ঢাকা: পর্যটন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য একটি বড় খাত। বিশ্বব্যাপী এ খাতের আয়ও সবচেয়ে বেশি।
মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথা বলেন।
‘এমপ্লয়মেন্ট অপরচ্যুনিটিস ফর উইমেন ইন দ্য হসপিটালিটি ইন্ডাস্ট্রি অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি।
এতে অংশ নিয়ে বাংলাদেশ ট্যুরিজম সোসাইটির চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম লেলিন বলেন, পৃথিবীর অন্যান্য দেশে পর্যটনের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় রয়েছে। কিন্তু আমাদের এখানে আছে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন বিষয়ক মন্ত্রণালয়। অর্থাৎ অন্য একটি বড় খাতের সঙ্গে পর্যটনকেও এক করা হয়েছে।
এক্ষেত্রে দু’টো গুরুত্বপূর্ণ খাতের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ার বড় ধরনের ত্রুটি থেকে যায়। যা একইসঙ্গে সমাধান করা অনেক সময় দূরুহ। তাই পর্যটন খাত নিয়ে আলাদা মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, দেশের পর্যটন খাতের উন্নয়নে এটি একটি বড় বাধা। যার কারণে আমরা পর্যটনের প্রতি তেমন নজর দিতে পারছিনা। ফলে সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও এ খাত এগুচ্ছে না।
পরিসংখ্যান তুলে ধরে নজরুল ইসলাম বলেন, গত বছর মায়ানমারে ৬০ লাখ পর্যটক এসেছেন। যার বেশিরভাগ হচ্ছেন চীন, থাইল্যান্ডের। আর ভারতে এসেছেন ৪০ লাখ পর্যটক। যার মধ্যে ২০ লাখ হচ্ছেন বাংলাদেশি। অথচ আমাদের এখানে আরো অনেক বেশি পর্যটক আকৃষ্ট করার কথা।
ইউনির্ভাসিটির স্কুল অব বিজনেস ফ্যাকাল্টির ডিন অধ্যাপক ড. হাবিবুর রহমান বলেন, পর্যটনের প্রতি সরকারের আরো নজর দেওয়া উচিত। বিশেষ করে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর প্রতি। গার্মেন্টসে যদি নারীদের অবদান বেশি হতে পারে তবে ট্যুরিজমেও হবে। এখানে নারীদের সম্ভাবনা অনেক। এজন্য পরিবারগুলোকেও এগিয়ে আসার প্রতি তিনি আহ্বান জানান, যেন নারীদের এ খাতে আসার জন্য সাহস যোগানো হয়।
সভাপতির বক্তব্যে প্রাইম এশিয়ার হেড অব দ্য ডিপার্টমেন্ট অব ইন্টারন্যাশনাল ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট অধ্যাপক ড. এ আর খান বলেন, সরকার ২০১৬ সালকে পর্যটন বর্ষ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু এজন্য বহুমুখী উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এখন পর্যন্ত জেলা প্রশাসন বা উপজেলা প্রশাসন থেকে পর্যটন নিয়ে কোনো ৠালি করা হয়নি। অথচ মানুষকে সচেতন করার জন্য এটা খুবই জরুরি।
তিনি বলেন, দেশের মোট মানবসম্পদের মধ্যে ১ কোটি ৬০ লাখ নারী কর্মজীবী। অথচ পর্যটন খাতে নেই বললেই চলে। তাই নারীদের এ খাতে এগিয়ে আসতে হবে। তবে এর আগে নেগেটিভ অ্যাটিটুড দূর করা জরুরি। অনেকেই বলেন, ট্যুরিজম মানে হোটেল, আর হোটেল মানেই নানা অশোভন, অসামাজিক কার্যকলাপ। কিন্তু ধারণাটি ভুল। পর্যটনই একমাত্র খাত যেখানে এখন পর্যন্ত কোনো নারী সহিংসতার শিকার হননি। এখানে নারীদের পরিবেশ প্রতিকূল নয়।
তাই সরকারের পাশপাশি পরিবারকে এ বিষয়ে এগিয়ে আসতে হবে। স্কুলে স্কুলে পর্যটন ক্লাব গড়ে তুলতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোতে পর্যটন বিষয়ক সম্পাদক পদ সৃষ্টি করাও জরুরি। এভাবেই সবার সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে পর্যটন শিল্পকে আরো এগিয়ে নিতে হবে। কেননা, এখাতে আমাদের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে।
আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির ডিপার্টমেন্ট অব ইন্টারন্যাশনাল ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট’র লেকচারার সাবরিনা রহমান। তিনি বলেন, দেশের ১৩২টি হোটেলে ১১ হাজার ২৭৩ জন কর্মীর মধ্যে নারীকর্মী মাত্র এক হাজার ১১৬ জন। যা মোট কর্মীর মাত্র ৯ দশমিক ৯ শতাংশ।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৬
ইইউডি/জেডএস