ঢাকা, বুধবার, ২১ মাঘ ১৪৩১, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

দেশে ৪৩ লাখ শিশু বঞ্চনার শিকার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৫
দেশে ৪৩ লাখ শিশু বঞ্চনার শিকার ছবি : দীপু মালাকার/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুয়ায়ী দেশের ১০ লাখ শিশু সবকিছু থেকে বঞ্চিত। বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে (অশিক্ষা, অপুস্টি, ঝুঁকিপূর্ণ শ্রম, ও নির্যাতন) এ সংখ্যা ৪৩ লাখ হতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এমপি।



শনিবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় কন্যাশিশু দিবস উপলক্ষে এফডিসি’তে ‘বাল্যবিবাহ ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক উন্মুক্ত সংলাপে তিনি এ তথ্য জানান।

নীতিনির্ধারক ও সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ের শিশুদের অংশগ্রহণে যৌথভাবে এ উন্মুক্ত সংলাপের আয়োজন করে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম, উন্নয়ন সেবা সংগঠন, ইন্টারনেশনাল চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ, ইসলামিক রিলিফ ও ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি।

এ সংলাপে প্রধান অতিথি ছিলেন- মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এমপি। অতিথি  আলোচক ছিলেন আইন ও শালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ম কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়।

শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন- জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম’র সম্পাদক নাছিমা আক্তার জলি। সঞ্চালনা করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহেমেদ চৌধুরী কিরণ।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, আমরা চাই প্রতিটি শিশু যেন সুরক্ষা পায়। যতবেশি দারিদ্র্য কমে আসবে, শিশু নির্যাতন কমবে। সব ক্ষেত্রে তারা সুযোগ পাবে।

এখনকার সময়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো, শিশুরা মাদকাসক্ত হচ্ছে। কিছু মানুষ এর ফায়দা নিচ্ছে। অনেকে রাজনৈতিক ফায়দাও নিচ্ছে। এটা ভয়াবহ।

শিশুর সুরক্ষায় আমরা বিভিন্ন কার্যক্রম চালাচ্ছি। এতকিছুর পরও কেন শিশু ঘুরে বেড়াচ্ছে? আমরা দেখছি, পরিবার রোজগারের জন্য কোনো শিশুকে কাজে লাগাচ্ছে কিনা। যাদের বাবা ছেড়ে চলে গেছে, চিহ্নিত করছি। জীবনের প্রয়োজনে অনেকে বাসায় কাজ করে, এর সংখ্যা কত দেখছি।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে সামাজিক কারণে শিশু বঞ্চনার শিকার হয়। তাছাড়া, শিশুরা অনেকের নিয়ন্ত্রণে থাকে। যার কারণে বেশি নির্যাতন হয়। একক নিয়ন্ত্রণ হলে এত নির্যাতন হতো না। শিশুদের রাষ্ট্র অথবা মা-বাবা’র নিয়ন্ত্রণে রাখলে নির্যাতনের মাত্রা কমে আসবে।
তিনি বলেন, শিশু নির্যাতনের বিষয়ে অভিভাবকদের দায়িত্ব অনেক। আমাদের দায়িত্ব, তাদের সচেতন করা। তাদের মাথায় এটা দেওয়া উচিত, নিজের সন্তানকে নিজে ভালো না বাসলে অন্যে কীভাবে ভালোবাসবে? সুযোগে অন্যরা তো কিছু একটা করেই ফেলতে পারে।

১৮ এর নিচে মেয়েদের বিয়ে দেওয়া যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী।

আইন ও শালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেন, তোমরা যতখানি সাহস ও ক্ষমতা নিয়ে এখানে এসেছ, ততখানি সাহস ও ক্ষমতা নিয়ে নির্যাতন, শিশুশ্রম ও বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধ বলবে। দলিতদের অধিকার বিষয়ে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, সামাজিক সচেতনতার মধ্য দিয়ে আমাদের শিগগিরই এসব সমস্যা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। এসময়  তিনি শিশু রাজনের হত্যার বিচার নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন।

 ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ম কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় বলেন, যারা মায়ের পেটেও শিশুদের নিরাপদ রাখে না। এতটুকু প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, আমরাও তাদের নিরাপদ রাখবো না।
 
শিশু নির্যাতন প্রতিকার চাইতে গেলে পুলিশের সহযোগিতা পাওয়া যায় না, এমন অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি পুলিশ সদস্যদের এমনভাবে প্রশিক্ষিত করে তুলতে, যাতে আমাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ না আসে। ব্যত্যয় হলে নিরসন, ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েই আমরা এগুতে চাই। সমাজের আর ১০ টা প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন না হলে পুলিশ চট করে পরিবর্তন হতে পারবে না। এজন্য সবার সচেতনতা প্রয়োজন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৫
এসইউজে/পিসি
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।