ঢাকা: মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর পক্ষে রিভিউ শুনানির সময় আটজনকে সাক্ষী দেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছে।
সোমবার (১৯ অক্টোবর) সকালে আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদন করেন অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড জয়নুল আবেদীন তুহিন।
এ সাতজনের মধ্যে পাঁচজন পাকিস্তানের, একজন যুক্তরাষ্ট্র ও বাকি দু’জন বাংলাদেশি বলে জানিয়েছেন সাকা চৌধুরীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট হুজ্জাতুল ইসলাম খান আল ফেসানী।
এ আটজন হলেন- পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকারী মোহাম্মদ মিঞা সুমরো, সাবেক রেলমন্ত্রী ইসহাক খান খাকওয়ানি, ভিকারুন্নেসা নুনের নাতি রিয়াজ আহমেদ নুন, ডন মিডিয়া গ্রুপের চেয়ারপারসন আম্বার হারুন সাইগাল ও মুনিব আরজামান্দ খান, ফিজিতে দায়িত্বপালনকারী আমেরিকার সাবেক রাষ্ট্রদূত ওসমান সিদ্দিক, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি শামীম হাসনাইন এবং বিচারপতি শাহানা আক্তারের মা জিনাত আরা বেগম।
বিচারপতি শামীম হাসনাইন এর আগে সাক্ষী দেওয়ার অনুমতির জন্য প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু সে আবেদনে সাড়া দেননি প্রধান বিচারপতি।
এর আগে, ১৪ অক্টোবর মৃত্যুদণ্ডের চূড়ান্ত রায় পুর্নবিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদন জানিয়েছেন মানবতাবিরোধী অপরাধী বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের সাকা চৌধুরী।
তিনি জানান, মোট ১০৮ পৃষ্ঠার রিভিউ আবেদনে ১০টি যুক্তি দেখিয়ে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি ও মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস চাওয়া হয়েছে।
সাকা চৌধুরীর প্রধান আইনজীবী হিসেবে সর্বোচ্চ আদালতে রিভিউ আবেদনের শুনানিতে আসামিপক্ষে নেতৃত্ব দেবেন খন্দকার মাহবুব হোসেন, যিনি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার একজন উপদেষ্টা।
এদিকে, দ্রুত রিভিউ আবেদনের শুনানির জন্য দিন নির্ধারণে আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। রাষ্ট্রপক্ষের এ আবেদনের শুনানি হতে পারে মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর)।
গত ২৯ জুলাই চট্টগ্রাম অঞ্চলের নৃশংসতম মানবতাবিরোধী অপরাধের হোতা সাকা চৌধুরীর আপিল মামলার সংক্ষিপ্তাকারে চূড়ান্ত রায় দেন আপিল বিভাগ। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন।
অন্য বিচারপতিরা হচ্ছেন- বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
পরে ৩০ সেপ্টেম্বর মুজাহিদের সঙ্গেই সাকা চৌধুরীর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ পায়। পরদিন ০১ অক্টোবর তাকে আপিল বিভাগের রায় অবহিত করে কারাগার কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে পড়ে শোনানো হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের জারি করা তাদের মৃত্যু পরোয়ানা।
নিয়ম অনুসারে সে থেকে নির্ধারিত ১৫ দিনের মধ্যেই রিভিউ আবেদন করেন সাকা চৌধুরী।
যদি এ আবেদন খারিজ হয়ে যায় এবং রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা না চাইলে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে আর কোনো বাধা থাকবে না।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর সাকা চৌধুরীকে ফাঁসির রায় দেন ট্রাইব্যুনাল-১। চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীর, বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি আনোয়ারুল হকের সমন্বয়ে গঠিত তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ রায় দেন।
এ রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরের ২৯ অক্টোবর আপিল করেন বিএনপি’র এই নেতা।
২০১০ সালের ১৬ ডিসেম্বর অন্য একটি মামলায় গ্রেফতার হন সাকা চৌধুরী। পরে একই বছরের ১৯ ডিসেম্বর তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০১৫/আপডেট: ১৩০৩ ঘণ্টা/আপডেট: ১৪৩০ ঘণ্টা
ইএস/এসএস