ঢাকা: বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বিশেষ ক্যাডারের শিক্ষকসহ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব সুযোগ সুবিধা অক্ষুন্ন রেখে এক সপ্তাহের মধ্যে অষ্টম বেতন কাঠামো চূড়ান্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
রোববার(১ নভেম্বর) বেতন ভাতা বৈষম্য নিরসন সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকের পর অর্থমন্ত্রী এ কথা জানান।
অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে, কারো সুযোগ সুবিধা কমানো যাবে না। যার যা সুযোগ সুবিধা রয়েছে। তার সুরক্ষার ব্যবস্থা রেখে যদি আরও ভালো করা যায়, তা করতে হবে।
মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকের পর অর্থমন্ত্রী বলেন, বেতন-ভাতা কমিশনের রিপোর্ট মন্ত্রিসভায় আলোচনা হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ আমরা পাচ্ছি। তার মধ্যে বিশেষ বিশেষ অভিযোগ হলো- বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি, সার্ভিস ক্যাডার শিক্ষক সমিতি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি। এসব প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা নিয়ে অনেক আপত্তি রয়েছে। এসব শিক্ষক সমাবেশ করেছেন, শিক্ষকরা মন্ত্রীর (শিক্ষামন্ত্রী) সঙ্গে দেখা করেছেন।
মন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, কেবিনেট সিদ্ধান্তের পর যে নির্দেশনা তৈরি করছি, তাতে নতুন যে সিদ্ধান্ত হয়েছে তা যুক্ত হয়ে জারি করা হবে। নির্দেশনামা জারির আগ পর্যন্ত যা কিছু হচ্ছে তা আগের নিয়মেই হচ্ছে। সেখানে আমরা কোনো বাধা দেইনি। নির্দেশনামা যেদিন জারি হবে সেদিন থেকে এটা কার্যকর হবে। আমরা মনে করি, এখন যে স্কেলটা আমরা দিচ্ছি, এটা অত্যন্ত ভালো একটি স্কেল। সরকারি সেক্টরই বলেন আর বেসরকারি সেক্টরই বলেন। এই স্কেলে প্রত্যেকেরই সুযোগ সুবিধা থাকছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের কোনো উদ্দেশ্য নেই। এই স্কেল যারা এতদিন পেয়ে আসছেন তাদের সুযোগ কমানোর কোনো উদ্দেশ্য নেই। আমাদের কমিশনের রিপোর্টেও ছিল না, সিদ্ধান্তেও ছিল না। নির্দেশনামা যেটা তৈরি করছি, তার মধ্যেও নেই। আমরা সবাইকে নিশ্চিত করতে চাই- প্রত্যেক ক্যাডারই গ্রেড-১ যেতে পারবেন। ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রী করে দিয়েছেন। এটা আগে ছিল না। আগে ছয়-সাত ক্যাডার যেতে পারতো। আমাদের সিদ্ধান্ত হচ্ছে প্রত্যেক ক্যাডারই গ্রেড ৩, ২ এবং ১ –এ-তে যেতে পারেন সে ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আমরা ইতিবাচক সমাধান চাই, যোগ করেন অর্থমন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, আমরা পজেটিভ সমাধান চাই। এখানে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, সার্ভিস ক্যাডারের শিক্ষক মনে করছেন তাদের সুযাগ সুবিধা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এটা সত্য নয়। তারা যেন উপরে ওঠেন সে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আমরা টাইম স্কেল সিলেকশন গ্রেড বন্ধ করেছি। তবে উপযুক্ত সময়ে টাইম স্কেল দেবো। সক্রিয়ভাবে বেতন বেড়ে যাবে। এখানে দুটি অপশন আছে- দশ বছর যদি চাকরিতে অ্যাকটিভ এইজে থাকেন, তাহলে একটি লেবেল জাম্প করবেন। সেখানে যদি (ওই এজের সঙ্গে) আরও ছয় বছর থাকে তাহলে আরেকটি লেবেল জাম্প করবে। এটাই হচ্ছে সুযোগ বৃদ্ধির শ্রেষ্ঠ উপায়।
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য রয়েছে। তাদের বিষয়টি খেয়ালে রেখেছি। কোনো বৈষম্য আমরা রাখতে চাই না। এগুলো করতে সময় লাগবে। আমরা মনে করছি এই সপ্তাহে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠাবো। আইন মন্ত্রণালয় ভেটিং(পরীক্ষা-নিরীক্ষা)করার পর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে নির্দেশনামা জারি করবো। ইতোমধ্যেই আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছি।
মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নহিদ, অর্থপ্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, জনপ্রশাসন সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরীসহ মন্ত্রী এবং সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪১ ঘণ্টা, নভেম্বর ০১, ২০১৫
এসএমএ/পিসি/