ঢাকা: সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে (বিজিবি) আরো যুগোপযোগী ও কার্যকর করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক।
সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামে অবস্থিত বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার এন্ড স্কুলে বিজিবির ৮৭তম ব্যাচ রিক্রুটদের সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি অনুষ্ঠানে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন এবং অভিবাদন গ্রহণ করেন। বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ এবং বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার এন্ড স্কুল এর কমান্ড্যান্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসেন এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। কুচকাওয়াজের প্যারেড কমান্ডার ছিলেন মেজর মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম এবং প্যারেড এ্যাডজুটেন্ট সহকারী পরিচালক মো. ছোরহাব উদ্দিন।
তারিক আহমেদ সিদ্দিক তার বক্তৃতায় দক্ষতার সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষা এবং সীমান্ত ভূমি ও সম্পদের নিরাপত্তা বিধান, নারী ও শিশু পাচার রোধ, সীমান্ত অপরাধ দমন, চোরাচালান প্রতিরোধ, দেশের অভ্যন্তরীণ শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষা এবং বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তায় বিজিবি’র সৈনিক এবং কর্মকর্তাদের পেশাদারিত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন, সরকার বিজিবি সদস্যদের জন্য কল্যাণমূলক বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে নতুন র্যাংক ব্যাচ প্রবর্তন, সর্বনিম্ন পদ থেকে সুবেদার মেজর পর্যন্ত সকলের জন্য ৩০ শতাংশ সীমান্ত ভাতা চালু, দুই মাসের বাৎসরিক ছুটিসহ অগ্রিম বেতন প্রদান এবং রেশন সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়েছে। বিজিবি সদস্যদের সন্তানদের জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে বিজিবি’র ব্যবস্থাপনায় ৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। পাশাপাশি ঢাকায় উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের সুবিধার্থে একটি বহুতল ছাত্রাবাস ও একটি বহুতল ছাত্রীনিবাস নির্মাণ করা হয়েছে। বিজিবি সদস্যদের পারিবারিক বাসস্থানের সংকট দূর করতে পিলখানাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত ইউনিটসমূহে বেশ কিছু বহুতল পারিবারিক বাসস্থান নির্মাণ করা হয়েছে এবং আরো অনেক আবাসন নির্মাণ করা হচ্ছে। সীমান্ত পরিবার কল্যাণ সমিতি (সীপক্স) এর মাধ্যমে বিজিবি পরিবারের সদস্যদের শিক্ষা, আত্মকর্মসংস্থান ও কল্যাণমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হচ্ছে। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণ তহবিল হতে বিজিবি সদস্যদের সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান, মেয়ের বিবাহসহ বিভিন্ন প্রকার আর্থিক অনুদান বিধি মোতাবেক প্রদান করা হচ্ছে। বিজিবি সদস্যদের কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বিভাগীয় খরচে পবিত্র হজ্জ্ব পালনের সুযোগ অব্যাহত রয়েছে। সীমান্তে নিয়োজিত সদস্যদের নিকটস্থ হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণের সুবিধার্থে সাতকানিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ঠাকুরগাঁও এবং খাগড়াছড়ির জালিয়াপাড়ায় ৫০ শয্যা বিশিষ্ট বিজিবি’র আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে।
অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্যদের বিজিবি হাসপাতালে চিকিৎসা সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বিজিবি’র বিভিন্ন কল্যাণমূলক ও উপার্জনশীল প্রকল্প পরিচালনার জন্য ‘বিজিবি ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান গঠন করা হয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানের আওতায় ‘সীমান্ত ব্যাংক’ নামে একটি ব্যাংক স্থাপনের কার্যক্রম এগিয়ে চলছে এবং পিলখানায় ‘সীমান্ত সম্ভার’ নামে একটি বহুতল মার্কেট নির্মাণ করা হচ্ছে। এছাড়া ১০০ মেগাওয়াট সোলার পাওয়ার প্লান্ট প্রকল্প এবং কক্সবাজার টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ এলাকায় জমি ক্রয়ের মাধ্যমে ভবিষ্যতে আরো প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে। এ সকল প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বিজিবি’র অবসরপ্রাপ্ত যোগ্য সদস্যদের মধ্য থেকে অনেকের চাকরির সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং এ সকল প্রতিষ্ঠানের মুনাফা থেকে বিজিবি সদস্যদের সার্বিক কল্যাণে নতুন নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করা সম্ভব হবে। ”
তিনি ৮৭তম রিক্রুট ব্যাচের এক হাজার নবীন সৈনিকদের মধ্যে বিষয়ভিত্তিক ১ম স্থান অর্জনকারী ও সর্ববিষয়ে শ্রেষ্ঠ নবীন সৈনিক এর মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।
সোমবার বিজিবির পক্ষ থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০১৫
আরআই