ঢাকা: চাঁদাবাজ হ্যাকার আব্দুল্লাহ আল ফাহাদের জব্দকৃত ল্যাপটপ অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) পাঠানো হচ্ছে। ডাটা বিশ্লেষণ ও রিমান্ডে ফাহাদকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য যাচাই-বাছাই করতে এটি সিআইডিতে পাঠানো হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, রিমান্ডে ফাহাদকে দ্বিতীয় দিন জিজ্ঞাসাবাদ করে সাইবার অপরাধের নানা তথ্য পাওয়া গেছে। এখন তার ল্যাপটপটি ডাটা বিশ্লেষণের জন্য এবং প্রাপ্ত তথ্য যাচাই-বাছাই করতে সিআইডিতে পাঠানো হচ্ছে।
দ্বিতীয় দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের পর কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, হ্যাকিংয়ে শুধু ফাহাদ নয়, তার সঙ্গে আরও অনেকেই জড়িত রয়েছে।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, জব্দকৃত ল্যাপটপটি সিআইডিতে পাঠানো হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদেও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তবে মামলার তদন্তের স্বার্থে সেসব তথ্য প্রকাশ করা যাচ্ছে না।
গত ১৯ অক্টোবর বাংলানিউজের ওয়েবসাইট হ্যাক করার হুমকি দিয়ে প্রথমে এক হাজার ডলার এবং পরে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আবদুল্লাহ ফাহাদ। ওই দিন দুপুর থেকেই সে বাংলানিউজের সাইট হ্যাক করার অব্যাহত চেষ্টা চালাতে থাকে এবং একের পর এক ইমেইল বার্তায় হুমকি দিয়ে চাঁদা দাবি করে।
বাংলানিউজের মামলা ও অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২৭ অক্টোবর ফাহাদকে আটক করে র্যাব-৪ এর একটি দল। পরে তাকে ভাটারা থানায় হস্তান্তর করা হয়। আইসিটি অ্যাক্টে দায়ের করা মামলায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার দেখায় এবং ২৮ অক্টোবর মহানগর দায়রা জজ আদালতে হাজির করে। ফাহাদের কাছ থেকে হ্যাকিং সংক্রান্ত তথ্য আদায়ের লক্ষ্যে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাত দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) রিমান্ডের প্রথম দিনে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী পুলিশ অভিযান চালিয়ে ফাহাদের ল্যাপটপ জব্দ করে।
তদন্তকারী সূত্র বলছে, হ্যাকিং সংক্রান্ত তথ্য ছাড়াও সাইবার জগতে নানা অপরাধমূলক কাজে ফাহাদের জড়িত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ। দৈনিক কালের কণ্ঠের ওয়েবসাইট হ্যাক করার সুনির্দিষ্ট তথ্যও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। একটি গোয়েন্দা সংস্থার পিসি হ্যাক করার ঘোষণা দিয়ে তার প্রকাশ করা একটি ব্লগ পোস্টও পুলিশের হাতে রয়েছে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইইউবিএটি’র কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবদুল্লাহ ফাহাদ। তার বাবা একটি বাহিনীর ওয়ারেন্ট অফিসার পদে কর্মরত।
অভিযোগের পর বেশ কয়েকদিন নজরদারিতে রেখে র্যাবের ইন্টিলিজেন্স বিভাগ নিশ্চিত করে, ফাহাদই বাংলানিউজের ওয়েবসাইট হ্যাক করে চাঁদা দাবি করে আসছিলো। এছাড়া তার সাইবার অপরাধের বিভিন্ন তথ্যও নিশ্চিত করে র্যাব। পরে বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাকে রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে আটক করা হয়। ওই এলাকায়ই ফাহাদের পরিবারের বাস।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার ল্যাবে সে বেশি সময় কাটাতো এমন তথ্য দিয়ে র্যাব জানায়, বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাব থেকেও সে হ্যাকিং সংক্রান্ত অপরাধের কাজগুলো করে থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হয়।
এ বিষয়ে র্যাবের ইন্টিলিজেন্স’র সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে অপেক্ষাকৃত দ্রুতগতির ইন্টারনেট থাকার কারণে ফাহাদের পক্ষে তা ব্যবহার করা অসম্ভব কিছু ছিল না। বিষয়টি আরও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৫
এনএ/এইচএ