কুষ্টিয়া: ‘অনুরাগ নইলে কি সাধন হয়’ স্লোগানে কুষ্টিয়ায় পাঁচ দিনব্যাপী লালন মেলা শুরু হয়েছে।
বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ’র ১২৫তম তিরোধান দিবস উপলক্ষ্যে শুক্রবার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় কুমারখালীর ছেঁউড়িয়ায় এ লালন মেলার উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া সদর আসনের সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফ।
অবশ্য আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগেই সাধু, ভক্তদের সমাগমে লালন আখড়াবাড়ির পুরো এলাকা পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। উৎসব উপলক্ষে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে জেলা পুলিশ।
জেলা প্রশাসক ও লালন একাডেমির সভাপতি সৈয়দ বেলাল হোসেন’র সভাপতিত্বে লালন একাডেমির মূল মঞ্চে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন- জেলা পুলিশ সুপার প্রলয় চিসিম, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী।
স্বাগত বক্তব্য দেন- লালন একাডেমির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সেলিম হক। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন- কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাহেলা আক্তার। অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক হিসেবে লালনের দর্শন নিয়ে আলোচনা করেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক প্রফেসর ড. সরোয়ার মুর্শেদ রতন ও লালন মাজারের প্রধান খাদেম মহম্মদ আলী ফকির।
আলোচনা শেষে মূল মঞ্চে পরিবেশিত হয় লালন সঙ্গীত। লালন একাডেমির শিল্পীরা ‘যেখানে সাঁই’র বারামখানা’, ‘বাড়ির পাশে আরশীনগর’, ‘সময় গেলে সাধন হবে না’, ‘রাত পোহালে বলে পাখি দে রে খাই’, ‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখি’, ‘তিন পাগলে হলো মেলা’, ‘মিলন হবে কতদিনে’সহ লালনের আধ্যাত্মিক চেতনার নানা গান পরিবেশন করেন।
মেলাকে ঘিরে ছেঁউড়িয়া লালন আখড়ায় বিরাজ করছে অন্যরকম এক উৎসবমুখর পরিবেশ। আখড়া ঘুরে দেখা গেছে, লালনের মাজারের প্রবেশ পথ মিলবাজার রেলগেট থেকে দবির মোল্লা রেলগেট পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তায় হাজারো মানুষের ভিড়। সাদা আলখাল্লা পরিহিত বাউল ফকির আর আগত লালন ভক্তদের পদভারে আখড়া বাড়ি এলাকা মুখরিত।
মেলা উপলক্ষে আখড়ায় আপন ঘরানায় দল বেঁধে বসে তত্ত্ব আলোচনায় ব্যস্ত বাউল সাধকরা। স্মরণ করছেন বিশ্বমানবতা ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার এ পুরোধা পুরুষকে।
আগামী ২০ অক্টোবর এ আয়োজনের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তির পরও বাউলদের এই প্রাণর সম্মিলন চলবে আরও কয়েকদিন।
বাংলাদেশ সময়: ০৩২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৫
আরএম