জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: তিনটি বন্দরের যন্ত্রপাতি কেনা নিয়ে বিদ্যমান সরকারি ক্রয় আইনের বাইরে আলাদা বিধান রেখে সংসদে উত্থাপিত বিল প্রত্যাহার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) রাতে নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান পোর্টস (সংশোধিত) বিল ২০১৫ প্রত্যাহারের প্রস্তাব করলে কণ্ঠভোটে তা পাস হয়।
এ নিয়ে গত দুই দিনে সংসদে দুটি বিল প্রত্যাহার করে নেওয়া হলো। সোমবার স্থানীয় সরকার (জেলা পরিষদ) (সংশোধনী) বিল ২০১৫ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
সংসদ সচিবালয় জানিয়েছে, এ ধরনের ঘটনা এর আগে সচরাচর ঘটেনি। বিলটি গত ৬ সেপ্টেম্বর সংসদে উত্থাপন করা হয়। এদিকে গতকাল পোর্টস বিল প্রতাহারের সমালোচনা করেন কয়েক এমপি।
সংসদে এমপিরা বলেন, আগেভাগে চিন্তা না করে গুরুত্বপূর্ণ বিল নিয়ে আসায় নানা অসঙ্গতি থেকে যাচ্ছে। এ কারণে বিল প্রত্যাহারের মতো ঘটনা ঘটছে।
এ প্রসঙ্গে জাতীয় পার্টি এমপি ফখরুল ইমাম সংসদে বলেন, পোর্টস বিলে সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা সরাসরি চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। এসব বিষয় মাথায় রাখা উচিত বলে জানান তিনি। ট্রেডমার্ক বিলের ওপর বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে বিলটির ওপর সংসদীয় কমিটি তাদের রিপোর্ট উত্থাপন করে। সেখানেও বিলটি পাসের আগে আরও পরীক্ষার কথা বলা হয়।
কমিটির দেওয়া রিপোর্টে বলা হয়, নৌ-পরিবহন সেক্টরে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ বাধামুক্ত চালানোর যুক্তি হিসেবে বিলের প্রস্তাবে সুপ্রিম কোর্টকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। কিন্তু সংবিধানের ১১২ অনুচ্ছেদে প্রজাতন্ত্রের সকল নির্বাহী ও বিচার বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ সুপ্রিম কোর্টের সহায়তা করবেন মর্মে বলা হয়েছে। সেদিক বিবেচনায় সুপ্রিম কোর্টের এখতিয়ার হস্তক্ষেপ করা যথাযথ হবে না মর্মে কমিটি মনে করে। তাছাড়া সংসদে যে আইনটির সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে ওই আইন প্রায় ১০৭ বছরের পুরনো। এত পুরনো আইনের ছোট খাটো সংশোধনী বিলটিকে যুগোপযোগী করবে না।
এদিকে মঙ্গলবার বিকেলে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ওই বিল পাসের উদ্যোগ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে।
টিআইবির পাঠানো বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘গণমাধ্যম ও অন্যান্য নির্ভরযোগ্য সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী চট্টগ্রাম, মংলা ও পায়রা বন্দর উন্নয়নে যন্ত্রপাতি ক্রয়ে সম্প্রতি নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি দায়মুক্তির যে সুপারিশ করেছে তাতে টিআইবি উদ্বিগ্ন। কারণ এর ফলে মন্ত্রণালয় ও বন্দর কর্তৃপক্ষের ক্রয় খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা গুরুতর প্রশ্নের সম্মুখীন হবে। ‘বিদ্যমান আইনে কাজ করতে গেলে নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়’ বা ‘কাজ দ্রুত সম্পাদনে দায়মুক্তি আইন প্রণয়ন করা প্রয়োজন’ এ ধরনের বিভিন্ন যুক্তি সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত আইন ২০০৯ এবং সংশ্লিষ্ট বিধি লঙ্ঘনকে বৈধতা প্রদানের নামান্তর। এতে সরকারি ক্রয়ে স্বচ্ছতা, সুস্থ প্রতিযোগিতা, গুণগত মান ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের পরিবর্তে যোগসাজশ, দলীয় প্রভাব, অনিয়ম ও দুর্নীতির ঝুঁকি প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। অতএব প্রস্তাবিত দায়মুক্তি আইন প্রণয়ন থেকে বিরত থাকতে জাতীয় সংসদ ও সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই। ’
বাংলাদেশ সময়: ২০৫১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৫
এসএম/এমজেএফ
** সদরঘাটে ইজারাদারি প্রথা বাতিল হবে!
** ট্রেডমার্ক (সংশোধন) বিল পাস
** প্যারিসবাসীর প্রতি সংহতি জানাতে সংসদে নিন্দা প্রস্তাবের আহ্বান
** দুদকের তদন্তকারীদের বিরুদ্ধেই তদন্ত করা উচিত
** চলতি অর্থ বছরে নন-ক্যাডারে ৩৫১৯ জন নিয়োগ হবে
** ‘আগুন সন্ত্রাসীদের বিচারের আওতায় আনা হচ্ছে’
** সরকারি ছুটি বাড়ানোর আপাতত কোনো পরিকল্পনা নেই
** ৩৭তম বিসিএস বিজ্ঞপ্তি জানুয়ারিতে