ঢাকা: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধের গল্প শুনে বড় হয়েছেন বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর নাতনি ব্রিটিশ সংসদের সদস্য টিউলিপ সিদ্দিক।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বড় হয়েছি যে বাসায় সেখানে সারাজীবন নানা ও যুদ্ধের গল্প শুনেছি।
বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) উত্তরায় স্কলাস্টিকা স্কুলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন টিউলিপ। তিনি এই বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রী। বর্তমান ছাত্রীদের অনুপ্রেরণা দিতে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন টিউলিপ।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী যেই হোক, পুরুষ বা নারী; দেশকে যে ভালোবাসে, গরিবদের যে ভালোবাসে সেটাই জরুরি। দেশকে ভালোবাসে কি না তা দেখতে হবে।
‘ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ৬৫০ জন এমপির মধ্যে মাত্র ১৬০ জন নারী। সংসদে নারীর সংখ্যা বাড়াতে হবে। বাংলাদেশে নারী প্রধানমন্ত্রী। এটা নিয়ে গর্বিত। দরিদ্রদের জীবন উন্নত করতে কাজ করতে হবে’- বলেন টিউলিপ।
ব্রিটিশ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া প্রসঙ্গে টিউলিপ সিদ্দিক বলেন, নির্বাচন অনেক কষ্টকর। ক্যাম্পেইনে দুই বছর কাজ করেছি, দরজায় দরজায় গিয়েছি। লেবার পার্টি কিন্তু জেতেনি, খারাপ করেছে, আমরা কেঁদেছি। আমি যে আসনে জিতেছি, সেটা আগের বারও খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
টিউলিপ বলেন, ব্রিটিশ বাংলাদেশি হিসেবে আমি গর্বিত। ওখানে যারা বাংলাদেশি তারা চেয়েছেন, একজন অন্তত বাংলাদেশি এমপি হোক।
স্কলাস্টিকা আয়োজিত অনুষ্ঠান সম্পর্কে তিনি বলেন, এখানে এই প্রথম অনুষ্ঠান করলাম। অন্য স্কুল করতে চাইলে আমরা আরও এমন অনুষ্ঠান করবো।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিজের রোল মডেল বলে উল্লেখ করে টিউলিপ বলেন, আমার খালা আমার রোল মডেল। লন্ডনে জন্ম, বড় হয়েছি সেখানে। রাজনীতি মানুষকে সাহায্য করার জন্য, সেটি যে দেশেই হোক।
খালা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মা শেখ রেহানা, স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম এবং এভারেস্টজয়ী ওয়াসফিয়া নাজরীন তাকে অনুপ্রাণিত করে বলেও জানান বঙ্গবন্ধুর নাতনি টিউলিপ সিদ্দিক।
বাল্যবিবাহ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগে ব্রিটেনেও এই সমস্যা ছিল। আমরা যদি মেয়েদের পড়ালেখা না শেখাই, রোল মডেল না দেখাই, বিশ্ববিদ্যালয়ে না পাঠাই, তাহলে অবস্থার উন্নতি হবে না। আমাদের নারীরা সবাই কাজ করে। গ্রামেও তাই।
যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বাঙালি নাগরিকদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে টিউলিপ বলেন, বাঙালিদের জন্য লেবার পার্টিতে আমি একা নই, রুশনারা ও রুপা আপা আছে। এক সময় আমাদের ওখানে অনেক বৈষম্য ছিল। বাসা ভাড়া, স্কুলে ভর্তিতে সমস্যা হতো। বাসা নিয়ে বাংলাদেশিরা খুব ঝামেলা পোহান। দামি বাসা পাওয়া যায় না। চাকরি পেতেও সমস্যা হতো।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হবেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে ব্রিটিশ সংসদের এই এমপি বলেন, ভবিষ্যতে কী হবে বলা যায় না। দেখি কী করি। লেবার পার্টির কী অবস্থা হয় দেখি। সব জায়গাতেই মানুষকে সাহায্য করা যায়। সেখানে বসেও আমি বাংলাদেশিদের সহায্য করছি। পাঁচ বছর পরে জিজ্ঞেস করলে এ ব্যাপারে বলতে পারবো।
‘আমার আগে যিনি এ আসনে ছিলেন, তিনি বিখ্যাত অভিনেত্রী ছিলেন। তাই আমাকেও জিজ্ঞেস করতো, তুমি কি কখনও অভিনয় করেছো? কিছু বাঙালি বলতো, ও যদি নির্বাচন করে, সে শুধু আওয়ামী লীগের কথা বলবে। এসব সমস্যা ছিল। আমি বলেছি, দেখো, আমি বাঙালি, তাদের জন্য কাজ করবো। কে কোন দল করে সেটা জরুরি নয়- যোগ করেন টিউলিপ সিদ্দিক।
ব্রিটেনে মুসলমানরা যেন সমস্যায় না পড়ে, তা নিয়ে কাজ করবেন বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৫
এসকেএস/এমজেএফ/
** যার যা ভালো লাগে, তা করো, তা পড়ো