ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ মাঘ ১৪৩১, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

ভোগ্যপণ্যের ক্রমবর্ধমান বাজার বাংলাদেশ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১৫
ভোগ্যপণ্যের ক্রমবর্ধমান বাজার বাংলাদেশ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: বাংলাদেশে ভোক্তার সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। প্রতিবছর ২০ লাখ মানুষ মধ্যআয়ে উত্তীর্ণ হচ্ছে।

সেই সঙ্গে বাড়ছে ধনী ভোক্তার সংখ্যা। তাই বিশ্বে বাংলাদেশকে ভোগ্যপণ্যের আগামী দিনের বাজার হিসেবে বিবেচনা করছেন গবেষকরা।   
 
বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব তথ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করেন গবেষকরা।
 
অনুষ্ঠানে বিশ্বখ্যাত গবেষণা প্রতিষ্ঠান বোস্টন কনসাল্টিং গ্রুপের (বিসিজি) সেন্টার ফর কাস্টমার ইনসাইট প্রথমবারের মতো ‘বাংলাদেশ : দ্য সার্জিং কনজ্যুমার মার্কেট নোবডি স কামিং’ শীর্ষক কান্ট্রি রিপোর্ট প্রকাশ করে। এর আয়োজন করে এসডি এশিয়া।
 
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম দেশ, যেখানে ব্যবসার সুযোগ ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে। এখানে ভোক্তার সংখ্যাও বেড়ে যাচ্ছে সমানতালে। বাংলাদেশে প্রতিবছর ২০ লাখ মানুষ মধ্যআয়ে উত্তীর্ণ হচ্ছে ও ধনী ভোক্তার সংখ্যা বাড়ছে। যারা ভবিষ্যতের ব্যাপারে খুবই আশাবাদী, বিদেশি ব্র্যান্ডকে মূল্য দেয় ও  প্রযুক্তিগত সব সুবিধা পেতে ইচ্ছুক।
 
বিসিজি’র সেন্টার ফর কাস্টমার ইনসাইট ২ হাজারের বেশি বাংলাদেশি ভোক্তার ওপর জরিপ করে এবং তাদের ভোগের ধরন সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণ ও গবেষণা করে এ গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
 
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক। বিশেষ অতিথি ছিলেন- বিসিজি মালয়েশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পার্টনার জারিফ মুনির এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস’র (বেসিস) সভাপতি শামীম আহসান।
 
বিসিজি’র সহযোগী ও এ গবেষণা প্রতিবেদনের সহ-রচয়িতা জারিফ মুনির বলেন, বাংলাদেশের বাজার এশিয়ার অন্যান্য দেশের বাজারগুলোর মধ্যে সবচেয়ে প্রবাহশীল। কিন্তু এ বাজার এখন পর্যন্ত বেশিরভাগ ভোগ্যপণ্য প্রতিষ্ঠানগুলোর নজরে আসেনি।
 
তিনি আরও বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠান এ বাজারে অবস্থান নিতে আসবে, তারা একটি দীর্ঘস্থায়ী প্রতিযোগিতামূলক বাজার সৃষ্টির সুযোগ পাবেন।  
 
গবেষণা প্রতিবেদনটি বাংলাদেশের মধ্য ও উচ্চবিত্তদের ওপর পরিচালিত। বিসিজি’র তথ্য অনুযায়ী, যাদের বার্ষিক পারিবারিক আয় ৫ হাজার বা তারও বেশি ইউএস ডলার তাদেরই মধ্য ও উচ্চবিত্ত হিসেবে ধরা হয়েছে। তার মানে এ ভোক্তা শ্রেণির স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ ও আরামদায়ক পণ্য কেনার সামর্থ রয়েছে। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে- শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র, আমদানিকৃত শ্যাম্পু ও অন্যান্য প্রসাধন সামগ্রী।
 
এতে বলা হয়, যদিও বাংলাদেশের মোট ১৬ কোটি জনসংখ্যার শতকরা মাত্র ৭ ভাগ মানুষ উচ্চ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণিতে বিদ্যমান। কিন্তু এক দশকের স্থিতিশীল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে এ সংখ্যা প্রতিনিয়তই বাড়ছে। জনসংখ্যার মধ্যে কর্মজীবী মানুষের সংখ্যা বাড়ছে, যা অর্থনীতিকে শক্তিশালী, ঊর্ধ্বমুখী ও গতিশীল করছে। ২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশের মধ্য ও উচ্চবিত্ত মানুষের সংখ্যা তিনগুণ হয়ে ৩৪ মিলিয়ন হবে।
 
বিসিজি’র সহযোগী ও এ গবেষণা প্রতিবেদনের আরেক সহ-রচয়িতা অলিভিয়ের মিউয়েল স্টাইন বলেন, এ প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান ভোক্তা শ্রেণি দামি ব্র্যান্ডের পণ্য ও সেবা নিতে ইচ্ছুক, কিন্তু একই সঙ্গে তারা বাজেট বিষয়ে সচেতন। বাংলাদেশি ভোক্তাদের মন জয়ের জন্য ভোগ্যপণ্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে টাকার বিপরীতে পণ্যসেবা শক্তিশালী করতে হবে।
 
এ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী,  প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাংলাদেশের বাজারে সফল হতে হলে তাদের এ দেশের নিজস্ব স্বাতন্ত্র্য ও সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য বিবেচনায় রাখতে হবে। বাংলাদেশিরা এশিয়ার সম্প্রসারণশীল ও বৃহৎ অন্যান্য বাজারের তুলনায় নিত্য প্রয়োজনীয় গৃহস্থলী পণ্যের ওপর জোর দেয়। উদাহরণস্বরূপ- গৃহস্থলী পণ্য কেনার ক্ষেত্রে আধুনিক মাধ্যম যেমন- সুপার মার্কেট ও চেইন শপ থেকে কেনার চেয়ে প্রথাগত পদ্ধতিতে তারা নগদ অর্থ ব্যয় করে।   
 
প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে মূল উদ্যোগগুলো নিয়েছেন। গত সাড়ে ৬ বছরে প্রধানমন্ত্রী স্কুল শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। শিক্ষার প্রসার, কর্মসংস্থান বাড়ানো, প্রযুক্তির উন্নয়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে তার পদক্ষেপ দেশকে ক্রমশ এগিয়ে নিচ্ছে।
 
বাংলাদেশকে নিয়ে এমন আশাব্যঞ্জক প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য গবেষণা প্রতিষ্ঠানটিকে ধন্যবাদ জানান শামীম আহসান। একই সঙ্গে  ‘এটি অবশ্যই আন্তরিক উদ্যোগ’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
 
বাংলাদেশ সময়: ২০১২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১৫
এসকেএস/আরএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।