ঢাকা: গত পাঁচ বছরে প্রত্যাশিত আয়ুস্কাল গড়ে প্রতি বছর ০ দশমিক ৬০ শতাংশ হারে বেড়েছে। ২০১০ সালে গড় আয়ু ছিল ৬৭ দশমিক ৭ বছর, যা ২০১৪ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ৭০ দশমিক ৭ বছর।
‘রিপোর্ট অন বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিস্টিক ২০১৪: মনিটরিং দ্য সিচুয়েশন অব ভাইটাল স্টাডিজ অব বাংলাদেশ প্রজেক্ট (এসভিআরএস রিপোর্ট ২০১৪)’ প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
রোববার (২০ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) এক অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ১৯৮০ সাল থেকে দ্বৈত পদ্ধতিতে জন্ম, মৃত্যু, বিবাহ ও স্থানান্তর সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে আসছে।
প্রতিবেদন প্রকাশের সময় উপস্থিত ছিলেন বিবিএস সচিব কানিজ ফাতেমা, জিইডি সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলমসহ অন্যরা।
প্রতিবেদনে আরও দেখা গেছে, নারীর তুলনায় পুরুষের মৃত্যুহার বেড়েছে আর শহরের তুলনায় গ্রামে মৃত্যুঝুঁকি বেশি। মাতৃমৃত্যুর অনুপাত গত পাঁচ বছরে সমহারে কমে আসছে। ২০১০ সালে মাতৃমৃত্যুর অনুপাত ছিল ২ দশমিক ১৬ শতাংশ, যা ২০১৪ সালে কমে দাঁড়িয়ে ১ দশমিক ৯৩ শতাংশে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের নারীরা এখনও উচ্চমাত্রায় পুরুষ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। দেশের ৮৭ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবারের খানা প্রধান পুরুষ।
তবে গত তিন বছরে নারী-পুরুষের লিঙ্গ অনুপাত অনেক কমেছে। ২০১২ সালে এ অনুপাত ছিল ১০৪ দশমিক ৯ শতাংশ, যা ২০১৪ সালে কমে হয়েছে ১০০ দশমিক ৫ শতাংশ। পাশাপাশি পুরুষের ওপর নারীর নির্ভরশীলতাও উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। ২০০২ সালে নির্ভরশীলতার হার ছিল ৮০ শতাংশ, যা ২০১৪ সালে কমে ৫৭ শতাংশে দাঁড়ায়।
মোট দেড় হাজার নমুনা এলাকার ওপর ভিত্তি করে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। এসব এলাকায় মোট খানার সংখ্যা ১ লাখ ৬০ হাজার ৮২৯টি।
জন্মশীলতা
স্থূল জন্মহার জন্মশীলতা পরিমাপে সব চেয়ে সহজ পদ্ধতি। রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশের স্থূল জন্মহার প্রতি হাজারে ১৮ দশমিক ৯ জন। ২০১৪ সালে প্রতি হাজার মহিলার ক্ষেত্রে সাধারণ প্রজনন হার পাওয়া গেছে ৭১ শতাংশ।
মরণশীলতা
এসভিআরএস রিপোর্ট ২০১৪ অনুযায়ী বাংলাদেশের স্থূল মরণশীলতা প্রতি হাজারে ৫ দশমিক ২ জন। যা গ্রাম এলাকায় ৫ দশমিক ৬ জন এবং শহরে ৪ দশমিক ১ জন। এক বছরের নিচে শিশুমৃত্যুর হারের ক্ষেত্রে একই প্রবণতা দেখা গেছে। শিশুমৃত্যুর হার ২০১০ সালে ছিল প্রতি হাজারে ৩৬ জন এবং এ হার ২০১৪ সালে কমে দাঁড়িয়েছে ৩০ জন।
বিয়ের গড় বয়স
গত পাঁচ বছরে পুরুষের বিয়ের গড় বয়স দুই বছর বেড়েছে এবং নারীদের গড় স্থিতি অবস্থায় রয়েছে। ২০১০ সালে পুরুষের বিয়ের গড় বয়স ছিল ২৩ দশমিক ৯ বছর এবং নারীদের গড় বিয়ের বয়স ছিল ১৮ দশমিক ৭ বছর। ২০১৪ সালে পুরুষদের গড় বিয়ের বয়স হয়েছে ২৫ দশমিক ৯ এবং নারীদের বিয়ের গড় বয়স হয়েছে ১৮ দশমিক ৫ বছর।
আগমন ও বহির্গমন
প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, প্রতি হাজার জনসংখ্যার জনসংখ্যার জন্য আগমনের হার ৪০ দশমিক ২ জন এবং বহির্গমনের হার ৪৩ দশমিক ১ জন।
জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারের হার
গত পাঁচ বছরে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারের হার বেশ বেড়েছে। ২০১০ সালে জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারের হার ছিল ৫৬ দশমিক৭ শতাংশ। বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬২ দশমিক ২ শতাংশ।
প্রতিবন্ধী
২০১৪ সালে প্রতি হাজারে ৯ জন মানুষ কোনো না কোনোভাবে প্রতিবন্ধী। নারীর চেয়ে পুরুষদের প্রতিবন্ধিতার হার বেশি। পুরুষ প্রতিবন্ধীর হার ৯ দশমিক ৯ শতাংশ এবং নারী প্রতিবন্ধীর হার ৮ দশমিক ২ জন।
এইডস
বিবিএস ২০১৪ সালে দ্বিতীয়বারের মতো এইডস/এইচআইভি সংক্রমণের ক্ষেত্রে ১৪ থেকে ৪৯ বছরের নারীদের জ্ঞান সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করছে। প্রাপ্ত
ফলাফল থেকে দেখা যায়, মাত্র ২১ শতাংশ নারী এইডস সংক্রমণের সকল পদ্ধতি সম্পর্কে জানেন। এইডস সংক্রমণের একটি পদ্ধতি জানেন ৬১ দশমিক ৫ শতাংশ নারী।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৫
এমআইএস/এটি/এএসআর