ঢাকা, মঙ্গলবার, ২১ মাঘ ১৪৩১, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

বাংলাদেশ-ভারত নৌ প্রটোকল

পানগাঁও বন্দর ব্যবহার করতে চায় ভারত

জেসমিন পাপড়ি, ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২২৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৫
পানগাঁও বন্দর ব্যবহার করতে চায় ভারত

ঢাকা: দু’দেশের মধ্যকার নৌ প্রটোকলের আওতায় বাংলাদেশের পানগাঁও বন্দর ব্যবহার করতে চায় প্রতিবেশী ভারত। একইভাবে বাংলাদেশও ভারতের ব্যান্ডেল ও ধুলিয়ান বন্দর ব্যবহারের অনুমতি চেয়েছে।



এ বিষয়ে দুই দেশ একমত হলে আবারও সংশোধন হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার নৌ প্রটোকল বা ‘প্রটোকল অন ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রানজিট অ্যান্ড ট্রেড’ (পিআইডব্লিউটিটি)।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

জানা যায়, আগামী ৩ নভেম্বর ভারতে অনুষ্ঠেয় দু’দেশের নৌ সচিব পর্যায়ের বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হবে। বিদ্যমান নৌ প্রটোকলে যে পোর্ট অব কল বা বন্দর ব্যবহারের অনুমতি রয়েছে তার বাইরে অতিরিক্ত বন্দর সংযোজনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে এ বৈঠক থেকেই।

দু’দেশই ইতোমধ্যে এসব বন্দরগুলো ব্যবহারের আগ্রহ জানিয়ে একে অপরের চিঠি দিয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, মূলত ব্যান্ডেল এবং ধুলিয়ান বন্দর দু’টি কৌশলগতভাবে বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে আমদানির ক্ষেত্রে।

ধুলিয়া বন্দর দিয়ে এর আশপাশের শিল্প এলাকার ফ্লাই অ্যাশ আর ধুলিয়ান বন্দর দিয়ে আনা যাবে অবকাঠামো নির্মানের জন্য প্রয়োজনীয় পাথর। যা পদ্মাসেতুসহ অন্যান্য এ ধরনের অবকাঠামো নির্মাণের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন।

এ দু’টি বন্দর ব্যবহারের অনুমতি পেলে জাহাজগুলো সিরাজগঞ্জ বন্দর থেকে ২১৫ কিলোমিটার দূরত্বের ধুলিয়ান বন্দর ব্যবহার করবে। আর মংলা সমুদ্র বন্দর থেকেই ব্যবহার করা যাবে ভারতের ব্যান্ডেল বন্দর। যার দ‍ূরত্ব প্রায় ৩০০ কিলোমিটার।

এছাড়া ভারত তাদের পোর্ট অব কল থেকে বাংলাদেশের পানগাঁও বন্দরও ব্যবহার করতে পারবে।

এ বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বাংলাদেশ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) ট্রাফিক ও পোর্ট বিভাগের এম শফিকুল হক বাংলানিউজকে বলেন, ‘দূরত্ব আর কৌশলগত সুবিধা বিবেচনা করে বাংলাদেশ ভারতের ধুলিয়ান এবং ব্যান্ডেল বন্দর ব্যবহার করতে চেয়েছে। আর ভারতও আমাদের পানগাঁও বন্দরের ব্যবহার চায়। এসব বিষয়গুলো দুই দেশের সচিব পর্যায়ের বৈঠকে গুরুত্ব পাবে। ’

সর্বশেষ চলতি বছরের জুন মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরকালে প্রটোকল অন এনল্যান্ড ওয়াটার ট্রানজিট অ্যান্ড ট্রেডের (পিআইডব্লিউটিটি) সংশোধন করে সই করা হয়। এর মাধ্যমে নৌ প্রটোকলের মেয়াদ ৫ বছর করা হয়েছে।

বিদ্যমান নৌ প্রটোকল চুক্তি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ৫ বছর পরপর নবায়ন হবে। ভারতের পক্ষ থেকে ১০ বছরের জন্য নবায়নের প্রস্তাব দেওয়া হলেও বাংলাদেশ তাতে সম্মত দেয়নি।

বিদ্যমান নৌ প্রটোকল অনুযায়ী, ভারতের জাহাজগুলো বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ, খুলনা, মংলা, সিরাজগঞ্জ এবং আশুগঞ্জ বন্দর ব্যবহার করতে পারে।
একইভাবে বাংলাদেশেরও ভারতের কলকাতা, হলদিয়া, করিমগঞ্জ, পান্ডু এবং শিলঘাটের বন্দর ব্যবহারের অনুমতি আছে।

তবে যাত্রা পথে তেল সংগ্রহের জন্য ভারতীয় জাহাজগুলো বাংলাদেশের শেখবাড়িয়া, মংলা, খুলনা, বরিশাল, চাঁদপুর, নারায়ণগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ এবং চিলমারী বন্দর ব্যবহার করে  বাংলাদেশের জাহাজগুলো ভারতের যোগিগোপা, ধুবরি, নামখানা, পান্ডু, করিমগঞ্জ, হলদিয়া, কলকাতা এবং বজবজ বন্দরে প্রবেশের অনুমুতি রয়েছে।

এছাড়া মেরামতের জন্য সরকারি বা যেকোনো সুনামধন্য জাহাজ মেরামতকারী প্রতিষ্ঠানে দুই দেশের জাহাজগুলোই সুযোগ পাবে।

এ প্রটোকলের আওতায় বাংলাদেশ ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে পণ্য পরিবহন করতে পারবে। একই ভাবে ভারত বাংলাদেশের ভ‍ূখণ্ড ব্যবহার করে দেশটির উত্তর-দক্ষিণ অথবা তৃতীয় দেশে পণ্য পরিবহন করতে পারবে।

বাংলাদেশ সময়: ০১১৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৫
জেপি/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।