ঢাকা: নগরীতে যান চলাচলে পুলিশের পক্ষ থেকে রয়েছে কিছু নিয়ম ও নির্দেশনা। সড়কে যানবাহনের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এসব নিয়ম নির্দেশনাসহ রয়েছে বহু সাংকেতিক চিহ্নও।
রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকা মহাখালী কাঁচাবাজারের পশ্চিমে নগরীর বিভিন্ন বাস থামার একটি বাসস্ট্যান্ড রয়েছে। নগরীর যান চলাচলে সেখানে লেখা আছে কিছু নির্দেশনা। সে স্থানে একটি ফলকে সাংকেতিক বাসের ছবিসহ বাংলায় ‘বাস থামিবে’ ও ইংরেজিতে ‘স্টপ’ লেখা রয়েছে। পাশাপাশি সেখানে নির্দেশনা রয়েছে ‘পার্কিং নিষেধ’।
অথচ সেই স্থানে কোনো বাস থামার পরিবেশ যেন নেই। বাস থামছে সড়কের মধ্যে। সেই এলাকায় লেগে থাকে ব্যাপক যানজট। কিন্তু ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে বাসস্ট্যান্ডের জায়গায় রাখা হয়েছে একটি বড় ‘রেকার’। আর সেই রেকার দেখিয়ে ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করার নামে গাড়ি ‘আটক বাণিজ্য’ করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে এর বেশ কিছু ঘটনার প্রমাণও মিলেছে।
মহাখালী ফ্লাইওভারের পাশে ‘খাওয়া দাওয়া রেস্টুরেন্ট’র সামনে বাসস্ট্যান্ডের জায়গায় রেকারটি কতোদিন ধরে রাখা হচ্ছে- সে বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় হকার হাবিবুর বলেন, ‘আমি সকাল নয়টার দিকে দোকান খুলে থাকি। এর আগেই রেকারটি সেখানে চলে আসে। আবার রাত ১১টার পর সেটি এখান থেকে চলে যায়’।
পাশের রেস্টুরেন্টের এক কর্মচারী জানান, প্রতিদিন ভোরে রেকারটিকে সেখানে রাখা হয়। আবার রাত ১০/১১টার দিকে চলে যায়। এ সময়ের মধ্যে মাঝে মাঝে বিভিন্ন এলাকায় এটি যাতায়াত করে বলেও জানান তিনি।
গত রোববার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে ওই এলাকায় কয়েক ঘণ্টা অবস্থান করে দেখা যায়, রেকারটি দিব্যি দাঁড়িয়ে আছে। এর ওপর রয়েছে যানবাহন ওঠানো-নামানোর বহু যন্ত্রপাতি। ট্রাফিক পুলিশ সদস্য মিটুল ও জাকিরকে কিছু সময় পর পর রেকারের আশেপাশে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়।
এ সময়ের মধ্যে কয়েকটি সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও মালবাহী গাড়িকে আটক করে রেকারের পেছনে দাঁড় করে রাখতে দেখা যায়। নিয়ম ভঙ্গ করার অভিযোগে রেকার দেখিয়ে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা চালকদের রেকারের গায়ের মূল্য তালিকা দেখিয়ে থাকেন। সে জরিমানার অর্থ আদায় করে এসব গাড়িকে ছেড়েও দিতে দেখা যায়।
এ সময় একাধিক অটোরিকশা চালককে দেখা যায়, গাড়ি ছাড়িয়ে নিতে পুলিশের কাছে আবদার করছেন। টাকা নিয়ে সেই গাড়িগুলোকে ছেড়ে দিতে দেখা যায়। সেখানে পুলিশ সদস্য মিটুল তার পকেট থেকে মোবাইল ফোন বের করে এক অটোরিকশা চালকের ছবি তোলার চেষ্টা করে। এ সময় অটোচালক ছবি তুলতে না দিয়ে সরে যান।
বেলা সাড়ে ১২টার দিকে মাল বোঝাই ‘অন ইমারজেন্সি এক্সপোর্ট ডিউটি’ লেখা একটি কাভার্ডভ্যানকে আটক করে রেকারের কাছে নিয়ে আসেন পুলিশ সদস্য জাকির। গাড়িটিকে রেকারের পিছনে দাঁড় করে এর চালককে নামানো হয়।
এরপর সেই ভ্যানচালককে রেকারের গায়ে লেখা ‘রেকার ভাড়ার তালিকা’ দেখান পুলিশ সদস্য জাকির।
ভ্যানচালক হানিফ বাংলানিউজকে জানান, ধারণ ক্ষমতার চেয়ে তার গাড়িতে মাল বেশি। সেজন্য গাড়িটি আটক করা হয়েছে। এখন দুই হাজার টাকা দিতে হবে, না হলে গাড়ি ডাম্পিং করা হবে বলে তাকে জানিয়েছে পুলিশ। গাড়ি ডাম্পিং করলে ২০/২২ হাজার টাকা গুণতে হয় বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০২২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৫
টিএইচ/এএসআর