ঢাকা, বুধবার, ২২ মাঘ ১৪৩১, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

আমন ক্ষেতে কারেন্ট পোকায় বিবর্ণ কৃষকের স্বপ্ন

নুর আলম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৫
আমন ক্ষেতে কারেন্ট পোকায় বিবর্ণ কৃষকের স্বপ্ন ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

নীলফামারী: নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার ৯ ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রামের আমনের ক্ষেতে এখন কারেন্ট পোকার (বাদামী গাছ ফড়িং) প্রার্দুভাব।

ফসল তোলার আগে এ সমস্যা থেকে উত্তরণে বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক প্রয়োগ করেও কোনো ফল মিলছে না।

বরং কারেন্ট পোকার যন্ত্রণায় দিন-দিন বিবর্ণ হতে শুরু করেছে এ অঞ্চলের কৃষকের সোনালী আমনের বাম্পার ফলনের স্বপ্ন।

পোকার আক্রমণে ফসলহানির আশঙ্কায় কৃষকরা এখন দিশেহারা। তবে কৃষি বিভাগের দাবি, কোথাও কারেন্ট পোকার প্রার্দুভাব নেই। বরং এটি বিএলবি ধরনের ফসলের একটি রোগ। ধান ক্ষেতে পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ স্প্রে করলেই এ সমস্যা দূর হবে।

স্থানীয় কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি আমন মৌসুমে কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ১৫ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে আমনের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু আবাদ হয়েছে ১৪ হাজার ৯৮০ হেক্টর জমিতে।
 
শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মাঠে-মাঠে আমনের ক্ষেতে সবুজের সমারোহের মাঝে  বিবর্ণ হয়ে যাওয়া ধানের পাতা। এ নিয়ে কৃষকদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিলেও মাঠপর্যায়ে নেই কোনো উপ সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা বা উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তার (ব্লক সুপারভাইজার) তৎপরতা।

ফলে এ বিপদকালে করণীয় সম্পর্কে সঠিক কোনো নির্দেশনা পাচ্ছেন না চাষিরা।   চাষিদের অভিযোগ, বাদামী গাছ ফড়িং (বিপিএইচ) বা কারেন্ট পোকা ছড়িয়ে পড়ছে ক্ষেত থেকে ক্ষেতে। ধানের মুকুল বের হওয়ার পর থেকে এ পোকার আক্রমণ বেড়ে গেছে। বেশিরভাগ ক্ষেতেই পোকার ডিম থেকে বাচ্চা ফুটেছে। ফলে বাচ্চা ও পূর্ণবয়ষ্ক কারেন্ট পোকা প্রতিনিয়ত  ধান গাছের গোড়া থেকে রস আহরণ করছে। ফলে দ্রুত গাছ ও পাতা শুকিয়ে বিবর্ণ হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে। ধান গাছ প্রথমে হলুদ ও পরে  শুকিয়ে যেতে শুরু করেছে।

উপজেলার সদর ইউনিয়নের গদা গ্রামের চাষি শেখ সাদী রহমত উল্লাহ এবার মাত্র ১৫ শতক জমিতে আমনের আবাদ করেছিলেন। তার পুরো ক্ষেত কারেন্ট পোকা বিনষ্ট করে দিয়েছে।

তিনি মাথায় হাত দিয়ে বলেন, এই ব্লকের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তার নাম লতিফ মিয়া বলে শুনেছি। কিন্তু তার দেখা এখনো পাইনি। বাজার থেকে যে কীটনাশক পাওয়া যায় তাতেও কোনো সুফল আসেনি বলে জানান তিনি।

মধ্যরাজিব গ্রামের কৃষক তারাজুল ইসলাম জানান, তার ১০ বিঘা জমির মধ্যে অর্ধেক জমির ধান পোকায় আক্রান্ত। এ পর্যন্ত তিনবার পোকা তাড়াতে স্প্রে করেছেন। কোনো কাজ হয়নি। এখন চতুর্থবার স্প্রে করছেন।

উপজেলার বাহাগিলি ইউনিয়নের উত্তর দুরাকুটি পশ্চিমপাড়া গ্রামের কৃষক আলম হোসেন বলেন, তার ৪০ শতক জমির ধান  কারেন্ট পোকার আক্রমণে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

একই অভিযোগ এসব ‍এলাকার কয়েকশ কৃষকের। এ সময়ে তারা কি করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না। আবার সংশ্লিষ্টদের সহায়তাও পাচ্ছেন না।

এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এনামুল হক বাংলানিউজকে বলেন, কারেন্ট পোকার আক্রমণে ফসল নষ্টের ঘটনা ঘটেনি। বিএলবি নামে একটি রোগ এসেছে, তাও বিচ্ছিন্নভাবে ব্রি- ১১ জাতের ধানে। এই রোগ সারাতে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এবং প্রচারপত্র বিতরণ করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ০০৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৫
এসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।