ঢাকা: অবিলম্বে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (আইএসপি) লাইসেন্স প্রদান না করলে ও আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানকে হয়রানি বন্ধ না করলে সারাদেশে ‘ডিজিটাল’ হরতালের (সারাদেশে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে) হুমকি দিয়েছে সাইবার ক্যাফে ওনার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব)।
এছাড়া ২৭ অক্টোবরের মধ্যে ৬ দফা দাবি না মানলে ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) ঘেরাও করারও হুমকি দেয় সংগঠনটি।
সোমবার (১৯ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে কোয়াব আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি এস এম জুলফিকার হায়দার এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
জুলফিকার হায়দার বলেন, কোয়াব ১৯৯৮ সালে এ দেশে ইন্টারনেট ব্যবসা শুরু করে। ২০০০ সাল থেকে কম মূল্যে গ্রাহক পর্যায়ে (বাসা-বাড়ি) ইন্টারনেট সংযোগ দিয়ে আসছে সংগঠনের সদস্যরা। দেশে প্রায় ৪ হাজার সাইবার ক্যাফে ও লোকাল ইন্টারনেট সংযোগকারী প্রতিষ্ঠান গত ১৫ বছর সাধারণ মানুষের কাছে ইন্টারনেট পৌঁছে দিতে কাজ করছে। এ খাতের সাথে সারাদেশে প্রায় লক্ষাধিক লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে এবং এ খাতে বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ২শ’ কোটি টাকা। এ সব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব লাভ করে আসছে।
বিটিআরসি ২০০৮ সালের ডিসেম্বর থেকে এ সব ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে আইএসপি লাইসেন্স দেওয়া শুরু করে। নিয়ম মেনে ব্যবসায়ীরা এরপর থেকে আইএসপি লাইসেন্স এর জন্য আবেদন করে। কিন্তু বিটিআরসি কোন কারণ না দেখিয়ে ২০১২ সালের ১৭ মার্চ থেকে লাইসেন্স দেওয়া বন্ধ রেখেছে।
সভাপতি বলেন, ঢাকায় প্রায় ২ হাজারের মধ্যে ১৭৫টির, ঢাকার বাইরে ২ হাজারের মধ্যে ৭০টি প্রতিষ্ঠানের আইএসপি লাইসেন্স রয়েছে। আরও প্রায় ৫ শতাধিক প্রতিষ্ঠান লাইসেন্সের জন্য আবেদন করলেও বিটিআরসি ‘অজানা’ কারণে লাইসেন্স দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি।
যদিও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ আইন ২০০১ এর ১৮ নং আইনের ৩৬ এর ২ (খ) ধারা অনুসারে আবেদনের ১৮০ দিনের মধ্যে লাইসেন্স দেওয়ার বিধান রয়েছে।
এছাড়া সম্প্রতি বিটিআরসি সারাদেশে অবৈধ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যে অভিযান শুরু করেছে সেজন্য বিটিআরসিকে সাধুবাদ জানান তিনি। কিন্তু অভিযানের নামে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করা প্রতিষ্ঠানকে (ফিসহ নিয়ম নীতি পালন করে আবেদন করা) হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স প্রদান, আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানে র্যাব, পুলিশের অভিযান বন্ধ, গোয়েন্দা প্রতিবেদন জটিলতা নিরসন এবং কোয়াব’র সাথে আলোচনা সাপেক্ষে ইন্টারনেটের মূল্য নির্ধারণসহ সংগঠনের পক্ষ থেকে ৬ দফা তুলে ধরেন তিনি।
২৭ অক্টোবরের মধ্যে দাবি না মানলে ২৮ অক্টোবর বিটিআরসি ঘেরাও এবং ডিজিটাল হরতালের (সারাদেশে একদিন ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রাখা) হুমকি দেন সভাপতি। ইন্টারনেট সেবা বিঘ্নিত হলে এর দায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় এবং বিটিআরসিকে নিতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন এ নেতা।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে কোয়াব সভাপতি বলেন, বর্তমানে সরকার ইউনিয়ন, উপজেলায় তথ্য সেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে তরুণ উদ্যোক্তা তৈরি ও ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কাজ করছে। আমরা গত ১৫ বছর ধরে সর্বনিম্ন মূল্যে এ সেবা দিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ায় কাজ করে যাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এ এম কামাল উদ্দীন আহমদ সেলিম, সিনিয়র সহ সভাপতি নেয়ামুল হক খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০১৫
আরইউ/আরআই