বাগেরহাট: সুন্দরবন সংলগ্ন বাগেরহাটের মংলা উপজেলার পশুর নদীতে ৫১০ টন কয়লা নিয়ে ডুবে যাওয়া এমভি জি আর রাজ এখনো উদ্ধার হয়নি।
এ ঘটনায় বুধবার (২৮ অক্টোবর) বন বিভাগের পক্ষ থেকে একটি মামলা এবং তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সাঈদুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, কার্গোডুবির ঘটনায় চাঁদপাই স্টেশনের বনকর্মী মিজানুর রহমান বাদী হয়ে কার্গো মালিক ও মাস্টারের বিরুদ্ধে এক কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ মামলা করেছেন।
তিনি আরো জানান, চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক বেলায়েত হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। বনের উপর এই ঘটনার প্রভাব ও প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ করে কমিটিকে দুই কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন, চাঁদপাই রেঞ্জের চাঁদপাই স্টেশন কর্মকর্তা গাজী মতিয়ার রহমান ও ঢাংমারী স্টেশন কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান।
মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার হাসান বাংলানিউজকে জানান, কয়লাবোঝাই কার্গোটি পশুর চ্যানেলে জাহাজ চলাচল এলাকার বাইরে নিমজ্জিত হওয়ায় বন্দরে জাহাজ আসা-যাওয়ায় কোনো সমস্যা হচ্ছে না। তবে কার্গোটি দ্রুত অপসারণের জন্য কার্গো মালিক ও স্টিভেটরকে বলা হয়েছে।
অপরদিকে, বুধবার দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর আলম, সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের ডিএফও মো. সাঈদুল ইসলাম ও মংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আলী প্রিন্স।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) খুলনা বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাহফুজুর রহমান মুকুল বলেন, ‘কয়লাবোঝাই কার্গোডুবির এ ঘটনাকে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। সুন্দরবনের প্রাণ-বৈচিত্র্যের ওপর এর প্রভাব পড়বেই।
ডুবে যাওয়া কার্গোর স্বত্ত্বাধিকারী দিল খান দুপুরে বাংলানিউজকে জানান, বলেন, নিমজ্জিত কার্গো থেকে কয়লা সরিয়ে নিয়ে কার্গোটি উদ্ধারের জন্য একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে উদ্ধারকাজ শুরু হবে।
তবে কয়লা আমদানিকারকের স্টিভেটর প্রতিষ্ঠান নূর এ- সন্সের স্বত্ত্বাধিকারী দুলাল বাংলানিউজকে জানান, ডুবে যাওয়া কার্গো প্রায় ২৩০ টন কয়লা নিয়ে যশোরের নওয়াপাড়ায় শেখ ব্রাদার্সের ঘাটের উদ্দেশে যাচ্ছিল। কয়লার মূল্য আনুমানিক ২০ লাখ টাকা।
মংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ লুৎফুর রহমান সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ মামলা দায়েরের তথ্য নিশ্চিত করে জানান, কার্গো মাস্টার বুলু কাজীকে আটক করা হয়েছে। কার্গোটির নৌ শ্রমিকদের জয়মনির ঘোল নৌ টহল ফাঁড়িতে রাখা হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেলে ভাটির সময় কার্গোটি রওনা হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে জয়মনির ঘোল মংলা সাইলো (খাদ্য গুদাম) সংলগ্ন এলাকার পশুর নদীতে ডুবোচরে আটকে পড়ে। রাতে জোয়ারের সময় ডুবোচর থেকে কার্গোটি ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে গেলে তলা ফেটে কার্গোটি ডুবে যায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৫
এসআর
** সুন্দরবন সংলগ্ন পশুর নদীতে কয়লাবোঝাই কার্গোডুবি