ঢাকা: প্রথম সম্মেলন উপলক্ষে চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জে শ্রমিক সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি। একই দিন মিরপুরের নির্ধারিত সমাবেশ পুলিশি বাধায় পণ্ড হয়ে গেছে।
শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম জেলা শাখার উদ্যোগে ইপিজেড মোড়ে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশনের সহসভাপতি ছিদ্দিকুল ইসলাম, শ্রমিক নেতা মির্জা আবুল বসর, গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা ফিরোজ আহমেদ, গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক তাসলিমা আখ্তার, কেন্দ্রীয় সদস্য নজরুল ইসলাম আলমগীর, উবা থুয়াই মারমা প্রমুখ। সভাপ্রধানের বক্তব্য দেন জেলা সমন্বয়ক হাসান মারুফ রুমী।
এদিন বিকেল ৪টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব জুলহাসনাইন বাবু, নারী সংহতির সাধারণ সম্পাদক অপরাজিতা দেব, শ্রমিক নেতা দীপক রায়, মিনহাজুল হক নাহিদসহ স্থানীয় নেতরা। সভাপ্রধানের বক্তব্য দেন নারায়ণগঞ্জ জেলা সমন্বয়ক অঞ্জন দাস।
নারায়ণগঞ্জে সমাবেশ শেষে একটি প্রচার মিছিল শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
এছাড়া একই দিন সকাল সাড়ে ১০টায় মিরপুরের পূরবী সিনেমা হলের সামনে সমাবেশ শুরু হওয়ার পরেই পুলিশি বাধার মুখে গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়।
নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামে আয়োজিত সমাবেশে মিরপুরের সমাবেশে পুলিশি বাধার তীব্র নিন্দা জানান বক্তরা। তারা বলেন, সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলনে বাধা দেওয়া হয়েছে, বাম মোর্চার রোড মার্চে পদে পদে বাধা দেওয়া হয়েছে। এখন গার্মেন্ট শ্রমিকদের সম্মেলনের প্রচার কর্মসূচিতেও বাধা দেওয়া হচ্ছে।
বাধা দিয়ে শ্রমিকদের ন্যায্য সংগ্রামকে আটকে রাখা যাবে না, বরং তা আরও তীব্রতার সাথে সামনের দিকে ধাবিত হবে বলেও জানান বক্তারা।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বর্তমান সরকার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের, মন্ত্রী-এমপিদের এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির বেতন বৃদ্ধি করেছে, এতে করে বাড়ি ভাড়া, গাড়ি ভাড়া, চাল-ডাল-তেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু জাতীয় ন্যূনতম বেতন কাঠামো নির্ধারণ করেনি। বর্তমান সময়ে গার্মেন্ট শ্রমিকরা যে বেতন পায় তা দিয়ে মাসের অর্ধেকও চলা সম্ভব নয়।
বক্তারা গার্মেন্ট খাতে নিন্মতম মজুরি পুনর্নিধারণের পাশাপাশি জাতীয় ন্যূনতম বেতন কাঠামো নির্ধারণেরও দাবি জানান।
সমাবেশগুলোতে বক্তারা গার্মেন্ট শ্রমিকদের নিরাপত্তার প্রশ্নকে সামনে এনে বলেন, রানা প্লাজা, তাজরীনে এতবড় শ্রমিক হত্যার পরও এখন পর্যন্ত দেলোয়ার বা সোহেল রানার বিচার বা শাস্তি নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। কারখানা দুর্ঘটনায় শ্রমিক হত্যার জন্য আজ পর্যন্ত কোনো মালিকের বা দোষী ব্যক্তিদের বিচারও হয়নি।
শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম ও শক্তিশালী ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের মাধ্যমেই শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব বলেও মতামত ব্যক্ত করেন আলোচকরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৫
পিআর/এমজেএফ/