ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বাংলাদেশ প্রতিদিনের গোলটেবিল বৈঠক

পৌর নির্বাচনে প্রমাণ হবে আ’লীগ-বিএনপির জনপ্রিয়তা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৫
পৌর নির্বাচনে প্রমাণ হবে আ’লীগ-বিএনপির জনপ্রিয়তা ছবি: দীপু- বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: দলীয় প্রতীকে পৌরসভা নির্বাচনের ব্যবস্থা করার মাধ্যমে নির্বাচনের স্বচ্ছতার বিষয়টি নিশ্চিত করা গেছে। এই নির্বাচনের মাধ্যমে বড় দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির জনপ্রিয়তার প্রমাণ হয়ে যাবে।

দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন আয়োজিত ‘পৌরসভা নির্বাচন: নিরপেক্ষতা ও বাস্তবতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এমন অভিমত উঠে এসেছে।

শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের (ইডব্লিউএমজিএল) কনফারেন্স রুমে সকাল ১১টায় এ আলোচনা সভা শুরু হয়।

আলোচনা সভার শুরুতে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম বলেন, এবারের পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় হাওয়া বইছে। বিএনপি তাদের কর্মীদের নিয়ে মাঠে নেমেছে। এই প্রথম দু’টি দলীয় প্রতীক দিয়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হচ্ছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অতীতে সহিংসতা হয়েছে, এবারও সহিংসতা হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে।

প্যানেল আলোচকদের মধ্যে প্রথম বক্তব্য রাখেন ব্যারিস্টার আহসান হাবিব। তিনি বলেন, স্থানীয় ওসিরা নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন, এমন অভিযোগ উঠে আসছে। তবে এটিও আশা করা যায় না নির্বাচন শতভাগ নির্ভুল হবে।

তিনি বলেন, বিএনপি ও আওয়ামী লীগ নিজেদের জনগণের পছন্দের দল বলে প্রচারণা চলিয়ে আসছে। দলীয় প্রতীকের এই পৌরসভা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে কার জনপ্রিয়তা কতো তা প্রমাণ হয়ে যাবে।

৭১ টেলিভিশনের বার্তা প্রধান সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রচুর ভায়োলেন্স(সহিংসতা)হয়। সে দিকে সংবাদ কর্মীদের নজর দিতে হবে।

তিনি বলেন, নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করছে এমন একটি সরকারের অধীনে, যে সরকারকে তারা মেনেই নিতে চায়নি। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশন ও সরকারের ভাবমূর্তি উঠে আসবে।

স্থানীয় সরকার নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ বলেন, পৌরসভা নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হওয়ায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে। দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের মাধ্যমে স্বচ্ছতার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে।

এ সময় তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও যারা নির্বাচন পর্যবেক্ষণে থাকবেন তাদের নজর রাখতে হবে, যাতে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে।

বিশিষ্ট বাম নেতা জুনায়েদ সাকী বলেন, বাংলাদেশকে জঙ্গিবাদ থেকে মুক্ত করতে হলে প্রকৃত গণতন্ত্রের প্রয়োজন। এক্ষেত্রে নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। যদিও নির্বাচনই গণতন্ত্রের সবকিছু না।

তিনি অভিযোগ করেন নির্বাচন কমিশন নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুন্ন করেছে। কারণ নির্বাচনে কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে চাইলে আগেই তার পক্ষে ১’শ জনের সমর্থন লাগবে।

স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ শারমিন মোর্শেদ বলেন, নির্বাচন এমন একটি ইভেন্ট যাকে কেন্দ্র করে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। এমন কোন নির্বাচন হয়নি যেখানে সংঘাতের ঘটনা ঘটেনি। তাই নির্বাচনের পদ্ধতি সম্পর্কে আমাদের ভাবতে হবে।

তিনি বলেন, দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়ার কারণে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের দায়িত্ব এড়াতে পারবে না। কেউ বলতে পারবে না, এটি স্থানীয় নির্বাচন।

এখানে আমাদের কিছু করার নেই। তবে দলীয় প্রতীকের এই নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় প্রার্থী নির্বাচন করলে মেধা সম্পন্ন প্রার্থী বেরিয়ে আসতো।

প্রতিটি নির্বাচনে কালো টাকা বাণিজ্য কেন্দ্রিক সহিংসতা হয় এমন অভিমত প্রকাশ করে মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশিদ বলেন, নির্বাচন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য যতগুলো যুক্তি দেখানো দরকার তা রাজনৈতিক দলগুলো আগে ঠিক করে রাখছে বলে মনে হচ্ছে।

তিনি বলেন, স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট করার অপপ্রয়াসের অংশ হিসেবে আমরা জিহাদি জঙ্গিবাদ দেখতে পাচ্ছি। এই জঙ্গিবাদের সঙ্গে পাকিস্তানের মিল
রয়েছে। আমরা তথ্য পাচ্ছে পাকিস্তানের জঙ্গিরা দেশে গোপনভাবে অনুপ্রবেশ করেছে। এই জঙ্গিবাদের অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের বক্তব্য থাকতে হবে।

সাবেক আইজিপি হাদিস উদ্দিন বলেন, নির্বাচনে কিছুটা অস্থিরতা থাকবেই। কারণ এটি ফুটবল খেলার মতো। এতে উত্তেজনা থাকবে। কিন্তু কোন কোন রাজনৈতিক দল বেশ আগেভাগেই প্রতিপক্ষকে লাল কার্ড দেখিয়ে দিচ্ছেন। এটি ঠিক না।

এ সময় জঙ্গিবাদ পৌরসভা নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে পারবে না বলেও অভিমত ব্যক্ত করেন সাবেক এই আইজিপি।

বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজামের সঞ্চালনায় এতে আরও উপস্থিত আছেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহম্মদ ছহুল হোসাইন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ, সাবেক মন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাফর ইমাম, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য রুহুল আমিন হাওলাদার, সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) আকতারুজ্জামান প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৫
এএসএস/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।