ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ পৌষ ১৪৩১, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

কোনো শক্তি নেই দুনিয়াতে বিচার বন্ধ করে

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৫
কোনো শক্তি নেই দুনিয়াতে বিচার বন্ধ করে ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: সব ষড়যন্ত্র মোকাবেলার মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোনো শক্তি নেই দুনিয়াতে এ বিচার বন্ধ করে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে, সব কিছু মোবাবেলা করেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।

যাবো। যুদ্ধাপরাধীদের যারা রক্ষা করতে চায় তাদের বাংলাদেশের মানুষ ঘৃণা করবে।

সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে এক সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

‘আমার বিশ্বাস আছে বাংলাদেশের মানুষের ওপর’ এমন বক্তব্য তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মৃত্যু নিয়ে আমি ভাবি না, আমার হারানোর কিছু নেই। বাংলাদেশের মানুষকেই তো আপন করে নিয়েছি। এই মানুষের জন্যই আমার বাবা-ভাই-মা জীবন দিয়ে গেছেন। আমার একটাই লক্ষ্য- এ দেশের একটি মানুষও যেন গৃহহারা না থাকেন, দুই বেলা পেট ভরে খেতে পারেন- এটাই আমি চাই।

শেখ হাসিনা বলেন, ধার করে ঘি খাওয়ার চেয়ে নিজের শক্তিতে নুন খাওয়াই বড় কথা। ভিক্ষা করে বিলাসিতা করে নয়, কুঁড়ে ঘরে থেকে, কুঁড়ে ঘরেই থাকবো। তাও কারো কাছে হাত পাতবো না। মাথা নত করবো না। বাংলাদেশের মানুষকে সেই চেতনা নিয়েই থাকতে হবে।

তিনি বলেন, দেশকে গড়ে তুলবো- উন্নত দেশ হিসেবে। যারা রক্ত দিয়ে গেছেন- তাদের রক্তের মর্যাদা দিতে হবে। আমার বাবা- জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান জেল খেটেছেন, আমরা তো সন্তান হিসেবে পিতৃস্নেহ বঞ্চিত হয়েছি। আমরা তো সে সব মেনে নিয়েছি। ত্যাগ করে গেছেন তিনি- এই ত্যাগ বৃথা যায়নি, তিনি দেশ স্বাধীন করে গেছেন।

‘কোনো কাজ করতে গেলে, সিদ্ধান্ত একবার নিলে সেটায় অটল থাকতে হবে। দেশকে অভিশাপমুক্ত করতে হবে। না হলে দেশে শান্তি আসবে না। যুদ্ধাপরাধীর সবগুলো বিচারের রায় কার্যকর হচ্ছে, এতে করে দেশ এক এক ধাপ এগিয়ে যাচ্ছে। অভিশাপমুক্ত হচ্ছে’।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৪ সালে নির্বাচন বন্ধ করার নামে শত শত মানুষকে হত্যা করা, আহত করা হলো। আবার নির্বাচনের পরেই ঠিক ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে শুরু হলো মানুষকে পুড়িয়ে মারার রাজনীতি। তখন প্রায় দেড় শ’র মতো মানুষকে হত্যা করা হলো, গাড়িতে আগুন দেওয়া হলো। আসলে এসবের মূল উদ্দেশ্য ছিল যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানো এবং দেশকে পেছনের দিকে নিয়ে যাওয়া। আজকে দেশের মানুষ খেতে পারছেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়িয়েছি আমরা, দেশে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে- এটাই তাদের দুঃখ, কারণ তারা চায়নি বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়াক কখনও।

এক সময় খালেদা জিয়া রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিলেন, যে ছাত্রদের হাতে আমরা তুলে দিয়েছি কলম, আর খালেদা জিয়া তুলে দিয়েছিলেন অস্ত্র।

এদিকে, মহান মুক্তিযুদ্ধের লাখো শহীদের রক্তের সঙ্গে জিয়াউর রহমান বেঈমানি করেছেন বলে মন্তব্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।

তিনি বলেন, বিজয়ের মাত্র দু’দিন আগে (১৪ ডিসেম্বর) দেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে এ দেশকে অকার্যকর করতে পারলো না পাকিস্তানি শক্তি। পরে দেশ স্বাধীন হলো। একটি যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ যখন জাতির পিতা চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, দেশ ঘুরে দাঁড়াচ্ছিল তখন ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যা করা হলো। সে সময় থেকেই হত্যা এবং ক্যু’র রাজনীতি শুরু হলো দেশে।

তিনি বলেন, যার মধ্য দিয়ে ক্ষমতা দখল করলেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। মীর জাফর যেমন টিকতে পারেননি বেঈমান মুস্তাকও টিকতে পারলেন না। তখন আসলেন সামরিক জিয়াউর রহমান। এসেই তিনি যুদ্ধাপরাধীদের ট্রাইব্যুনাল আইন বাতিল করে বিচার বাতিল করলেন। পরে বিচার বন্ধ করলেন। তিনি স্বাধীনতাবিরোধীদের বিচার বন্ধ করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসালেন- মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপদেষ্টাও বানালেন। সংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বাতিল করলেন সঙ্গে ৩৮ অনুচ্ছেদও। পাকিস্তানি পাসপোর্ট নিয়ে যারা গিয়েছিলেন তাদের ফিরিয়ে আনলেন। লাখো শহীদের রক্তের সঙ্গে জিয়া বেঈমানি করেছেন। পরে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে নিজামী ও মুজাহিদকে মন্ত্রী বানালেন। আসলে এসবই তাদের রাজনীতি।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৫
এসকে/এমইউএম/এমএ/আইএ

** ‘বিষ দাঁত ভেঙে দিচ্ছি, দেবো’
** বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধা জানিয়ে জাতির সঙ্গে তামাশা করেছেন খালেদা
** লাখো শহীদের রক্তের সঙ্গে জিয়া বেঈমানি করেছেন

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।