পটুয়াখালী: আমন উৎপাদন নিয়ে দ্বিতীয় দফায় হুমকিতে পড়েছেন পটুয়াখালীর চাষীরা। হঠাৎ করে লিভ রোলার বা পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমনে দিশেহারা এখন তারা।
সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, জুলাই ও আগষ্ট মাস জুড়ে অতি বৃষ্টির ফলে নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে আমনের বীজতলা তৈরি করেছেন উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীর চাষীরা। কিন্তু বীজ রোপনের দুই মাসের মাথায় হঠাৎ করে চলতি সপ্তাহ থেকে জেলার প্রায় সব জায়গায় পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমন দেখা দেয়।
সবুজ পাতার উপরের অংশ খেয়ে ধীরে ধীরে নিচে নামছে পোকাগুলো। সেখানেই ডিম ছাড়ছে। ফলে হলদে বা সাদা হয়ে মরে যাচ্ছে পাতা।
গত এক সপ্তাহ ধরে এ অবস্থার প্রেক্ষিতে কৃষকরা বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক ঔষধ প্রয়োগ করেন। কিন্তু থামানো যায়নি পোকার আক্রমণ। হতাশ কৃষক এখন আমনের ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কাতেই দিনযাপন করছেন।
সদর উপজেলার বসাক বাজার এলাকার কৃষক হানিফ ফকির বাংলানিউজকে জানান, অনেক প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে এবার তিনি পাঁচ কাঠা জমিতে আমন চাষ করেছেন। কিন্তু গত সপ্তাহে হঠাৎ করে পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমনে তার অধিকাংশ ক্ষেতের অবস্থা এখন শোচনীয় পর্যায়ে।
জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলার মোট সাড়ে পাঁচ লাখ হেক্টর কৃষি জমির মধ্যে এবার আমন ধানের চাষ হয়েছে দুই লাখ ১০ হাজার হেক্টরে।
জেলায় আমন ক্ষেতে পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমনের ঘটনা এই প্রথম হওয়ায় স্থানীয় কৃষি বিভাগও পড়েছে বিপাকে। এরকম ঘটনা এর আগে মোকাবেলা না করায় এখন তারা বিভিন্ন এলাকায় ক্ষতিগ্রস্থ আমন ক্ষেত পরিদর্শন করে যাচাইবাছাই করছেন বলে বাংলানিউজকে জানান পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক অশোক কুমার শর্মা।
এদিকে, বেশি ফলনের আশায় কৃষকরা যখন আমন ক্ষেতে অতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগ করে ঠিক তখনই পাতা মোড়ানো পোকার আবির্ভাব ঘটে বলে দাবী করেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ব বিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের ডীন প্রফেসর ড. মো. হামিদুর রহমান।
বাংলানিউজকে তিনি জানান, এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে জমিতে আলোর ফাঁদ, কেরোসিন তেল মেশানো রশি টানা ও আক্রান্ত পাতা ছেটে দিতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০১৫
আরএইচ