ঢাকা: জনপ্রিয় খেলা কে ই ফাইটিং বা মিক্সড মার্শাল আর্ট ব্যাপক পরিসরে যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশে। আর এ উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ সফরে এসেছেন জাপানের বিখ্যাত মার্শাল আর্ট প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড কুমিট ওর্গানাইজেশনের (ডব্লিউকেও) সভাপতি সিফু রবার্ট এম ম্যাকিন্স (সিফু কানচো)।
বাংলাদেশে সফরে এসে কারাটে সংগঠক সিফু কানচো সোমবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে দেশের শীর্ষ অনলাইন নিউজপোর্টাল বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম ও বহুল প্রচারিত দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন পরিদর্শনে আসেন।
এ সময় তিনি বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমের এডিটর ইন চিফ আলমগীর হোসেন ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজামের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সৌজন্য সাক্ষাতে বাংলাদেশে কে ই ফাইটিং নিয়ে নিজের স্বপ্নের কথা তুলে ধরেন সিফু কানচো।
বাংলাদেশে কে ই ফাইটিং বা মিক্সড মার্শাল আর্টের বিস্তার নিয়ে কথা বলেন তিনি। বাংলাদেশের কারাতেকে আরও সমৃদ্ধ করা সহ ২০১৭-১৮ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে কারাতে বিশ্বকাপে নিয়ে যেতে এ দেশে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন এই কারাতে সংগঠক।
সিফু কানচো বলেন, বাংলাদেশ প্রায় ১৬৮ মিলিয়ন মানুষের বসবাস। এখানকার অধিকাংশ মানুষেরই মার্শাল আর্ট নিয়ে বেশ আগ্রহ আছে। মার্শাল আর্ট এমন একটি খেলা যা মানুষের মধ্যে মেলবন্ধন তৈরিতে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আর এ দেশের মানুষ কে ই ফাইটিংকে সাদরে গ্রহণ করবে বলেও আমি বিশ্বাস করি।
বাংলাদেশের কারাতের উন্নয়নের জন্য আর্থিক সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত ওয়ার্ল্ড কুমিট অরগানাইজেশন। এ দেশের কারাতের উন্নয়নের লক্ষ্যে জাপানের এই কারাতে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের এশিয়া ইউনাইটেড এন্টারটেইনমেন্টের সঙ্গে কাজ করবে। আর্থিক সুবিধাদির পাশাপাশি তারা আনুষঙ্গিক সহযোগিতা দেবে বলেও জানান সিফু কানচো।
আর্থিক সহযোগিতার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি এ দেশের সামাজিক উন্নয়নের দিকটিও দেখবে বলে জানিয়ে কানচো বলেন, বাংলাদেশের সব বয়সী মানুষের মধ্যে সুস্বাস্থ্য, শৃঙ্খলা, আত্মবিশ্বাস ও আত্মরক্ষামূলক সচেতনতা বৃদ্ধি করা বিশেষত মাদকবিরোধী প্রচারণা চালানোও এই প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্যের আওতায় রয়েছে।
বিশ্বব্যাপী মার্শাল আর্টের উন্নয়নের লক্ষ্যে ২০০৭ সাল থেকে কাজ করে আসছে এই ডব্লিউকেও। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা জোর বেগে চলছে থাইল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইরান ও জাপানে। কে ই মার্শাল আর্টকে এরই মধ্যে ইরানে বেশ জনপ্রিয় করে তুলতে পেরেছেন বলেও জানান এই কারাতে সংগঠক। শুধু তাই নয়, জাপানের প্রায় ১৫ মিলিয়ন স্কুলগামী ছেলে মেয়েদের মাঝে এরই মধ্যে কে ই মার্শাল আর্ট বিস্তার করিয়েছেন। তবে, তার মূল লক্ষ্য হিসেবে থাকছে কে ই মার্শাল আর্টে বাংলাদেশকে রোল মডেল হিসেবে গড়ে তোলা।
সিফু কানচো শুধু একজন সংগঠকই নন। কারাতের মতো জনপ্রিয় একটি খেলায় তার খেলোয়াড়ি জীবন বেশ সাফল্যমণ্ডিত। বিশ্ব কারাতে প্রতিযোগিতায় সিফু কানচো ৭ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। এখানেই শেষ নয়, প্রশিক্ষক হিসেবেও তিনি বেশ সফল। তার হাত দিয়ে ২৭ জন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন বের হয়ে এসেছে কে ই মার্শাল আর্টে।
বিশ্বের ৭২টি দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশেও তার আগমনের হেতু ব্যবসায়িক। প্রাথমিকভাবে জাপানের এই কারাতে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশে কারাতের উন্নয়নের জন্যই বিনিয়োগ করবে, যদি তারা ইতিবাচক সাড়া পেয়ে থাকেন তাহলেই কেবল ভবিষ্যতে এ দেশে কারাতের জন্য কাজ করবেন।
‘আমাদের কাছ টাকা কোনো ব্যাপার না। যেহেতু বাংলাদেশকে কে ই কারাতের রোল মডেল হিসেবে গড়ে তোলার কথা ভাবছি, সেহেতু আমরা আমাদের সর্বোচ্চ বিনিয়োগ করার চেস্টা করবো। কিন্তু এ দেশের মানুষের সাড়া আমাদের প্রয়োজন। কে ই কারাতে আমাদের কাছে শুধুই একটি খেলা নয়, বিনোদনের একটি অন্যতম মাধ্যমও বটে। একটি দেশের বিনোদনের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে আমরা চাইবো এ দেশের মানুষ এই খেলাটিতে স্বতঃস্ফূর্তভাবেই অংশ নেবে’- বলেন সিফু কানচো।
কে ই ফাইটিং বা মিক্সড মার্শাল আর্টকে বাংলাদেশে পরিচয় করিয়ে দিতে প্রাথমিক পর্বের কাজ করছে জাপানের ডব্লিউকেও’র প্রধান সিফু কানচো। বাংলাদেশে অবস্থানকালে এ দেশে মাশাল আর্টের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট মহলের সঙ্গে একাধিক আলোচনায় অংশ নেবেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৩ ঘণ্টা, ২১ ডিসেম্বর ২০১৫
এইচএল/এমজেএফ