ঢাকা: কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। ২১ ফেব্রুয়ারি দিনগত রাত সাড়ে ১২টা।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পদদেশ থেকে হেঁটে সিড়ি বেয়ে উপরে উঠার পথে কয়েকজন কিশোর সেলফি তোলাতে ব্যস্ত। সবার পায়েই জুতো। কয়েকজনকে দেখা গেল শহীদ মিনারের বেদীর ওপর শিশু সন্তানকে জুতো পরিয়েই দাঁড় করিয়ে ছবি তুলছেন।
আরো সামনে যেতেই মূল বেদীর পাশে চোখে পড়বে সাইনবোর্ড। যাতে বড় বড় অক্ষরে লেখা, ‘মূল বেদীতে জুতা পায়ে উঠা ও বসা নিষেধ’। এই সাইনেবোর্ডের পাশেই বসে খোশ গল্পে মেতেছেন একদল যুবক। জানা যায়, তারা প্রত্যেকেই দেশের নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনো না কোনোটির শিক্ষার্থী।
অথচ ২১ ফ্রেবুয়ারির প্রথম প্রহরে ‘আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি...’ এমনই নানা দেশাত্মবোধক গানে শুরু হয় ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো। পুরো দিন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান লাখো মানুষ।
দিন ফুরোতেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মলীন এ চেহারায় দু:খ প্রকাশ করলেন অনেকেই। এমনই একজন আনিস আলম। পেশায় ব্যবসায়ী। সস্ত্রীক রাতে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, আমি ঢাকার বাইরে ছিলাম। ঢাকায় পৌঁছেছি সন্ধ্যার পর। তাই একটু রাত হলেও স্ত্রীকে নিয়ে শহীদ মিনারে আসলাম। কিন্তু এখানে এসে মনটা সত্যিই খারাপ হয়ে গেল। ২১ ফেব্রুয়ারি শেষ হতে না হতেই শহীদ মিনারের এমন নোংরা চেহারা হবে বুঝতে পারিনি।
তিনি আরও বলেন, সবচেয়ে বেশি অবাক হচ্ছি, সেলফি আর ছবি তোলার নেশায় অনেকে জুতো নিয়েই উঠে পড়ছেন শহীদ মিনারে। এমকি মূল বেদীকেও সামান্য সম্মান দেখাচ্ছেন না তারা।
একুশের প্রথম প্রহরে ভাষা শহীদদের প্রতি জাতির পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তারা শহীদদের স্মরণে কিছুক্ষণ নিরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। তাদের পরই শ্রদ্ধা জানান জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী।
বাংলাদেশ সময়: ০৩১৩ ঘন্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৬
ইউএম/আরএইচ