ঢাকা: হর্ন দিয়েই চলেছে বিহঙ্গ পরিবহন, আর রাস্তার ঠিক মাঝ বরাবর থেমে যাত্রী তুলছে গ্রামীণ পরিবহন। তার সামনে ট্রাস্ট পরিবহন আর বিহঙ্গের পেছনে আকিক পরিবহন এবং একই সঙ্গে রাস্তা জুড়ে আছে জাবালে নূর ও জাবালে তুর পরিবহনের বাস।
এটি টার্মিনাল বা বাসস্ট্যান্ড নয়, রাজধানীর নতুন বাজার মোড়, বলতে গেলে গুলশানের প্রবেশ পথের চিত্র। রীতিমত একটি বাসট্যান্ড কাম টার্মিনাল বানিয়ে চলেছেন চালক শ্রমিকরা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, এখানে আকিকের ২৬টি, জাবালে নূরের ৪০টি, জাবালে তুর এর ১২ টি, বিহঙ্গের ৪৩টি, ট্রাস্ট পরিবহনের ২০টি এবং গ্রামীণ পরিবহনের আরও প্রায় অর্ধশত গাড়ি অবৈধভাবে সড়ক জুড়ে থাকে। এখানে রাস্তার মধ্যেই যাত্রী উঠানামা করা হয়। আবার এখান থেকে বাস ছেড়ে যায় বিভিন্ন গন্তব্যে। যদিও এখানে কোন বৈধ স্ট্যান্ড নেই।
সকাল-সন্ধ্যা এই পরিবহনগুলোর জটলায় বিপাকে পড়েন সড়কটির যাত্রীরা। কখনও কখনও দীর্ঘ যানজট লেগে যায় শুধু এই যত্রতত্র পার্কিংয়ের কারণে।
এর মধ্যে জাবালে নূরের রুট পারমিট অনুযায়ী, রামপুরা পর্যন্ত যাওয়ার কথা- কিন্তু তা না মেনে বাঁশতলা ঘুরে আবার নতুন বাজার মোড়ে এসে যানজট সৃষ্টির কারণ হচ্ছে।
দিনের বিভিন্ন সময়ে সোম ও মঙ্গলবার নতুন বাজার মোড়ে বেশকিছুক্ষণ অবস্থান করে দেখা গেছে, এখানে যানজটের অন্যতম কারণ এই বাসগুলোর যত্রতত্র অবস্থান। আর এর নিয়ন্ত্রণে নেই কোন ট্রাফিক পুলিশ।
সড়কের অপরপ্রান্তে জে ব্লক থেকে বের হওয়া মানুষদের রং সাইডে আসার জন্য নারী শিশু নির্বিশেষে মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে মামলা দিতে ব্যস্ত দেখা গেলো ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট পলাশ চন্দ্রকে ।
কিন্তু সড়কে অবৈধভাবে থেমে যাত্রী উঠানামা এবং দীর্ঘক্ষণ জটলা লাগিয়ে থাকা বাসের বিরুদ্ধে নেই কোন অভিযান।
ট্রাফিক বক্সে থাকা একজন পুলিশ পরিদর্শক এই প্রশ্নের উত্তরে জানান, অভিযান হয়। কিন্তু তাতে কি। পরিবহনগুলোর এত গাড়ি যে, একটি পর আরেকটি নিয়ম ভাঙ্গছে।
তবে যতটুকু পারছেন সক্রিয় থেকে দায়িত্ব পালন করছে ট্রাফিক পুলিশ- ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক মাহবুব ইসলাম খান এমনটি জানালেও সরেজমিন চিত্র তার কথার সঙ্গে মেলেনি।
মঙ্গলবার সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত বাসের জটলার কাছাকাছি কোন ট্রাফিক পুলিশ দেখা যায়নি। মোড়ে যার দায়িত্ব পালনের কথা সেই ট্রাফিক পুলিশ সদস্য পাশের গুলশান রুটের পুলিশ বক্সের চেয়ারেই বসে রয়েছেন।
কথা হয় এসব পরিবহনের সুপারভাইজরদের সঙ্গে।
বিহঙ্গ পরিবহনের সুপারভাইজর ময়নুল ইসলাম জানান, নতুন বাজার থেকে মিরপুর রুটে বিহঙ্গের ৪৩টি গাড়ি চলাচল করে। সব গাড়ি এখান থেকে ছেড়ে যায়।
আকিক পরিবহনের সুপারভাইজর মো. রানা বাংলানিউজের কাছে স্বীকার করেন, বাসগুলো এখানে যত্রতত্র রাস্তা দখল করেই থেমে থাকে।
ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক মাহবুব ইসলাম খান বাংলানিউজকে জানান, এখানে সমস্যা হলো গাড়ির আধিক্য। যে কারণে অনেক সময় এক গাড়ির পেছনে আরেক গাড়ি, আবার অনেক গাড়ি ভিড় জমায় একসঙ্গে। তবে বড় ধরনের যানজট পরিস্থিতি নেই বলে উল্লেখ করেন তিনি।
গুলশানে অফিস শেষে বিকেলে বাসায় ফিরছেন আজিম উদ্দিন। এখানে সড়কপথে এসব পরিবহনের দখলবাজি দেখতে তিনি অভ্যস্ত।
বাংলানিউজকে জানান, ভোগান্তি এখানে যতটা না পথচারীর, তারচেয়ে বেশি এই রুটের যাত্রীদের। পথচারীরা ফুটওভারব্রিজ দিয়ে রাস্তা পার হন, কিন্তু গাড়িতো আর ফুটওভার ব্রিজ দিয়ে যায় না। তাই যাত্রীদের পড়তে হয় যানজট ভোগান্তিতে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১৫
এসএ/জেডএম