ব্রাহ্মণবাড়িয়া: স্মৃতিসৌধের বেদীমূলে জুতা নিয়ে উঠে, শ্রদ্ধার্ঘ্যের ফুল জুতা পায়ে দলিত করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির নেতারা শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়েছেন!
তাদের এমন কাণ্ডে উপস্থিত জনতাসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা হতবাক ও ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) দিবসের শুরুতে শহীদদের স্মরণে স্মৃতিসৌধে প্রথমে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফুল দেওয়া হয়।
এরপর বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন, স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে সবাই জুতা খুলে রেখে খালি পায়ে সিঁড়ি বেয়ে বেদীতে যান এবং স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এরই মধ্যে ফুলে ফুলে ঢেকে যায় স্মৃতিসৌধের বেদীমূল।
এক পর্যায়ে মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ মুহম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে শিক্ষক নেতারা ফুলের তোড়া হাতে জুতা পায়ে স্মৃতিসৌধে উঠে পড়েন। পরে তারা বেদীমূলে দাঁড়িয়ে ফটোসেশন করেন।
স্বয়ং মানুষ গড়ার কারিগরদের এই ধরনের ঔদ্ধ্যত্বে উপস্থিত সবাই তাৎক্ষণিক ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়াস্থ সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সম্পাদক অধ্যাপক একেএম শিবলী বলেন, স্মৃতিসৌধে জুতা নিয়ে উঠা মানে শ্রদ্ধা জানাতে এসে উল্টো শহীদদের অবমাননা করা। এমনটা করা মানে জাতি হিসেবে নির্বোধের পরিচয় দেওয়া। যা কোনভাবেই ঠিক নয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়াস্থ সুশাসনের জন্য নাগরিকে (সুজন) সভাপতি জেসমিন খানম বলেন, আমরা স্বাধীনতা ভোগ করতেছি অথচ যাদের আত্মত্যাগে দেশটা স্বাধীন হলো তাদেরকে সম্মান জানাতে শিখিনি।
চুয়াল্লিশতম স্বাধীনতা দিবসে আমাদের মধ্যে যদি নূন্যতম এই বোধটুকু না থাকে তাহলে কি করে হয়? এটা খুবই পীড়াদায়ক। সচেতন ও শিক্ষিত মানুষেরা যদি এমন করেন তাহলে এটা বরদাশত করা ঠিক হবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ মুহম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাহিদুল ইসলাম প্রথমে বলেন, আমরা সবাই জুতা খুলে স্মৃতি সৌধে উঠেছি।
ছবিতে আপনাদের সবার পায়েই জুতা ছিল এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জুতা থাকার বিষয়টি আমার খেয়াল ছিল না।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৫
এসএইচ