ঢাকা, সোমবার, ১৯ মাঘ ১৪৩১, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

পরিকল্পিতভাবে অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৫
পরিকল্পিতভাবে অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ঢাকা: একটি মহল পরিকল্পিতভাবে দেশে অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে সহযোগিতা চেয়ে এসবের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।



প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। দুইটা বোমা মেরে বা পাঁচটা ডিম মেরে বাংলাদেশের উন্নয়নের গতিধারা বন্ধ করা যাবে না। যারা এ চিন্তা করছেন তারা ভুল করছেন।

বুধবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁও থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঢাকা ওয়াসার মেগা প্রকল্প পদ্মা (জশলদিয়া) পানি শোধনাগার নির্মাণ (ফেজ-১) এর ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা কখনো অন্যায়কে প্রশ্রয় দেই না, দেবো না। এটাই মূল কথা। সন্ত্রাসী ও জঙ্গি কর্মকাণ্ড এক সময় বাংলাদেশে যেন নিয়মিত ব্যাপার ছিলো। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরই এগুলো দমন করেছে। এখন এ চেষ্টা যারা করবে তাদের স্পষ্ট বলতে চাই, বাংলাদেশে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদেও কোনো স্থান হবে না। সেক্ষেত্রে আমি বাংলাদেশের সব মানুষের সহযোগিতা চাই। এটা মোকাবেলা করতে হলে বাংলাদেশের সবাইকে এর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, রুখে দাঁড়াতে হবে।

শেখ হাসিনা অভিযোগ করে বলেন, দেশের ভিতরে মানুষ পুড়িয়ে যখন দেখলো সরকার উৎখাত করা যাচ্ছে না, এখন বিদেশিদের পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে একটা অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা বলি, ধর্ম যার যার উৎসব সবার। আপনারা দেখেন, হোসেনী দালানে বোমা হামলায় কারা মারা গেছে, কে আহত হয়েছে। যে ছেলেটা মারা গেছে, সে শিয়া না, সে কিন্তু সুন্নি। যে কয়জন আহত হয়েছে, তারা প্রত্যেকে কিন্তু সুন্নি মুসলমান।

আমাদের দেশে যে কোনো অনুষ্ঠান ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মিলিতভাবে করা হয়। তাহলে হামলাটার কী অর্থ থাকতে পারে, কারা করলো এটা, কারা করালো, এটাতো ধীরে ধীরে মানুষের কাছে স্পষ্ট হয়েই যাচ্ছে। এর উদ্দেশ্য বাংলাদেশের ভাবমূর্তিটা নষ্ট করা। যখন আন্তর্জাতিক বিশ্বে সবার কাছে বাংলাদেশ একটা উন্নয়নের রোল মডেল।

চলতি বছরের শুরুতে বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনের সময়কার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, দুর্ভাগ্য এটাই, যখন মানুষ একটু ভালো থাকে, স্বস্তিতে থাকে, শান্তিতে থাকে, ঠিক তখনই আমি দেখি একটা শ্রেণি আছে তাদের এসব পছন্দ হয় না।

সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতিমধ্যে সরকারের গৃহিত পদক্ষেপের ফলে দারিদ্রের হার হ্রাস করে ২২ দশমিক ৪ ভাগে নামিয়ে এনেছি। মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৩১৪ মার্কিন ডলারে উন্নীত করেছি। প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি করে ৬ দশমিক ৫ ভাগে নিয়ে এসেছি। মূল্যস্ফীতি হ্রাস করেছি। এমনকি বর্ষাকালে যখন মূল্যস্ফীতি বাড়ে, আমরা তা কমিয়েছি। উৎপাদন বাড়িয়ে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। উন্নয়নটা শুধু ঢাকা শহরে নয়, বাংলাদেশব্যাপী করেছি।

তিনি আরও বলেন, ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর বলতে গেলে প্রতিটি মহানগরের চেহারা পাল্টে গেছে। প্রতিটি মহানগরে আমরা উন্নয়ন করেছি। জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন, অর্থাৎ তৃণমূল পর্যন্ত রাস্তাঘাট, পুল-ব্রিজসহ ব্যাপক উন্নয়নের মাধ্যমে আমরা মানুষের জীবনমান সহজ করে দিয়েছি। ডিজিটাল বাংলাদেশে ইন্টারনেটের বদলৌতে এখন সবকিছু আরও সহজ হয়ে গেছে।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুল মালেক, চীনের সংসদ সদস্য লু ইয়ান, বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত মা মিং কিয়াং, ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান।

এছাড়া অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটির মেয়র, কূটনীতিক, উন্নয়ন অংশীদার দেশগুলোর প্রতিনিধি, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৫
এমইউএম/আরএম

** পানির সীমিত ব্যবহার ও সাশ্রয় নিশ্চিত করুন
** পদ্মার পানি শোধনাগার নির্মাণ প্রকল্প উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।