যশোর: যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য পীযুষ কান্তি ভট্টাচার্য আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম প্রেসিডিয়াম মেম্বর (সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য) মনোনীত হওয়ায় তাকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত যশোরের আট উপজেলার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
রোববার (২৩ অক্টোবর) যশোরের সন্তান আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে মনোনীত হওয়ার সংবাদ মিডিয়ায় প্রচারিত হলে আনন্দ-উল্লাসে মেতে ওঠে নেতাকর্মীরা।
পীযুষ কান্তি ভট্টাচার্যেরে পরিবার সূত্র জানায়, একজন কাউন্সিলর হিসেবে নেতাকর্মীদের সঙ্গে সম্মেলনে যোগ দেন পীযুষ কান্তি। কিন্তু সভানেত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণায় অবাক হয়েছেন সবাই। পরে যশোর থেকে কাউন্সিল অধিবেশনে যোগ দেওয়া কাউন্সিলর-ডেলিগেট ছাড়াও প্রায় দুই হাজার নেতাকর্মী আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন। উল্লাসে ফেটে যশোর আ.লীগের নেতাকর্মীরা।
যশোর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য ও কেশবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস.এম রুহুল আমীন বাংলানিউজকে বলেন, যশোর থেকে আসা কোনো নেতাকর্মী আশা করেনি, দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামে যশোরের কোনো নেতা স্থান পাবেন। এজন্য তিনি দলীয় প্রধানকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। একইসঙ্গে, যশোরে আওয়ামী লীগের ভিত অতীতের চেয়ে আরও মজবুত হবে।
এদিকে, পীযুষ কান্তিকে অভিনন্দন জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন, যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার, জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ও কেশবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস.এম রুহুল আমীন, জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ হাসান বিপু, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য অ্যাডভোকেট এ.বি.এম আহ্সান, জেলা যুবলীগের সভাপতি মোস্তফা ফরিদ আহম্মেদ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু, নওয়াপাড়া পৌরসভার মেয়র সুশান্ত দাস শান্ত, বেনাপোল পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম লিটন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফুল ইসলাম রিয়াদ, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপু, সহ সভাপতি নিয়ামত উল্লাহ, এস এম রবিউল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক দেবাশীষ দাস দেবু প্রমুখ।
পীযুষ কান্তি ভট্টাচার্য যশোরের মণিরামপুর উপজেলার দূর্বাডাঙ্গা ইউনিয়নের পাড়ালা গ্রামে ১৯৪০ সালের ১ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা সুধীর কুমার ভট্টাচার্য ও মা ঊষা রাণী ভট্টাচার্য।
শিক্ষাজীবনে ১৯৫৬ সালে যশোর সদর উপজেলার খাজুরা এমএন মিত্র বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। ১৯৬১ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ এবং ১৯৬৮ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এম.এ পাস করেন।
কলেজ জীবনে তিনি ছাত্র সংসদের নেতা নির্বাচিত হন। ১৯৬৪ সালে মণিরামপুরের দূর্বাডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের পাড়ালা ওয়ার্ড মেম্বার নির্বাচিত হন। একই সঙ্গে মশিয়াটি ও গোপালপুর হাইস্কুলে শিক্ষকতা করেছেন। কেশবপুর ডিগ্রি কলেজে পার্ট টাইম শিক্ষকতা এবং মণিরামপুর ডিগ্রি কলেজ প্রতিষ্ঠা করে ভাইস প্রিন্সিপ্যাল হিসেবে শিক্ষকতা করেন।
১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৬ দফা বাস্তবায়ন করার জন্য যশোরের গণমানুষের কাছে বার্তা পৌঁছে দেন। ১৯৬৭ সালে জাতীয় পরিষদের নির্বাচন হলে তিনি সুবোধ কুমার মিত্র’র সঙ্গে কেশবপুর-মণিরামপুরে ব্যাপক গণসংযোগ করেন।
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানীরা পীযুষ কান্তি ভট্টাচার্যকে হত্যার করার জন্য হুলিয়া জারি করেন। সে সময় তিনি তাজউদ্দিন আহমেদ, সৈয়দ নজরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করে ভারতে গিয়ে মুজিব সরকারের শরণার্থীদের স্কুলে শিক্ষা দিতেন এবং দেশকে স্বাধীন করার জন্য ভারতে থেকে সংগঠক হিসেবে কাজ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১৬
ইউজি/পিসি