষ নামানোর চেষ্টায় রোগীর মৃত্যু হচ্ছে। গত দুই সপ্তাহে কমপক্ষে ১০/১৫ জনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয়রা জানায়, গত ২ অক্টোবর বিকেলে ঝালকাঠির রাজাপুরের ইন্দ্রপাশা গ্রামে রাজমিস্ত্রী লাকসু হোসেনের মেয়ে ও রাজাপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী মাহমুদা আক্তার (১৪) সাপের ছোবলে মারা যায়। সদর উপজেলার দক্ষিণ কিস্তাকাঠি গ্রামের রুবেল হোসেন ও শাচিলাপুর গ্রামের রিক্সা চালক আলতাফ হোসেনও সাপের ছোবলে মারা যান।
শাচিলাপুর গ্রামে সাপের ছোবলে আক্রান্ত রোগী পিয়ারা বেগম (৪০) বাংলানিউজকে জানান, তিনি ভাত রান্নার জন্য চুলায় জ্বালানি কাঠ দেওয়ার সময় কাঠের মধ্যে থাকা সাপ তাকে ছোবল দেয়। এখন সবাই সাপের আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।
রাজাপুরের মঠবাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর ফকির বাংলানিউজকে জানান, ইন্দ্রপাশায় সাপের কামড়ে এক ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া, উত্তর বাগড়ি গ্রামের চার জনকে ছোবল দেয়, তারা সুস্থ আছে। বর্তমানে এ এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
ঝালকাঠির ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান মনির হোসেন জানান, ঝালকাঠিতে সাপে কাটা রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা হওয়া দরকার। সাপ নিধনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিও জানান তিনি।
রাজাপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রের টিএইচও মাহবুবুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, উত্তর বাগড়ি, পিংড়ি ও ইন্দ্রপাশা গ্রামের লোকজন প্রতিদিনই সাপের ছোবলে আক্রান্ত হচ্ছে। মঙ্গলবারও উত্তর বাগড়ির বারেক ও পিংড়ির নাসির নামে দুই জনকে সাপ ছোবল দেয়। তাদের বরিশালে পাঠানো হয়েছে।
ঝালকাঠির সিভিল সার্জন ডা. আবদুর রহিম বাংলানিউজকে বলেন, সাপে কাটার ভ্যাকসিন সদর হাসপাতালে আছে। কিন্তু মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার না থাকায় সাপে কাটা রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই সাপে কাটা রোগী এলেই বরিশালে পাঠানো হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ২২১২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৫
এমজেড