ঢাকা: ‘বঙ্গবন্ধুর জন্যে আমগো দেশ স্বাধীন হইছে। হেই আমগো হাতে মুক্তির পতাকা তুইলা দিছে।
কথাগুলো বলছিলেন রিকশাওয়ালা নাজিম উদ্দিন। ৩৫ বছরের এই যুবকের বাড়ি ময়মনসিংহে। বিজয় দিবসকে সামনে রেখে রিকশার হ্যান্ডেলের স্ট্যান্ডের সঙ্গে তিনি লাগিয়ে রেখেছেন লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা।
বিজয়ের সেই দিন ১৬ ডিসেম্বর। নয়মাস রক্তক্ষীয় যুদ্ধের পর বিজয়ের পতাকা পেয়েছি আমরা। আর সে আনন্দে ভাসছেন রাজধানীবাসী। স্বাধীনতার সে চেতনা গেথে আছে এখন ছোট-বড় সবার হৃদয়ে।
মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কেউ মাথায়, কেউ গাড়ির ছাদে, কেউ বাড়ির ছাদে আবার কেউ নিজের প্রতিষ্ঠানে টানিয়েছেন বাংলাদেশের পতাকা। গায়ের টি-শার্ট, পাঞ্জাবি-শাড়িও অনেকে রাঙিয়ে নিয়েছেন পতাকার লাল-সবুজ রঙে।
কাঠালবাগান ঢালের লোহা ঝালাইয়ের দোকানের কর্মচারী শফিক (১৭)। তার হাতে লাগানো সাদা রঙের এক টুকরো কাপড়। তাতেও লেখা, ‘বিজয় আমার অহঙ্কার’। ঝালাইয়ের কাজ করতে বার বার টুকরো কাপড়ের সঙ্গে লেগে যাচ্ছিলো হাতে থাকা ঝালাই যন্ত্রটি। তবু কাজ করে যাচ্ছেন শফিক।
পাশের সহকর্মী বলছিলেন, ‘কাপড়টা খুলে রেখে তো কাজ করা যায় ভাই’! প্রতি উত্তরে বললেন শফিক, ‘কিল্লাইগা? জানিস না! বিজয় দিবস আইতাছে। ওইদিন মানুষ যুদ্ধ কইরা দ্যাশ স্বাধীন করছিলো’।
পরীবাগে রাস্তার ওপর অ, আ পড়ছিলো ১২ বছর বয়সী ছিন্নমূল শিশু ইয়াসমিন। তার মাথায় বাধা সরু কাপড়ে টুকরোয় আঁকা জাতীয় পতাকা। মাথায় পতাকা বাধার কারণ জানতে চাইলে সে জানায়, ‘ভায়ে কইছে, মেলাডি মানুষ মইরা গেছে। সেজন্যে মাথায় পতাকা বাইন্ধা হইবো। শহীদ মিনারে নাকি মেলা বইবো। ভায়ের লগে আমিও ওই মেলায় যামু’।
মোহাম্মাদপুরের একটি হোটেলের মাঝখানের দেয়ালে বিশাল বড় লাল-সবুজের পতাকা টানানো। হোটেল মালিক সোহেল বললেন, ‘এটা আমাদের বিজয়ের আনন্দ। যুদ্ধ করে বিজয় এনেছি। রক্তে রাঙানো এই পতাকায় পেয়েছি বাংলাদেশ। আমরা আনন্দ করবো না তো কে করবে?’
বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৫
জেডএফ/এএসআর