ঢাকা, বুধবার, ২২ মাঘ ১৪৩১, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

দলীয়ভাবে স্থানীয় নির্বাচন

এমপিদের ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ চান ইসি কর্মকর্তারা

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৫
এমপিদের ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ চান ইসি কর্মকর্তারা

ঢাকা: জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো স্থানীয় নির্বাচনেও সংসদ সদস্যদের (এমপি) ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ চান নির্বাচন কমিশন (ইসি) কর্মকর্তারা। একইসঙ্গে উপজেলা চেয়ারম্যান, জেলা প্রশাসকদের আচরণের বিষয়েও কড়াকড়ি আরোপের পক্ষে তারা।


 
কর্মকর্তাদের মতে, একটি উপজেলার ভেতরেই পৌরসভা এবং ইউনিয়ন পরিষদ বিদ্যমান। আর উপজেলা চেয়ারম্যানের প্রভাব পুরো উপজেলাতেই থাকে। তাই দলীয়ভাবে নির্বাচন হলে পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে তাদের আচরণ, বিধি দ্বারা সীমাবদ্ধ করে দেওয়া প্রয়োজন। অন্যথায় নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।
 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসির একাধিক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, উপজেলায় পরিষদ ব্যাপক বরাদ্দ পায়। যার উপদেষ্টা হয় স্থানীয় এমপি। এছাড়া স্থানীয় এমপি চারটি স্কুলের গর্ভনর বডির দায়িত্বে থাকেন। অন্যগুলোতে নিজের মনোনীত ব্যক্তিদের দায়িত্ব দেন। অন্যদিকে স্থানীয় প্রশাসনের ওপরও তার প্রভাব ব্যাপক। এসব কারণে স্থানীয় এমপি এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ব্যাপক ক্ষমতায়িত হয়েছেন। যে বিবেচনায় পদগুলো অতি গুরুত্বপূর্ণ। এদিকে জেলা পরিষদের প্রশাসক সরকার নিয়োজিত এবং বেতনভুক্ত। তাই এ পদটি এমনিতেই সরকারের সুবিধাভোগী। তার স্থানীয় রাজনীতিতে ব্যাপক প্রভাব রয়েছে।
 
ইসির উপ-সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, যেহেতু দলীয় নির্বাচন তাই সংসদ নির্বাচনের মতো করেই প্রার্থী, প্রার্থীর পক্ষে অন্য কোনো বা সরকারি সুবিধাভোগী গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির আচরণ, বিধি দ্বারা সীমাবদ্ধ করে দিতে হবে।
 
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালার (২) ১১ উপবিধি অনুযায়ী- সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের স্পিকার, সরকারের মন্ত্রী,  চিফ হুইপ, ডেপুটি স্পিকার, বিরোধী দলীয় নেতা, বিরোধীদলীয় উপনেতা, প্রতিমন্ত্রী, হুইপ, উপমন্ত্রী ও তাদের সমমর্যাদাসম্পন্ন কোন ব্যক্তি, সংসদ-সদস্য এবং  সিটি কর্পোরেশনের মেয়র।
 
সংসদ নির্বাচনের আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী, ওইসব পদধারী ব্যক্তি নির্বাচনী প্রচারণায় কারো ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারেন না। এছাড়া নির্বাচনপূর্ব সময়ে তারা নির্বাচনী এলাকায় কোনো সফর বা নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারেন না। তবে ভোটার হলে কেবল সংশ্লিষ্ট এলাকায় ভোটদানের জন্য যেতে পারেন। এছাড়া সুবিধাভোগী ব্যক্তি সরকারি কর্মসূচির সঙ্গে নির্বাচনী কর্মকাণ্ডকে যোগ করতেও পারেন না। তবে পদে থেকে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কারণে সংসদ সদস্যদের ক্ষেত্রে নিজ নির্বাচনী এলাকায় ওসব বিধান প্রযোজ্য নয়।
 
কর্মকর্তারা বলছেন, সংসদ নির্বাচনের ক্ষেত্রে সরকারি সুবিধাভোগী ব্যক্তির যে তালিকা ছিলো, সেটাতে আরো কিছু পদ অন্তর্ভুক্ত করতেই হবে। বর্তমানে স্থানীয় নির্বাচনের আচরণ বিধিমালাতে ওই বিধানগুলো আনার চিন্তা-ভাবনাও করছে কমিশন। আর এটা হলে এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান, জেলা পরিষদের প্রশাসকরা সরকারের সুবিধাভোগী হিসেবে ইসির নিয়ন্ত্রণে থাকবেন।
 
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার আব্দুল মোবারক বাংলানিউজকে বলেন, আমরা আইন হওয়ার আগে কিছুই বলতে পারছি না। তবে জাতীয় সংসদের আলোকেই স্থানীয় নির্বাচনের বিধিমালার খসড়া তৈরি করে রাখছি।
 
বাংলাদেশ সময়: ১০২৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৫
ইইউডি/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।